সাম্যের বৈষম্য বৈরিতা বিভাজন প্রণয় প্রীতির প্রভেদতা ধর্মের কারণ
আমার প্রিয় বন্ধু কবি দেব্রত সিং বেশ কিছুদিন ধরে আমাকে ফেসবুকে না পেয়ে বেশ উদ্বিঘ্ন ছিল. আমার এতদিন ফেসবুকে কেন আসিনি।
সেই ছোটবেলা থেকেই আকাশে মেঘ করলে, কেউ ভালো না বাসলে, কেউ কটু কথা বললে, আমি জিতলেও অন্য কেউ খেলায় হেরে গেলে বা কেউ আমার পুতুলের ঘর ভাঙল আরো অনেক অঢেল তুচ্ছ কারণে আমি শামুকের মতো আমার নিজের জগতে ঢুকে যেতাম। এখনো যাই। কিন্তু দৈনন্দিন জীবন যাপন তো করতেই হয়। সে আমি যেখানেই থাকি না কেন। তাই আমার কল্পলোক, বিষণ্ণলোক আর জৈব দিনালোকের মাঝে একটা দ্বন্দ্ব বাধে। আগেও বাধতো এখনো বাধে। হয়তো সেই কারণে অনেকে মনে করে আমি অলীক, কল্পিত, মনগড়া ছায়াবৃত কাল্পনিক, বানান, অতিকথামূলক বাস্তববোধশূন্য।
কোথাও কোনো অর্বাচীন, অখাদ্য, অশ্লীল, নৃশংস নিষ্ঠুর নোংরা কিছু দেখি বা পড়ি সাথে সেই খোলসে ঢুকে পড়ি। চলে বোঝাপড়া নিজের সাথে। তাই বাহ্য প্রতিক্রিয়া সংঘটিত হতে সময় লাগে। এমনিতেই আমাদের পরিবারের উপর থেকে অনেক গুলো ঝড় বয়ে গেলো এই অল্প কয়েকদিনের মধ্যে তাই কোন সামাজিক মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবু দেখা বা পত্রিকায় লেখা লেখি করতে মন সরছিল না। যা চোখে পড়ে ততটুকুই।
হটাৎ পড়লাম একজন অতি অভিশপ্ত প্রাণী (মনুষ্য যোগ্য নয়) মানুষদের "মালাউন" বলেছে। এই একটি শব্দ আমার এখনকার সময়কে অশান্ত করে রেখেছে, বিতাড়িত স্মৃতি অতীতের দুঃস্বপ্নে। আমার মস্তিষ্কে একটি শব্দ "মালাউন" প্রতিধ্বনিত হচ্ছে হাজারো শব্দে। মালাউন এই কথাটাতো আজই নতুন শুনিনি। সেই ছোট বেলায় মস্তিষ্কে এই শব্দটা ভয়ঙ্কর ভাবে গেঁথে গেছে।
সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাতৃ গর্ভেই শিশুর অনুভুতি শুরু হয়। মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ও বিকাশ সবচেয়ে দ্রুত হয় মাতৃগর্ভে-যা প্রায় শতকরা আশি ভাগ।আর অবশিষ্ট কুড়ি শতাংশ বৃদ্ধি হয়-জীবনের প্রথম কয়েক বছর পর্যন্ত। মানসিক বিকাশ হয় পারিপার্শিক আচার ব্যবহার, চিন্তা চেতনা, স্মৃতি ঘটনা প্রবাহের প্রতিফলন , অনুভূতি ও ভাবের আদান-প্রদানের দ্বারা।একটি শিশুর মানসিক বিকাশ ছাড়া শিশু তথা মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। তাই শিশু মনে বা মননে বিভীষিকা,ভয় আতঙ্কপূৰ্ণ ঘটনা প্রবাহ। পরবর্তী সময়ে তাকে দারুণভাবে আক্রান্ত ও প্রভাবিত করে। সেই ১৯৬৪ সালের হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায় আমার অবুঝ শিশু মনে দাগ কেটে ছিল।হয়তো তাই সেই ১৯৬৪ সালের হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায় আমার অবুঝ শিশু মনে দাগ কেটে ছিল। সেইজন্যই এই ঘটনায় আমি দারুণভাবে আক্রান্ত ও পরিহিত।আমার জন্ম গেন্ডারিয়ায়, বেড়ে ওঠা ওখানেই। তখন ঢাকা এমন ঘিঞ্জি ও অতিজনাকীর্ণ ছিল না। ছাদে বা বারান্দায় দাঁড়ালে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যেত। চিলেকোঠা থেকে দেখেছি শাখারি বাজার, নারিন্দা নওয়াবপুরে আগুন জ্বলতে দেখছি, শুনেছি "নারায় তাকবীর " ধ্বনি। দৌড়ে আশ্রয় নিয়েছি নানীর বা খালাদের বুকে। সেখানেও শুনেছি আজ কাঠেরপুলে অনেক মানুষকে জবাই করেছে। কেন এই হানাহানি? তার উত্তরে একটি শব্দ শুনেছিলাম মালাউনদের মারছে। তখন বুঝতে পারিনি আসলে মালাউন শব্দটা কি? শুধু এটা জানতাম ভারত পাকিস্তানের শত্রূ ।তবে কি ইন্ডিয়া মালাউন? ছোট্ট মনে প্রশ্ন জাগে ওরাতো অনেক দূরে তবে আমাদের কাঠের পুলে আসলো কি করে? বলা বাহুল্য আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে ৭১" সালে তাদেরই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। ভারতই আমাদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। যে কাবা ঘর নিয়ে আজ বাংলাদেশে এতো উসৃঙ্খলতা ভাঙচুর হলো সেখানকার মানুষ বা রাজা আমাদের শুধু বিরোধিতাই করেনি তারাও আমাদের মালাউন উপাধি দিয়েছিল। আমরা কত সহজে সব ভুলে যাই নিজেদের সুবিধামত।
হটাৎ পড়লাম একজন অতি অভিশপ্ত প্রাণী (মনুষ্য যোগ্য নয়) মানুষদের "মালাউন" বলেছে। এই একটি শব্দ আমার এখনকার সময়কে অশান্ত করে রেখেছে, বিতাড়িত স্মৃতি অতীতের দুঃস্বপ্নে। আমার মস্তিষ্কে একটি শব্দ "মালাউন" প্রতিধ্বনিত হচ্ছে হাজারো শব্দে। মালাউন এই কথাটাতো আজই নতুন শুনিনি। সেই ছোট বেলায় মস্তিষ্কে এই শব্দটা ভয়ঙ্কর ভাবে গেঁথে গেছে।
সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাতৃ গর্ভেই শিশুর অনুভুতি শুরু হয়। মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ও বিকাশ সবচেয়ে দ্রুত হয় মাতৃগর্ভে-যা প্রায় শতকরা আশি ভাগ।আর অবশিষ্ট কুড়ি শতাংশ বৃদ্ধি হয়-জীবনের প্রথম কয়েক বছর পর্যন্ত। মানসিক বিকাশ হয় পারিপার্শিক আচার ব্যবহার, চিন্তা চেতনা, স্মৃতি ঘটনা প্রবাহের প্রতিফলন , অনুভূতি ও ভাবের আদান-প্রদানের দ্বারা।একটি শিশুর মানসিক বিকাশ ছাড়া শিশু তথা মানুষের পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। তাই শিশু মনে বা মননে বিভীষিকা,ভয় আতঙ্কপূৰ্ণ ঘটনা প্রবাহ। পরবর্তী সময়ে তাকে দারুণভাবে আক্রান্ত ও প্রভাবিত করে। সেই ১৯৬৪ সালের হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায় আমার অবুঝ শিশু মনে দাগ কেটে ছিল।হয়তো তাই সেই ১৯৬৪ সালের হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায় আমার অবুঝ শিশু মনে দাগ কেটে ছিল। সেইজন্যই এই ঘটনায় আমি দারুণভাবে আক্রান্ত ও পরিহিত।আমার জন্ম গেন্ডারিয়ায়, বেড়ে ওঠা ওখানেই। তখন ঢাকা এমন ঘিঞ্জি ও অতিজনাকীর্ণ ছিল না। ছাদে বা বারান্দায় দাঁড়ালে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যেত। চিলেকোঠা থেকে দেখেছি শাখারি বাজার, নারিন্দা নওয়াবপুরে আগুন জ্বলতে দেখছি, শুনেছি "নারায় তাকবীর " ধ্বনি। দৌড়ে আশ্রয় নিয়েছি নানীর বা খালাদের বুকে। সেখানেও শুনেছি আজ কাঠেরপুলে অনেক মানুষকে জবাই করেছে। কেন এই হানাহানি? তার উত্তরে একটি শব্দ শুনেছিলাম মালাউনদের মারছে। তখন বুঝতে পারিনি আসলে মালাউন শব্দটা কি? শুধু এটা জানতাম ভারত পাকিস্তানের শত্রূ ।তবে কি ইন্ডিয়া মালাউন? ছোট্ট মনে প্রশ্ন জাগে ওরাতো অনেক দূরে তবে আমাদের কাঠের পুলে আসলো কি করে? বলা বাহুল্য আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে ৭১" সালে তাদেরই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল। ভারতই আমাদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। যে কাবা ঘর নিয়ে আজ বাংলাদেশে এতো উসৃঙ্খলতা ভাঙচুর হলো সেখানকার মানুষ বা রাজা আমাদের শুধু বিরোধিতাই করেনি তারাও আমাদের মালাউন উপাধি দিয়েছিল। আমরা কত সহজে সব ভুলে যাই নিজেদের সুবিধামত।
বর্তমান কালের সাথে ১৯৬৪' সালে অনেক মিল। ১৯৬৪ সালে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত হজরতবাল নামক তীর্থক্ষেত্রে নবী হজরত মুহাম্মদের(সঃ) সংরক্ষিত মাথার চুল চুরি করা হয়েছে ।এই সংবাদ ছড়ানোর মাধ্যমে পূর্ব-বাংলায় বাঙ্গালীহিন্দু হত্যার সূচনা করা হয়।২০ নবাবপুর রোডের বাড়িতে ঢুকে যাজক প্রধানকে হত্যা এবং রাধা কৃষ্ণের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়। টিকাটুলি দিকে রামকৃষ্ণ মিশন এ পোড়ানো হয়েছিল তিনটি ভবন, সাতটি কুঁড়েঘর, মন্দির, একটি দাতব্য চিকিৎসালয়, একটি গ্রন্থাগারের ছাত্রাবাস সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। রায়েরবাজারে কুম্ভকারগণ হাজারীবাগ ট্যানারী ও মোহাম্মদপুরের বিহারী মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হন(বিবিসি নিউজ ও https://bn.wikipedia.org/wiki থেকে সংগৃহিত )
২০১৬ সালে ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামে এক যুবক পবিত্র কাবা ঘরের ছবি এডিট করে এর উপর শিবমূর্তি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে । এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে নাসিরনগর সদরের কলেজ মোড় ও খেলার মাঠে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এবং হেফাজতে ইসলামের নেতারা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে ও ৩ থেকে ৪শ’ লোকের একটি দল জড়ো হয়ে পুরো উপজেলা সদরের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।ফেসবুকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ‘ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার প্রতিবাদের নামে রোববার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টাব্যাপী জেলার নাসিরনগর সদরে অন্তত ৮টি হিন্দু পাড়ায় তাণ্ডব চালানো হয়। এসময় মন্দিরসহ শতাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। হামলা চলাকালে মন্দিরের পুরোহিতসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তার পর বড় হতে জেনেছি হিন্দু মানে মালাউন।
বড় হতে জেনেছি হিন্দু মানে মালাউন আর মালাউনরা আমাদের শত্রু। কিন্তু শব্দটির মানে জানি নি। ৬৯/৭০ সাল!! বৈজ্ঞানিক গবেষণা মতে ততদিনে আমার ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠেছে যদিও বিকাশ লাভ করেনি যেমন আজও করেনি। মনে বিরাট প্রশ্ন!!! আমরা পূর্ব পাকিস্তানীয় মুসলমান “মালাউন" না তবে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের কেন মারছে? শেখ মুজিবতো মালাউন না। তাঁকে কেন জেলে দিল? দেশদ্রোহী বলছে? তখন আবার নতুন করে জানলাম বাঙালি মানে মালাউন।
২০১৬ সালে ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের রসরাজ দাস নামে এক যুবক পবিত্র কাবা ঘরের ছবি এডিট করে এর উপর শিবমূর্তি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে । এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে নাসিরনগর সদরের কলেজ মোড় ও খেলার মাঠে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এবং হেফাজতে ইসলামের নেতারা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে ও ৩ থেকে ৪শ’ লোকের একটি দল জড়ো হয়ে পুরো উপজেলা সদরের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। নাসিরনগরে ১৫টি মন্দির এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের দেড় শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।ফেসবুকে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ‘ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার প্রতিবাদের নামে রোববার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টাব্যাপী জেলার নাসিরনগর সদরে অন্তত ৮টি হিন্দু পাড়ায় তাণ্ডব চালানো হয়। এসময় মন্দিরসহ শতাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। হামলা চলাকালে মন্দিরের পুরোহিতসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তার পর বড় হতে জেনেছি হিন্দু মানে মালাউন।
বড় হতে জেনেছি হিন্দু মানে মালাউন আর মালাউনরা আমাদের শত্রু। কিন্তু শব্দটির মানে জানি নি। ৬৯/৭০ সাল!! বৈজ্ঞানিক গবেষণা মতে ততদিনে আমার ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠেছে যদিও বিকাশ লাভ করেনি যেমন আজও করেনি। মনে বিরাট প্রশ্ন!!! আমরা পূর্ব পাকিস্তানীয় মুসলমান “মালাউন" না তবে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের কেন মারছে? শেখ মুজিবতো মালাউন না। তাঁকে কেন জেলে দিল? দেশদ্রোহী বলছে? তখন আবার নতুন করে জানলাম বাঙালি মানে মালাউন।
প্রথমবার বাবার কাছে জানলাম মালাউন শব্দের মানে। মালাউন শব্দটি আরবী শব্দ "ملعون" থেকে উদ্ভূত যার অর্থ অভিশপ্ত। কিন্তু আমরা কি অভিশপ্ত? আমরা কি এমন কাজ করি যাতে কেউ আমাদের অভিশাপ দেয়? তাহলে আমরা কি করে মালাউন হলাম? চোখ কান খুলে গেলো। তাহলেতো মালাউন মানে হিন্দু নয়। বুঝতে শিখলাম পাকিস্তানিরা আমাদের উপর কি ভাবে অত্যাচার করছে, আমাদের শাসনের নাম শোষণ করছে। তাই শেখ মুজিব আমাদের স্বাধীনতা চাইছে আমার শৃঙ্খল মুক্ত করতে চাইছে। তখন আমার বোঝার বয়স। কিন্তু আমার ছোট অবুঝ বোন (Reshmi Ahmed) আধো মুখে বলতে শুরু করেছে "তোমরা নৌকায় ভোট দিও। জয় বাংলা” তার আধো মুহু ডাক " জয় বাংলা"। ইলেকশান হল। আমরা ভোট জিতে গেলাম তবুও আমাদের অধিকার দিচ্ছে না ইয়াহিয়া খান আর ভুট্টো। চারিদিকে দাবানল।
এরমাঝেই আমার মেজো বোনের বিয়ে হলো অসীম সাহসী অকুতভয়ে বিশিষ্ট ছাত্র নেতা ফজলুর রহমান ফ্যান্টম্যাসের সাথে। বিয়েতে আসলেন সয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর দুই পুত্র সহ পরিবারের অনেকে সাথে চার্ নেতা ও দলের ছাত্র নেতারা। সকল দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনতাকামী নেতা কর্মী। চারিদিকে “জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু " শ্লোগানে মুখরিত। আমাদের ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ জুড়ে প্যান্ডেল। সেই আমার প্রথম দেখা আমাদের জাতির জনককে। সেই দৃশ্য কল্পনা করলে আজও শিহরিত হই। বাংলাদেশের স্থপতির আশীর্বাদে ধন্য হলো আমার বোন দুলাভাই। আর ছোট্ট বোনটাকে কোলে নিতে ভোলেননি বঙ্গবন্ধু। হোক সে ছোট তবুও একজন স্বাধীনতার কর্মী তার আধো বুলি “জয় বাংলা ডাক"। আজ পরিষ্কার মনে পড়ে যাওয়ার সময় তিনি তাঁর উদ্দীপ্ত কণ্ঠে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বললেন স্বাধীনতার সংগ্রামের জন্য। আমরা তখন এক জাতি এক স্বত্বা এক অস্তিত্ব।কেউ হিন্দু না ,কেউ মুসলমান না ,কেউ বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান না আমরা সবাই বাঙালি। সেই বয়সেও আমার বুঝতে একটুও অসুবিধা হয়নি। অথচ আজ পরিণত বয়সের মানুসদের কাছে এই অমোঘ সত্যতা বুঝতে এত কঠিন কেন?
বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুতো সেই কবেই এই সত্যের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। যার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ।তবে কোন অভিশাপে এই স্থাপনায় ঘুন ধরেছে।কাদের বা কোন চক্রান্তে আমরা ভুলতে বসেছি জাতির পিতার মুল মন্ত্র।
২৫ মার্চ ১৯৭১। মধ্যরাতে ঢাকা শহরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল পাকিস্তানী সৈন্যরা। হঠাৎ করে থেমে গেল ঢাকা।নেমে এলো কবরের নিস্তবদ্ধতা দানবের অশুভ শক্তির পদভারে কাঁপছিল কাঁপছিল পুরোদেশ। মানুষের রক্তের স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল সাঁদা মাটি।গন্ধ মিলিয়ে গেল হাসনাহেনার।রাত ১ টায় শুরু হয় পাকবাহিনীর বর্বরোচিত উন্মত্ততা। ঘুমন্ত নিরস্ত্র জনতার উপর পাকহানাদার বাহিনীর পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ।ইতিহাসের এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের নাম ছিল” অপারেশন সার্চ লাইট”
আর এই হত্যাযজ্ঞের “নীলনক্সা” বাস্টায়য়ন করতে ঢাকায় ডেকে আনা হয় ''বেলুচিস্তানের কসাই '' খ্যাত জেনারেল টিক্কা খানকে।
আবার সেই একই কথা মালাউন মারো। এবার আর ছাদে উড়তে হয়নি বারান্দা থেকেই দেখতে পেয়েছি দাউ দাউ করে জ্বলছে শাঁখারি বাজার, নওয়াব পুর। রাতেই মেরে ফলে হলো সাধনা ঔষধালয়ের যোগেশ কাকু সহ আরো অনেককে। সর্বদা মুখরিত পুরো গেণ্ডারিয়া পাড়াটা নিশ্তব্ধ। টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন। কারো কোন খবর নেওয়া যাচ্ছেনা। পাক মিলিটারিদের বুটের শব্দ। আর বিহারীদের উল্লাস। বাড়ির মেয়েদের ভিতরের ঘরে লুকিয়ে থাকতে বলা হল। কেন তা বুঝতে পারিনি তখন। ২৭ তারিখ সকালে কারফিউ তুলে নেওয়া হলে খবর পেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে তাদের প্রানপ্রিয় জামাইবাবু জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাকে( তাঁর স্ত্রী বাসন্তী গুহ ঠাকুরতা আমার মায়ের ও আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষয়িত্রী ছিলেন) গুলি মারা হয়েছে ওনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়েছে । আমার মা বাবা ছুটে গেলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে দেখতে ।
উল্লেখ্য যে, ২৫ মার্চ রাত আড়াইটার দিকে পাক হানাদার সেনাবাহিনীর কতকগুলি সশস্ত্র গাড়ি ঢুকে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে। নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালায় তারা। ছাত্রদের হত্যার পর তারা ঢুকে পড়ে শিক্ষকদের আবাসিক হলে। সৈন্যরা জোর করে ধরে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাকে ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করে নাম কী, ধর্ম কী ইত্যাদি। অধ্যাপক নিজের নাম ও ধর্মের পরিচয় দিলেন। তারপরই গুলির শব্দ। লুটিয়ে পড়লেন সদাহাস্যময়, বন্ধু ও ছাত্রবৎস,আপনভোলা মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা আমার মায়ের জামাইবাবু।পরদিন ২৬ মার্চ ঢাকা শহরে কারফিউ। অবরুদ্ধ অবস্থায় বাসার মধ্যেই কেটে গেল সারা দিন। অদূরেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল; কিন্তু বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। ২৭ তারিখ সকালে কারফিউ তুলে নেওয়া হলে তাঁকে নেওয়া হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু চিগিৎসা কিছুই হলো না। ২৮ ও ২৯ মার্চ গেল, ৩০ মার্চ সকালে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। যখন চেতনা ছিল আমার মাকে দেখে বললেন "চলে যাও এখন থেকে ওরা তোমাদেরও ছাড়বে না". । আমার মা তখন তারুণ্যপূর্ণ অপূর্ব সুন্দর। পাক সেনাদের লালিত দৃষ্টি যেন মাকে আঁচড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছিলো। তাই মায়ের অতি প্রিয় দিদিমনি (বাসন্তী গুহ ঠাকুরতা) বললেন "খালেদা বাসায় যাও” । মা বাবার প্রাণ ছিড়ে যাচ্ছিল তাদের দিদিমনিকে ছেড়ে আসতে ।তাই ৩০ মার্চ এ ওনারা আবার ঢাকা মেডিকেল এ গেলেন। নিজে একজন ডাক্তার হয়েও তাঁর জামাইবাবুর জন্য কিছুই করতে না পারার কষ্ট আজও তাকে অনেক পীড়া দেয়। তাদের জামাই বাবু জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা চির বিদায়ের অসহায় নীরব স্বাক্ষী হয়ে রইলো আমার মা বাবা। বাসন্তী দি অনেক শক্ত হয়ে বললেন " খালেদা আমাকে হরলিক্স বানিয়ে দাও আমার শক্তি দরকার দোলার( তাঁর মেয়ে মেঘনা গুহঠাকুরতা ) জন্য"। কি অসহনীয় কষ্ট ,কি বিরাট বলিদান। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই মহীয়ান নারী বাসন্তী গুহ ঠাকুরতাকে আমরা দেশস্বাধীনের বহু বছর পর মালাউন উপাধিতে ভূষিত করেছি।
হায়রে আমার বাংলাদেশ
হায়রে আমার বাংলাদেশ!! হায়রে আমার বাঙালী!!! কত সহজেই আমরা সব কিছু ভুলে যাই। বুক ফুলিয়ে মাথায় টুপি পরে অন্যায় কোরে তার আবার প্রমান দাবি করি। যারা প্রমান চাইছেন তার বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনারা মালাউন বলে গালি দেন না? সে মন্ত্রী, কি উজির কি নাজির সব হরিহর আত্মা। কেউ আলাদা নয়। মালাউন শব্দ এখন আমাকে কষ্ট দে না কাঁদায় না। কেমন জানি গায়ে জ্বালা ধরায়।যখন গান শিখতে শুরু কলাম, নাচতে শুরু করলাম, কপালে টিপ্ পরলাম, শাঁখা পরলাম, সুন্দর ছবি, ভাস্কর্য বিগ্রহ দিয়ে ঘর সাজালাম, বরীন্দ্রনাথের প্রেমে পড়লাম, ভানু সিংহের পদাবলীর রাধিকা ভাবলাম নিজেকে, চর্যাপদের বা বৈষ্ণব পদাবলীর নায়িকা হলাম সেই ধারা মতো ভালোবাসলাম, প্রণয় প্রত্যাশিত হলাম, ছেলেমেয়েদের নাম রাখতে গেলাম সর্ব ক্ষেত্রে মালাউন হলাম । ছেলের বিয়েটা হলো না কারণ আমার ধাঁচ ও আমি মালাউন অর্থাৎ অভিশপ্ত।
আমি যতগুলো বিষয় উল্লেখ করলাম এখানে অভিশপ্ত হবার বিষয় কি একটিও আছে? হয়তো কথা উঠতে পারে আমি কেন এসব করি? কেন কোন আরব, ইংরেজ, ফরাসি অথবা ফার্সি কবির নায়িকা বা তাদের মত ধরণ ধারণ চর্চা করি না কেন? কারণ এ আমার অক্ষমতা।
আমি বাঙালী আমি জন্মেছি বাংলায় আমি বাংলায় কথা বলি।বাংলা আমার সংস্কৃতি আর সংস্কৃতি হচ্ছে জীবনের দর্পণ। সংস্কৃতি ও কৃষ্টি একটি জাতির শেকড়। আমরা বাঙালি হিসেবে গর্বিত বোধ করি।বাংলা ভাষা বাংলাদেশ নিয়েও আমাদের গর্বের শেষ নেই। আমরা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি বিশ্ব ভাষা দিবস হিসেবে এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পেয়েছি আর রক্ষা করেছি হাজার বছরের বাংলা সাহিত্য ,সংস্কৃতি ,কৃষ্টি ও আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের ধারক বাহক বাঙালি।বাঙালির প্রাণের আবেগ ও ভালোবাসায় নবজাগরণ সৃষ্টি হয় সংস্কৃতির ক্ষেত্রে । বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য গ্রামীণ মেলা , পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, জারি, সারি, ভাটিয়ালি গান, , দাঁড়িয়াবাঁধা, গোল্লাছুট, কানামাছি, হাডুডু, লাঠিখেলা । সকল জাতি ও উপজাতি সাঁওতাল , ওঁরাও , পাহাড়িয়া , মুন্ডা, রাজবংশী, কোঁচ, খাসিয়া, মনিপুরী, টিপরা, প্যাংখো, গারো, হাজং, মার্মা, চাকমা, তংচঙ্গা, চাক, সেন্দুজ, ম্রো, খিয়াং, বোম (বনজোগী), খামি, লুসাই (খুমি) আনন্দে বসবাস করি। একে অন্যের উৎসবে উৎসব পালন করি। আমি চর্যাপদের অক্ষরগুলো চিনি। আমি চিনি সওদাগরের ডিঙার বহর, পালযুগ নামে চিত্রকলা, পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার,চিনি জোড়বাংলার মন্দির , বরেন্দ্রভূমে সোনা মসজিদ ,আউল-বাউল মাটির দেউল ‘মহুয়ার পালা’ গীতাঞ্জলি ও অগ্নিবীণা চিনি ক্ষুদিরাম ,সূর্যসেনে, জয়নুল আর অবন ঠাকুর। চিনি বাঙ্গালা রাষ্ট্রভাষার লাল রাজপথ শহীদ মিনার। জেনেছি শুনেছি জয় বাংলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের বজ্রকণ্ঠ।একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। আমার পরিচয় আমি বাঙালি। আমার ধর্ম আমার কর্ম সবই বাংলায়। তবে বাংলা কি মালাউন? অভিশপ্ত? তাই যদি হয় ।তবে আমি একশো হাজারবার মালাউন হতে রাজি।
বিশ্ব ব্রম্মাণ্ড মহাকাশ গ্রহ নক্ষত্র সকল উদ্ভিত প্রাণীকুল সকল কিছুর ধর্ম আছে। ধর্ম মানে চরিত্র রাসায়নিক ভাষায় বিক্রিয়া। যারা অন্যকে কথার বাণে ,চলনে কষ্ট দেয়,চুরি করে ,মাথায় টুপি পরে দুর্নীতি করে জায়গা দখল করে , মন্দির মসজিদ বা কারো আশ্রয় স্থল এমনকি পিঁপড়ার বাসা ভাঙে ,প্রজাপতির পাখা ছেঁড়ে সুন্দরের সাথে যাদের আড়ি তারা যদি ধার্মিক হয় তবে এমন ধার্মিক আমি হতে চাই না। এই ধর্মান্ধতাকে আমি প্রত্যাখ্যান করি। ধর্ম মানুষে প্রভেদ ঘটায়, অপরকে গালা গালি দেওয়ায় হত্যা করায়।হিন্দু মুসলমানকে ম্লেচ্ছ ও যবন বলে গালি দেয়। ম্লেচ্ছ অর্থাৎ অসভ্য জাতি অভিধানে ‘যবন’-এর পরের শব্দটি যবনারি। এর অর্থ শ্রীকৃষ্ণ। যবন+অরি= যবনারি। ‘অরি’ মানে শত্রু; অতএব, ও কৃষ্ণের শত্রূ মুসলমান । সুতরাং মুসলমানদের হিন্দু জাতির শত্রূ না সাজালে কৃষ্ণভক্ত হওয়া যায় কী করে? ‘প্রাচীন বঙ্গ সাহিত্যে’ লেখা হয়েছে, ‘যবন হইয়া করে হিন্দু আচার, ভালমত তারে আনি করহ বিচার।’ উক্ত পুস্তকের ২৮ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে, ‘মরিতে লইয়া হাতে প্রণয়ের শূল, কবির যবন যত সমূল নির্মূল।’ এই হলো ধর্মের কল্যাণ। ১৯৪৬ সালের ১৬ অগস্ট তদনীন্তন ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের রাজধানী কলকাতায় সংঘটিত একটি বহুবিস্তৃত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও নরহত্যার ঘটনা ধর্মের নাম । ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় ভারতে হিন্দু-মুসলিম জাতিগত দাঙ্গায় নিহত হয়দুই হাজারের বেশি লোক, যাদের বেশিরভাগই ছিল মুসলিম। বাবরি মসজিদকে নিয়ে ভারতে মুসলিমদের উপর আক্রমণ ও হত্যা ১৯৯২-এ ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙার মাসখানেক ধরে সাম্প্রদায়িক উগ্র হিন্দুরা মুসলিমদের উপর হামলা চালায়। শুরু হয় দাঙ্গা।সংখ্যা লঘু হওয়াতে মুসলিমদের উপর হিন্দুদের নির্যাতন মাত্রা ছাড়ায়। নির্যাতনের ধরন সব যুগের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে।মুসলিমদের ব্যাসায়িক প্রতিষ্ঠান,বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। অধিকাংশ মুসলিমদের পুরিয়ে মারা হয়েছে। শত শত মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। শিশুদেরকেও তারা ছাড় দেয়নি। প্রায় লাখখানেক মুসলিম তাদের বাড়ি ঘর ছেরে পালিয়ে যায়। এভাবেই সারা পৃথিবী জুড়ে ধর্মের নাম চলছে অধর্ম আর হত্যাযজ্ঞের খেলা। পৃথিবীতে এখান । এইদিনে অনাচার ও অবিচারের কর্ণধার হচ্ছে, ধর্মের কর্ণধার। ঈশ্বর আর ধর্মের নামে রমরমা ব্যবসা চলছে । ধর্মের বেড়াজালে দুনিয়া যেন জমাট বাঁধা রক্ত বোমা আর বারুদের ধোঁয়ায় ঢেকে আছে পুরো মানবকূল। সন্ত্রাসবাদীদের ও দুস্কৃতকারীর দখলে বিশ্ব আজ, ধর্মের নামে অধর্ম হচ্ছে । পৃথিবী ভাসছে রক্তের বন্যায়।
আমার সাথে আমার সৃষ্টিকর্তার মিলনের জন্য কোনো দালালের প্রয়োজন নেই ।.আমার সাথে আমার সৃষ্টিকর্তার মিলনের জন্য কোনো দালালের প্রয়োজন নেই। দালালের পেট ভরে ঈশ্বরের সাথে মানুষের মিলনের ব্যবসায়। আর এই দালালরাই নানা রকমের নিয়ন কানুন বানায় তাদের লাভে। এখন উন্নত তথ্য প্রযুক্তির যুগ। দু আঙুলের ডগায় সব কিছু। কেন আমরা পড়ি না এই ধর্মের রাজনীতি কি করে আসলো? কেন এই বিভাজন? কেন তোমার ধর্ম আমার ধর্ম? ক্ষমতার লোভে কিভাবে যুগ ধর্ম ব্যবহৃত হয়ে আসছে? আমরা কি চোখমেলে তাকাবো না? এখন সময় এসেছে বিরোধিতার। ধর্ম কে কুক্ষিগত করার। আমি বার বলেছি আবার বলছি ধর্মের আড়ালে আমাদের এই স্বার্থচারিতা বন্ধ করতে হবে।কে কাবা ঘরের সাথে শিবের ছবি দিলো আর স্বরস্বতির কি মূর্তি গড়লো তাই নিয়ে মারা মারি খুনাখুনি করার থেকেও পৃথিবীতে ভালো অনেক কিছু করার আছে। একই বুক সেলফে যদি আমরা নজরুল, শেক্সপিয়ার। রবীন্দ্র। শেলী, কিট্স্ ও রুমির বই রাখতে পারি। তবে বেদ কোরআন, গীতা, বাইবেল, তোরাহ্ এক সাথে এক সেলফে থাকতে পারবে না? তাদের মধ্যে তো কোনো বৈরিতা নেই। তারা দিব্যি মিলেমিশে থাকে আর আমাদের জ্ঞান আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়।কিন্তু আমরা তাদের নিয়ে মারামারি করি।
এক দেয়ালে কাবা, শিব, বুদ্ধা যীশুর ছবিতে দ্বন্দ্ব কি? তারাতো নিজের মধ্যে মারামারি করে না। এই যে বিশ্বলোকে এতো রকমের মানুষ কত বর্ণের কত জানি কত ভাষার কই বিশ্ববিধাতাতো কোনো ফারাক করে না তাদের মাঝে। তবে বেদ কোরআন গীতা বাইবেল তোরাহ্ এক সেলফে থাকতে পারবে না? তাদের মধ্যে তো কোনো বৈরিতা নেই। তারা দিব্যি মিলেমিশে থাকে আর আমাদের জ্ঞান আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়। আর আমরা তাদের নিয়ে মারামারি শুরু করি। এক দেয়ালে কাবা, শিব গণেশ, বুদ্ধা যীশুর ছবিতে দ্বন্দ্ব কি?
এই যে বিশ্বলোকে এতো রকমের মানুষ কত বর্ণের কি বিশ্ববিধাতাতো কোনো তফাৎ করে না। তাঁরই সৃষ্ট আমরা। আমরা ভেদাভেদ করি। ফালতু ধর্ম বাঁচাও আন্দোলনে কত মানুষ আজ নিজের দেশ থেকে বিতাড়িত। তাসলিমা তার মায়ের মুখটাও দেখতে পাইনি। দাউদ হাইডের আজও নিজের জন্মভুমির শিশির ভেজা মাটিতে পা রাখতে পারে নি । ধরনের নাম উপাসনালয় ভাঙি, মানুষের ঘরে আগুন জ্বালাই, ভিটা মাটি এমনকি কি জন্মভূমি থেকে উৎখাত করি। ধর্মের সস্তা আবেগ কোপানোল ও বোধ বুদ্ধিহীনতা ত্যাগ করে মনুষ্যকে আলিঙ্গন করা।
এই যে বিশ্বলোকে এতো রকমের মানুষ কত বর্ণের কি বিশ্ববিধাতাতো কোনো তফাৎ করে না। তাঁরই সৃষ্ট আমরা। আমরা ভেদাভেদ করি। ফালতু ধর্ম বাঁচাও আন্দোলনে কত মানুষ আজ নিজের দেশ থেকে বিতাড়িত। তাসলিমা তার মায়ের মুখটাও দেখতে পাইনি। দাউদ হাইডের আজও নিজের জন্মভুমির শিশির ভেজা মাটিতে পা রাখতে পারে নি । ধরনের নাম উপাসনালয় ভাঙি, মানুষের ঘরে আগুন জ্বালাই, ভিটা মাটি এমনকি কি জন্মভূমি থেকে উৎখাত করি। ধর্মের সস্তা আবেগ কোপানোল ও বোধ বুদ্ধিহীনতা ত্যাগ করে মনুষ্যকে আলিঙ্গন করা।
0 comments:
Post a Comment
অনেক অনেক ধন্যবাদ