ভালোবাসা কারে কয়?
সুনিকেত চৌধুরী
"কানা" আর "মাছি" এই দুটো শব্দ যেমন আলাদা ভাবে কোনো বিশেষ অর্থ বহন করেনা, কিন্তু এরা একসাথে হলে খেলা করে “কানা-মাছি ভোঁ ভোঁ "! পরম এক পবিত্রতা বিচ্ছুরিত হয় তখন "কানা-মাছি ভোঁ ভোঁ" খেলারত দুটি বা সাথের অনেক শিশুকে ঘিরে! ঠিক তেমনি করে" ভালো" আর "বাসা" এই দুটি শব্দও আলাদা ভাবে আমাদের হৃদয়ে তো দূরে থাকে মস্তিষ্কেও কোনো বার্তা পাঠায় না !
কিন্তু যখন ভালো আর বাসা এক জোট বেধে "ভালোবাসা" হয়ে উচ্চারিত হয় তোমার ঠোঁটে, আমার চুম্বন তখন চুম্বক হয়ে আশ্রয় খুঁজে পায় তোমার অস্তিত্বে ! আমরা এবারে একটু অন্যদিকে খুঁজি। চলুন যাওয়া যাক "মেয়েদের মন বোঝা দায়" বিষয়ক আলোচনায়। আমরা এই আপাতঃ সিদ্ধান্তে মোটামুটি একমত যে ভগবানও নাকি তাদের মনের খবর পাবেনা কোনোদিন ! এখন আমি যদি আলোচনার খাতিরে মুখ ফস্কে বলেই ফেলি যে জানা হয়ে গেলে তো আকর্ষণ ফুরিয়ে যেত । আর সেটা হলে সুনিকেত চৌধুরীর কবিতা লিখার বিষয়ের ঘাটতি পড়তো !
কিন্তু যখন ভালো আর বাসা এক জোট বেধে "ভালোবাসা" হয়ে উচ্চারিত হয় তোমার ঠোঁটে, আমার চুম্বন তখন চুম্বক হয়ে আশ্রয় খুঁজে পায় তোমার অস্তিত্বে ! আমরা এবারে একটু অন্যদিকে খুঁজি। চলুন যাওয়া যাক "মেয়েদের মন বোঝা দায়" বিষয়ক আলোচনায়। আমরা এই আপাতঃ সিদ্ধান্তে মোটামুটি একমত যে ভগবানও নাকি তাদের মনের খবর পাবেনা কোনোদিন ! এখন আমি যদি আলোচনার খাতিরে মুখ ফস্কে বলেই ফেলি যে জানা হয়ে গেলে তো আকর্ষণ ফুরিয়ে যেত । আর সেটা হলে সুনিকেত চৌধুরীর কবিতা লিখার বিষয়ের ঘাটতি পড়তো !
না, ব্যাপারটি সম্ভবত এতোটা হালকা নয়! আসুন তাহলে একটু গুরুত্ব সহকারেই আলোচনা করা যাক। ভালোবাসা কথাটা বলার সাথে সাথে কিন্তু আরেকটা কথা চলে আসে প্রায় তৎক্ষণাৎ, সেটি হলো "ভালোলাগা"। এখন দেখা যাক ভালোলাগা এবং ভালোবাসা র উৎপত্তি (মানে, গঙ্গোত্রী যেমন গঙ্গার উৎপত্তিস্থল, সেই অর্থে) কোথায়।
ভালোলাগা একটা তাৎক্ষণিক reaction বা প্রতিক্রিয়া।
আর ভালোবাসা একটা দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি বা অবস্থানের নাম। এখানে প্রশ্ন করা যেতে পারে ভালোলাগার পরিণতি ভালোবাসা কিনা। সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসার আগের স্তরে ভালোলাগা লাগির কোনো ব্যাপারই নেই! এই উদাহরণটি দিয়ে আমি আমার ভালোবাসা বিষয়ে এই যে আলোচনা বা অন্য কথায় ভালোবাসার সমীকরণ থেকে ভালোলাগাকে বাদ দিতে চাই।
কোথায় যেন শুনেছিলাম "আমি তোমাকে ভালোবাসি শয়নে, স্বপনে, জাগরণে" ! কিন্তু একটু ভেবে দেখলেই আমরা এই কথাগুলোর সারহীনতা বুঝতে পারবো।
ভালোবাসার অবস্থিতি শুধু মাত্র জাগরণে ! যখন ঘুমন্ত তখন কেউ কাউকে ভালোবাসেনা, ভালোবাসতে পারে না, ভালোবাসার জন্যে কাঙাল থাকেনা ! এর উপস্থিতি শুধু মাত্র জাগরিত অবস্থায়! ঘুমন্ত অবস্থায় একজন মানুষ না পুরুষ, না মেয়ে, না মুসলমান, না হিন্দু, না খ্রিস্টান, না বৌদ্ধ। না ভীত, না সাহসী ! না শিশু, না যুবক, না বৃদ্ধ !
অতএব ভালোবসা একটা অর্জিত উপলব্ধির নাম! আর এই উপলব্ধির উৎপত্তিস্থল মগজের কোষে।
যেখানে ঘটিত ঘটনাবলী থেকে সঞ্চিত উপলব্ধি একটা আকার ধারণ করে একটা দীর্ঘস্থায়ী পরিণতির আবহ বা বোধের সৃষ্টি করে।
আমি ভালোবাসায় পরিপূর্ণ আর আমি ভালোবাসাহীন এ দুই পরিণতিই একজনের জন্ম পরবর্তী পরিবেশ ও পারিপাশগত কারণে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিক্রিয়ার স্মৃতির সমষ্টি এবং তার পরিণতি।
তবে আমি যে আশায় বাঁচি সেটা হলো, আমার মস্তিষ্কে ঘটে যাওয়া ঘটনার স্মৃতির সাথে নিরন্তর যোগ হচ্ছে ঘটমান ঘটনার নতুন নতুন স্মৃতি আর সেগুলোর প্রত্যেকটি সৃষ্টি করছে নতুন উপলব্ধিগত নতুন নতুন পরিণতি! সবশেষে, আর একটি আশার কথাঃ আমি জেনে গেছি, জাগরিত অবস্থায় আমার যত ব্যাথা, যত আনন্দ, যত গান তার সাথে আমার ভালো থাকার,
আমার সুখী হওয়ার কোনো আত্ময়ীতা নেই, নেই কোনো সম্পর্ক!অতএব ভালোবসা একটা অর্জিত উপলব্ধির নাম! আর এই উপলব্ধির উৎপত্তিস্থল মগজের কোষে।
http://www.alokrekha.com
"There is only one happiness in this life, to love and be loved".well written
ReplyDeleteসুনিকেত চৌধুরী ভালবাসার সংজ্ঞা যে এমন হয় আগে জানতাম না। ধন্যবাদ কবি ? না লেখক ?
ReplyDeleteNasreen Akhter Reba অসাধারণ বিশ্লেষণ। ভালোলাগা এক মোহ~ হয়তো, সে মেঘ কেটে গেলে মুছে যেতে পারে। আর ~ভালোবাসা একবার হলে যদি মুছেও যায় কিন্তু দাগ থেকেই যায়...
ReplyDeleteদুর্দান্ত লেখা .ভালোবাসাকে এমন ভাবে আগে কখনো ভাবিনি. লেখক সুনিকেত চৌধুরী অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ...
ReplyDelete