আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও কবিতো সেদিনই নিজ মুখে উদাত্ত  কণ্ঠে " স্বাধীনতার ঘোষণা " দিয়েছিলেন তাঁর লেখা কবিতায়... পরে তা কে পাঠ করলো তাতে কি বা যায় ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    কবিতো সেদিনই নিজ মুখে উদাত্ত  কণ্ঠে " স্বাধীনতার ঘোষণা " দিয়েছিলেন তাঁর লেখা কবিতায়... পরে তা কে পাঠ করলো তাতে কি বা যায়




    ৭ই মার্চ ১৯৭১। এক করির কবিতা শুনতে হাজার বছর ধরে শোষিত লক্ষ লক্ষ  মুক্তিকামী বাঙালির ঢল নেমেছে রাজধানী জুড়ে। বহু কবির কবিতা আগেও  শুনেছে এই শৃঙ্খলিত শোষিত দলিত জনতা।
    সবটুকু শক্তি দিয়ে  প্রতিটি কবির কবিতা প্রানপনে গড়ে তুলেছে প্রতিরোধ- অকুতভয় চিত্তে। কোন কবির কবিতাই পুরো বাঙালী জাতিকে একটি আদর্শবোধে পারেনি  করতে ঐক্যবদ্ধ
    তাই আজ বাঙলী আশায় বুক বেঁধেছে।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবিতা বাঙ্গালির হাজার বছরের স্বাধীনতার মুক্তির  আকাঙ্খা  কি পূরণ করতে পারবে ? কবি কি পারবে তাঁর বাণী দিয়ে এই অমোঘ সন্ধিক্ষণে বাঙ্গালির অন্তরে আশা সম্ভবনা রোপিত করতে ? তাঁর কবিতায় কি থাকবে  রাজনৈতিক মুক্তিযুদ্ধের রণকৌশলের  রুপরেখা ? পরাধীনতার শিকলে অনিশ্চয়তার বেড়াজালে বন্দি দিশেহারা উদ্বেলিত  গোটা জাতি!!!

    মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় গৌরবের দিন।সেদিন এক কবি মানবিক বোধের শ্রেষ্ঠত্ব, গণতান্ত্রিক চেতনার উজ্জলতা নিপীড়িত মানুষের স্বাধিকার অর্জন আর্থ-সামাজিক মুক্তির  কবিতা শুনিয়েছিলেন। সে আমাদের স্বাধীনতার কবি সে বাঙালির অস্তিত্বের স্থপতি  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।তাঁর কবিতা  শৈলীর ভঙ্গি অতুলনীয়। কখনো আবেগ,কখনো যুক্তি, কখনো সোচ্চার  জোরালো আবার কখনো  বিশেষ স্পর্শকাতর স্বাধীনতার জন্য অধীর অপেক্ষায়, তখন একটি বজ্রকন্ঠ উচ্চারণ, পুরো জাতিকে নতুন প্রেরণায় উদ্দীপ্ত করেছিল । মন্ত্র জপে দিল মুক্তির-স্বাধীকারের।গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি;/ ‘এবারের ।সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম কবিতো সেদিনই নিজ মুখে উদাত্ত  কণ্ঠে  স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁর লেখা কবিতায়। পরে তার লেখা কে পাঠ করলো তাতে কি বা এসে গেল। কবি আর কবিতা অমর অম্লান অক্ষুন্ন। সেই থেকেই স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের হলো।



    স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো

    একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

    লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

    ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

    এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,
    এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না
    এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না।
    তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?
    তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে
    ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?
    জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত
    কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ
    কবির বিরুদ্ধে কবি,
    মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,
    বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,
    উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,
    মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ
    হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,
    শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি
    একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে
    লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প।
    সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর।
    না পার্ক না ফুলের বাগান, -এসবের কিছুই ছিল না,
    শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত
    ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়।
    আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল
    এই ধু ধু মাঠের সবুজে।
    কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে
    এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,
    লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,
    পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক।
    হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,
    নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে
    আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে।
    একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল
    প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’
    শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
    রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
    অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷
    তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
    হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
    সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?
    গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:
    এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
    এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
    সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।
    - নির্মলেন্দু গুণ
    http://www.alokrekha.com

    9 comments:

    1. সানজিদা আপনার ৭ই মার্চ বাঙালির জীবনে এক অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক দিন পড়তে পড়তে আপনার আর একটা লেখা "কবিতো সেদিনই নিজ মুখে উদাত্ত  কণ্ঠে " স্বাধীনতার ঘোষণা " দিয়েছিলেন" পোস্ট করেছেন দেখলাম। অতঃপর দুটোই পড়লাম। প্রথমটা তথ্য সম্মৃদ্ধ ও ৭ ই মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সূচনা তা আপনার লেখায় খুব সুন্দর করে পাঠকদের মনপুত হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু দ্বিতীয় লেখাটা অনবদ্য ইতিহাস। এই যে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্ক। আপনার লেখা পড়ার পর আর কোন সংশয় থাকে না

      ReplyDelete
    2. সানজিদা আপনার দুটোই পড়লাম। সবার সাথে আমিও একমত প্রথমটা তথ্য সম্মৃদ্ধ ও ৭ ই মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সূচনা তা আপনি খুব সুন্দর করে লিখছেন।একজন পাঠক হিসাবে আমার ভাল লেগেছে।দ্বিতীয় লেখাটায় পক্ষপাত আছে। আপনি কি আওয়ামী লীগ করেন?

      ReplyDelete
    3. সানজিদা আপনার দুটোই পড়লাম। খুব সুন্দর লিখছেন। আমার ভাল লেগেছে। সব নয় কিছু পাঠকদের ভাল লাগবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই যে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এই যে বিতর্ক। আমি মনে করি এটা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসকে খাটো করে। আর সত্য কথা বলা মানে কোন লীগ বা পার্টি করতে হয় না।

      ReplyDelete
    4. দুঃখিত কিছু ভুল থাকার জন্য আপনাদের মন্তব্য দুটোই পড়লাম। খুব সুন্দর লিখছেন। আমার ভাল লেগেছে। সব নয় কিছু পাঠকদের ভাল লাগবে তা নয় বলে আমি বিশ্বাস করি। মতবিরোধ থাকতেই পারে ।কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এই যে বিতর্ক। আমি মনে করি এটা আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসকে খাটো করে। আর সত্য কথা বলা মানে কোন লীগ বা পার্টি করতে করতে হয় না।

      ReplyDelete
    5. আলকরেখা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্বাধীনতার ইতিহাস লিখবে নতুন প্রজন্মের জন্য। তা এখনো না পেলেও আজকের লেখা দুটোই দারুন। তথ্য ভিত্তিক দৃঢ় ও শক্তিশালী লেখা। সানজিদা আপনার সাথে একমত সত্য কথা বলা মানে কোন লীগ বা পার্টি করতে করতে হয় না।

      ReplyDelete
    6. আমি কবি নির্মলেন্দু গুনের এই কবিতাটি অনেকবার পড়েছি। আবৃত্তিও করেছি অনেক অনুষ্ঠানে। সানজিদা রুমি নির্মলেন্দু গুনের এই কবিতাটি তার লেখার মাধ্যমে সত্যি কে দারুণ ভাবে তুলে ধরেছেন।একটা অনবদ্য প্রচেষ্টাও প্রশংসার দাবি রাখে

      ReplyDelete
    7. সানজিদা রুমি!!! নির্মলেন্দু গুনের এই কবিতাটি এমন বিশ্লেষণ আগে কেউ করেছে বলে আমার জানা নেই। সবাই আমরা কবিতা হিসাবে এর মূল্যায়ন করেছি।সানজিদা রুমি এই কবিতাটির একটি ঐতিহাসিক দিক তুলে ধরেছেন দারুণ ভাবে। আমি সরব সমর্থন ও সাধুবাদ জানাই প্রশংসা করাএকটা অনবদ্য ও প্রশংসার দাবিদার তার লেখার মাধ্যমে সত্যি।

      ReplyDelete
    8. সানজিদা রুমির নির্মলেন্দু গুনের " স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো" এই কবিতাটি এমন বিশ্লেষণ মূল্যায়ন প্রশংসার দাবিদার । এই কবিতাটি স্বয়ং একটা ইতিহাস তার লেখা দিয়ে প্রমান করেছেন। তুলে ধরেছেন দারুণ ভাবে। আমি তার লেখার একজন ভক্ত পাঠক। শুভেচ্ছা রইল

      ReplyDelete
    9. যদিও ঢাকায় এখন ৮ তারিখ। কাল অনেক আড়ম্বরে শ্রদ্ধা ভরে পালিত হয়েছে অনেক লেখা লিখি অনেক টক শো। আলোকরেখায় সানজিদা রুমির লেখা দুটি পরম পাওয়া। অনেক শুভ কামনা।ভালো থাকবেন

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ