ছোট্ট
দিদিভাই আমার। কেমন করে লিখলি এই কবিতা ? কে দেয় তোকে খাতা,কলম,রঙ-তুলি আঁকতে এমন কবিতা? আজ আমি তোর কবিত্বের প্রশংসা
করার জন্য লিখছি না ভাই।"কবিরা নাকি লম্পট হয়"?এ আমার বড্ড চেনা কথা। বাণ বিদ্ধ হয়ে আছি আজ অব্দি! "ঘাতের" আঘাতে হয়েছি মর্মাহত। আজও সেই ক্ষত থেকে রক্ত ঝরছে। তোর কবিতাটা পড়ার পর থেকে যে বর্ষণ শুরু হয়েছে অঝোর ধারায় তা থামবার কোন নাম
-ই নিচ্ছে নারে।বলতো কি বিড়ন্বনা!
বার বার চোখ মুছতে মুছতে চোখের কোণটায় প্রায় ঘা হবার উপক্রম। তুই তো জানিস ভাই ,কর্কট-এর দংশন এই চোখটাকেও রেহাই দেয় নি। তার উপর তোর এই লেখা। এটা কবিতা কি না জানি না। এতসব বোঝার শক্তি ঈশ্বর আমায় দেয় নি রে। শুধু জানি এ কবির কথা !কবির ভালোবাসার কথা!ব্যথার কথা !অন্তরের পুলকের কথা!
দিদিভাই,তোরতো অসীম রত্ন ভান্ডার।বর্ষিত হয় হীরা জহরত মনিহার-কখন কানায় কানায় ভোরে উঠিস তা নিজেও জানিস না। তুইতো বলেছিস "আমি মূলত কবিতা লেখার জন্য লিখি না। কবিতাই আমাকে দিয়ে নেজেকে লিখিয়ে নেয়। এ এক ভিন্ন অনুভূতি।"
তোর অসীম ধনরাশি থেকে আমায় কি "কবিরা নাকি লম্পট হয়" এই কবিতাটার কিছু কথা দান করবি?নাহ থাক! ধার দিলেই চলবে। কবিরা নাকি লম্পট হয়?এই কথার উত্তর দিতে চাই
তোর কথা ধার করে। সোনা,আমি যে নিঃস্ব আমার ভান্ডার যে একেবারে শূন্য। তোর ধার করা শব্দে আমিও জানাতে চাই সবাইকে-হ্যা!কবিরা লম্পট হয় বলেইতো ভালবেসে শাড়ির আঁচলে অন্যের দুঃখ মোছে যখন জ্বরে উত্তপ্তত শরীর মন নিয়ে কাতরাও তখন কবিই দু'হাত বাড়িয়ে বলে "এখানেই আছে-নির্মলতা-এখানেই আছে স্বস্তি নিষ্কলুষ!এসো আমার কোলে শরীর জুড়াও।তোমার বুকে ক্ষত আছে সে ক্ষততে আঙুল বুলাই।চোখে মেলে চাও -চিবুক-কপাল-অধর স্পর্শ করে দুদন্ড অশঙ্কিত করি"।
কবিরা হয় লম্পট। অথচ তারা ঝটফট কাপড় খুলে ফেলে না। ধীরে ধীরে আদরে- আহ্লাদে- সোহাগে সিক্ত করে। পাগল প্রণয়উন্মত্ত নেশায় কেশ এলিয়ে বলে "চুলের ঘ্রাণ নাও "!কবির যদি লম্পট হয়?কয়েক জীবনের চাহিদা তেষ্টা নিয়ে লম্পট কবির সামনে নতজানু হয়ে কেন বল"আমার যত্রতত্র ক্ষুধা। কেন বল"আমার যত্রতত্র ক্ষুধা।মনে অসুখ কণ্ঠরোধ করা.আমাকে গ্রহণ করো"! কবিই হাত বাড়িয়ে দেয় সমর্পিত করে হাতের উষ্ণতাপ,আঙুলের আহ্লাদ-শরীরের ক্ষতে চুম্বন ওষ্ঠের। রহস্যময় কবি তাই আবিস্কার করো প্রতিদিন নতুন নতুন রূপে!
কবিরা মিথ্যেবাদীও বটে!মেঘের চতুর্দোলায় দোল খাওয়ায়---বুকের ঘন চুলকে বলে ঘনবিথীকা।যেথায় মহানন্দে কবি লুকোচুরি খেলা করে। স্বপ্নের রামধেনুতে চাপিয়ে সাতরঙের খেলায় মাতায়।একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে শরীর থেকে শরীর ছোঁয় মাথা থাকে নখ অবদি।নিবৃত্ত করে উদ্দীপন,শূন্যে নামে উষ্মা !অথচ কবির নিজের ভেতরের অসুখ,না পাওয়ার হাহাকার !! ঝরে পড়া শুকনো পাতার পথ দুমড়ে মুচড়ে মাড়িয়ে যাওয়ার তীব্র নির্মম পদধ্বনি।কবির বুক এক কবিতা- স্পর্শ মূক। প্রকাশ্য আসরে অথবা গৃহ নিমন্ত্রণে অতিথিদের সামনে আত্মপ্রসাদে -কবির কবিতা পড়। আবার অচিরাৎ কও--ছি!!! কবিরা কি লম্পট হয়!তাই না !!!
বার বার চোখ মুছতে মুছতে চোখের কোণটায় প্রায় ঘা হবার উপক্রম। তুই তো জানিস ভাই ,কর্কট-এর দংশন এই চোখটাকেও রেহাই দেয় নি। তার উপর তোর এই লেখা। এটা কবিতা কি না জানি না। এতসব বোঝার শক্তি ঈশ্বর আমায় দেয় নি রে। শুধু জানি এ কবির কথা !কবির ভালোবাসার কথা!ব্যথার কথা !অন্তরের পুলকের কথা!
দিদিভাই,তোরতো অসীম রত্ন ভান্ডার।বর্ষিত হয় হীরা জহরত মনিহার-কখন কানায় কানায় ভোরে উঠিস তা নিজেও জানিস না। তুইতো বলেছিস "আমি মূলত কবিতা লেখার জন্য লিখি না। কবিতাই আমাকে দিয়ে নেজেকে লিখিয়ে নেয়। এ এক ভিন্ন অনুভূতি।"
কবিরা হয় লম্পট। অথচ তারা ঝটফট কাপড় খুলে ফেলে না। ধীরে ধীরে আদরে- আহ্লাদে- সোহাগে সিক্ত করে। পাগল প্রণয়উন্মত্ত নেশায় কেশ এলিয়ে বলে "চুলের ঘ্রাণ নাও "!কবির যদি লম্পট হয়?কয়েক জীবনের চাহিদা তেষ্টা নিয়ে লম্পট কবির সামনে নতজানু হয়ে কেন বল"আমার যত্রতত্র ক্ষুধা। কেন বল"আমার যত্রতত্র ক্ষুধা।মনে অসুখ কণ্ঠরোধ করা.আমাকে গ্রহণ করো"! কবিই হাত বাড়িয়ে দেয় সমর্পিত করে হাতের উষ্ণতাপ,আঙুলের আহ্লাদ-শরীরের ক্ষতে চুম্বন ওষ্ঠের। রহস্যময় কবি তাই আবিস্কার করো প্রতিদিন নতুন নতুন রূপে!
কবিরা মিথ্যেবাদীও বটে!মেঘের চতুর্দোলায় দোল খাওয়ায়---বুকের ঘন চুলকে বলে ঘনবিথীকা।যেথায় মহানন্দে কবি লুকোচুরি খেলা করে। স্বপ্নের রামধেনুতে চাপিয়ে সাতরঙের খেলায় মাতায়।একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে শরীর থেকে শরীর ছোঁয় মাথা থাকে নখ অবদি।নিবৃত্ত করে উদ্দীপন,শূন্যে নামে উষ্মা !অথচ কবির নিজের ভেতরের অসুখ,না পাওয়ার হাহাকার !! ঝরে পড়া শুকনো পাতার পথ দুমড়ে মুচড়ে মাড়িয়ে যাওয়ার তীব্র নির্মম পদধ্বনি।কবির বুক এক কবিতা- স্পর্শ মূক। প্রকাশ্য আসরে অথবা গৃহ নিমন্ত্রণে অতিথিদের সামনে আত্মপ্রসাদে -কবির কবিতা পড়। আবার অচিরাৎ কও--ছি!!! কবিরা কি লম্পট হয়!তাই না !!!
তোমরা কবিকে উলঙ্গ কোরো যত্রতত্র।নাও খুলে দ্রৌপদীর শেষ বস্ত্রটুকুর মত! যেন দুর্যোধন!!আর কবি মুখে নয় কবি শব্দে লেখে যদি এই অবিচার!হয় লম্পট।আপন লোক ছেড়ে দূর দূরান্তে পাঠাও।সেখানে একা কবি,কবিতা আর নির্বাসন !
কবি
উদাম করে না কারো জীবন যাপনের নগ্নতা ! চেপে রাখে মনের গহনে বুকের মধ্যিখানে, মন যেখানে
বসত করে। কবির নষ্ট নীড় !কবি কারো কুঞ্জ বিচূর্ণ নির্জিত করে না। ভাঙে না আগল দুয়ার ! অস্তিত্ব মুছে দেয় না কারো বা অবস্থান।বরং আরো সুন্দর করে রং তুলিতে আঁচড় কাটে কবিতায়।কবি তুলতুলে অদূরে বিড়ালের মত। পাখির বুকের নরম পালক !
কবি
অনেক সাহসী এক টানে খুলে দিতে খোঁপার গিঁট দীর্ঘ বহমান চুল--আচঁড়-এ আলপনা কাটাতে পেতে দিতে পারে পিঠ। জ্বলজ্বলে চোখে অকৃপণ হাতে দান করে দিতে পারে সুন্দর-চোখ- হৃদয় মন।উজাড় করে দিতে পারে বুদ্ধিদীপ্ত নিজেকে। পৃথিবী যা কিছু সুন্দর।তারই মাঝে পরম অপরূপ কবির কবিতাখানি --এক কল্প-প্রতিভাত-- অজানা কাহিনী!!!
কবি বিদ্রোহী অথচ-খুনি হতে পারে না আদৌ! কবি ঘড়ায় তোলা জল নয় একটি শান্ত নদীর ভোর!যেথায় অবগাহনে পাপীর পূণ্যস্নান হয়।
আজ কবি’র চোখে ক্লান্তি ---তাঁর মৃত্যুর দিন ঘোষণা হবে শীঘ্রই। কবিতার বই প্রায় শেষ কেবল দুটো শব্দ বাকি।প্রতিটি শব্দ কোরানের আয়াতের মত শুদ্ধ থাকবে পৃথিবীর বেঁচে থাকা তাবত। "অথচ পৃথিবীর মানুষের বিশ্বাস কবিরা আজন্মকাল লম্পট।"
ইতি
তোর দিদি
চিঠি মানুসের মনের ভাব প্রকাশের সর্ব উত্তম মাধ্যম।আলক রাকায় যখন একটি আলাদা বিভাগ পেয়ে খুব আনন্দিত হয়েছিলা। প্রতিটি চিঠি মর্মস্পর্শী। কিন্তু নিয়মিত লেখা পাই না। আজ এই চিঠিটা পরে খুব ভাল লাগলো। অনেক ধন্য বাদ সানজিদা রুমি। ভাল থাকবেন
ReplyDeleteএক্ষন বেশ রাত। সবাই ঘুমে- কেউ টিভি দেখছে ।আমি কোনার ঘরটায় বসে লেখার চেস্তা করছি। আলক রেখা সামনে খোলা আলক রেখা স্ক্রিনে ।হঠাৎ বৃষ্টির মত একটা চিঠি এক লেখক আরেক কবিকে লিখছে। দারুন অভিনর চিন্তাধারা। চিঠির কথা গুলো অনেক সত্যি যেমন কবি আনিনা তাহিন নেভিলার কবিতা "কবিরা নাকি লম্পট হয়?"খুব ভাল ।অনন্ত আমরা যারা লিখি ।অনেক ভাল থাকবেন!
ReplyDeleteদুই লেখকের এমন মধুর সম্পর্ক!সত্যিকার এক রকম ভাল লাগা দেয় । আমারা প্রাই দেখি একজন লেখক আরেক জন লেখকের কুৎসায় পঞ্চমুখ। অথচ এই চিঠিতে মনের কতা ব্যেক্ত অন্য কবিকে ।তার ধার করা কথা নিয়ে । দারুন চমৎকার ।এটা বোধ হয় আলকরেখায় সম্ভব।ওনেক সুভ কামনা আলক রেখা
ReplyDeleteচমৎকার!!কবি আনিনা তাহিন নেভিলার- কবিরা নাকি লম্পট হয়? কবিতার ব্যখ্যা দিচ্ছেন আরেক কবি সানজিদা রুমি তার জীবন উপলব্দি দিয়ে । খুব ভাল লাগলো নতুন কিছু পরে। দুজনাকে অশেষ শুভেচ্ছা
ReplyDeleteকবিরা নাকি লম্পট হয়? কবি আনিনা তাহিন নেভিলার কবিতটা আমার খুব ভাল লেখেছে ।আমি মন্তব্যও লিখেছি ।আজ আবার নতুন করে লিখছি-- আমরা যারা কবিতা লিখি তাদের সম্পর্করে এই ধারনা কবি মানেই লম্পট । সাঞ্জিদা রুমি তাঁর চিঠির মাধ্যমে কবিরা নাকি লম্পট হয়? আনিনা তাহিন নেভিলার কবিতার বক্তব্য আর ভাল করে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমি দুজনার মঙ্গল কামনা করি।ভাল থাকবেন
ReplyDeleteএকটা চিঠি যে আবেদন হয় সানজিদা রুমির এই চিঠিটা না পড়লে বোঝা যাবে না। উৎকর্ষ মানের শব্দ চয়ন ও প্রচণ্ড আবেগ পূর্ন ,এই রকম একটা লেখা উপহার দেওয়ার জন্য আলোক রেখাকে অনেক ধন্যবাদ !
ReplyDeleteঅসাধারণ লেখা
ReplyDeleteদারুন খেলা শব্দ নিয়ে
প্রাণের কলমে
মনের কালিতে লেখা
আমি আপ্লুত