গ্রন্থিত পথ
রোকসানা
লেইস
পথের গ্রন্থি পেরুতে পেরুতে অনেক দূর পেরিয়ে যাওয়ার পর তার সাথে দেখা। সেছিল সজল, শ্যমল তরুণ। মধ্যাহেৃর তপ্ত দুপুর গনগনে আগুনের লাভা ঝরাচ্ছিল।
আকাশ ছিল ঝকঝকে নীল। কৃষ্ণচুড়ার লাল লোহুর রোদন ছিল জমিনের পরে বিছানো।
আকাশ ছিল ঝকঝকে নীল। কৃষ্ণচুড়ার লাল লোহুর রোদন ছিল জমিনের পরে বিছানো।
সুনয়না নদীতে বান ছিল না তখন। ছিলনা হাওয়ার মাতাল উড়াউড়ি। থম ধরা এক মধ্য দুপুর শুধু ছিল। আর ছিল চার চোখের মিলন। স্থির ভরষা এবং প্রপ্তির সয়ম্বর সভা, অনাদি ভালোবাসার। মেঘ বালিকার মূদ্রা খুলে বেরিয়ে পরা। বিদ্যৎ ঝলক। তীরের ফলা মোমের মতন গলে যায় নিমগ্ন চেতনায়।
আচমকা চমকে যাওয়ার আহ্বান। আচমকা মরুতে সুশীতল মরুদ্যানের দেখা পাওয়ার মতন বিষ্ময় এবং আতংক ভরা মরীচিকার দ্যোদল্যমানতায় উজাড় হৃদয়। পথের ক্লান্তি থমকে যাওয়া, যান্ত্রিক জীবনের জলভাড়, মুছে গিয়ে শুধুই মুখোমুখি বসে থাকার নির্বাক বলয়ে ঘিরে থাকা। স্বপ্নের ভূমণ্ডলে আটকে থাকা অনাবিল ভালোলাগায়।
যেতে হবে বহুদূর, পথের অনেক গ্রন্থি পেরিয়ে যাওয়ার বাকি এখনও, থামার সময় নেই। হয় তো বা ভালোলাগার ভালোবাসার ঝুলি ভরে থেমে যাওয়া যায়। কিন্তু দুই পথ দুজনের টানছে দুই দিকে। যেতে হবে বহু দূর, চড়াই উতরাই পেরিয়ে।
কখনও থেমে গেলে কোন ছায়া সুনিবিড় গাছের তলে, খানিক জিরাতে। স্বযত্নে রাখা দিগমবাহার আয়না, বের করে দেখব সুগভীর স্মৃতির পালক। তুমিও আচানক কখনও পিছন ফিরে দেখো উত্তপ্ত জনারণ্যে থেকে। এক রেখায় মিলে যাবে সমান্তরাল সময়, যোজন দূরের আলোক বর্ষ থেকে। সাতরঙ ঝর্ণাধারা উচ্চাঙ্গ সংস্কৃতি হয়ে ঘিরে থাকবে। বিজন বনে পথ হারানো পথিক, প্রকৃতির মমতায় পরিশুদ্ধ হবে। আর মেঘের স্তরের পথ পেরিয়ে বৃষ্টিধারায় ধূইয়ে সতেজ পেলবতায় পরিপূর্ণ হবে। থমকে যাবে ঝড়, থমকে যাবে খরা, বন্যা শুধু ভালোবাসার কাছে, বোধের কাছে। হৃদয়ের রক্ত হঠাৎই ঝলকে উঠবে। স্থির অপলক চোখে খানিক মেঘমল্লার শোনা হবে।
কিশোর জীবন গাঁথা, মায়াবী আঁচলে বেঁধে হেঁটে যাবে পরিণত উপন্যাসের পাতার মতন। হেঁটে যাবে স্খলন ঢেউয়ের প্রপাতের মতন। সমস্ত বেচাকেনার শেষে, জমজমাট পরিতৃপ্ত হাটের মতন। শুনশান একাকী নিরব তৃতীয়া চাঁদের উজ্জ¦লতা মেখে। জ্বালবে আলো জোনাকির মতন হৃদয়ে, ভেঙ্গে পরা এবং ভাবনার অথৈ পেরুনো সময়ে আশা এবং ভরষায় মূল্যবান ক্যানভাস,
মায়াবী শিশির হয়ে জড়াবে সুখের অনুভবে।
দ্যোতানা মিশে থাক দেহ ও মননে তোমার আমার। আর বাকি চেটেপুটে নিক সর্বজন। ছড়িয়ে দিই উজাড় ভালোবাসার ধান মাঠ জুড়ে, দিগন্ত জুড়ে, পৃথিবী জুড়ে। থমকে থেমে থাকা যে মানায় না আমাদের। পথের অনেক গ্রন্থি পেরুতে হবে এখনও। ভালোবাসায় সুদৃঢ় এবং সবল ছন্দে, নাচের মুদ্রায়। ভেঙ্গে যাওয়া এবং আবেশে মিশে থাকলে কী চলে বলো? এই টুকু গুপ্তধন জুড়ে থাক হৃদয়ের অতল, এইটুকু অয়ুত বর্ষ আনন্দ ঘিরে থাক ভালোবাসার বলয়।
কখনও পথের শেষ খুঁজে পেলে কখনও ফিরার ইচ্ছে জাগলে, স্বপ্নময় বাস্তবকে হাতের মুঠোয় বাঁধতে ইচ্ছে হলে। ঠিক জানি এক লহমায় বুঝে যাবো আমরা, প্রাণে প্রাণে,। বুঝে যাবো এবার ফেরার পালা। হাতে হাত রাখার পালা, আবার হারানোর পালা নিবিড় সুখে, একাকার হয়ে। সব সীমানার পাড় ভেঙ্গে সব জলতরঙের মৃদঙ্গ বাজিয়ে। দেহত্বত্ত মনো্ত্বত্ত গানের সুরে ছুটে ছুটে ছুটে..........
http://www.alokrekha.com
গ্রন্থিত পথ এত সুন্দর লেখা!শব্দ ও রচনা সত্যি রোকসানা লেইস প্রসংশনীয় ।
ReplyDelete