মা ও সন্তান থাক সুখে। মা দিবসের প্রাক্কালে এই কামনা।
সানজিদা রুমি
সানজিদা রুমি
হাসিন জাহানের এই কঠিন সত্য লেখাটা আমাদের মুগ্ধ না করে পারে না। কত গুলো নিষ্ঠুর কঠিন সত্য কথা খুব সহজ ভাষায় তুলে ধরেছেন।
চমৎকার রচনাশৈলী ও স্বতন্ত্র ভাব ও ভাষা প্রয়োগে চমৎকার লেখা। শুধু তার চমৎকার রচনাশৈলী বর্ণনা করার জন্য লিখছি না।
তার লেখার সাথে একমত পোষণ করে কয়েকটা কথা ও বিষয় উত্থাপন করতে চাই। একজন মা হওয়া খুব কঠিন কিন্তু একজন ভালো সন্তান হওয়াটা আরো কঠিন। সন্তান বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত মা অন্ত প্রাণ ঠিকই থাকে--শুধু জীবন ধারণ ও যাপন বদলে যায়। এই লেখায় হাসিন জাহান অনেক গুলো প্রায়োরিটি(priority) বা অগ্রাধিকারের বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
মুখ্য বিষয়টি হচ্ছে সন্তানের "সঙ্গী "- মানব জীবনে এই "সঙ্গী "র অবস্থান ও ব্যক্তিরূপে অস্তিত্ব অত্যাবশ্যক তা অনস্বীকার্য । একজন ভালো সন্তান হতে হলে "সঙ্গী "টির ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।হাসিন জাহান যেমনটি লিখেছেন যে,
প্রথম ধাক্কা শুরু হয় এই "সঙ্গী "টির কাছ থেকে। সন্তানের মার কাছে যেতে
বা কাছে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়। যেহেতু সামনে মা দিবস তাই মা'র কথাই বলছি বাবার কথা আজ থাক ! যে মায়ের রান্না খেয়ে ও আদরে আজ সে এতো বড় হয়েছে। সেই আদর বা রান্না করা তৃপ্ত খাবার খাওয়ার জন্য তাকে নানা বাহানা চল চাতুরির আশ্রয় নিতে হয়---কেবল ওই "সঙ্গী "টির অপছন্দের কারণে। এখানে আমি লেখক হাসিন জাহানের সাথে সম্পূর্ণ রূপে একাত্ব।
কিন্তু আমি ওই আলোচনা থেকে একটু সরে এসে অন্য বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে চাই। অনেক সন্তান
আছে যাকে কৌশল বা ছল চাতুরী করতে তো হয়েই না বরং বেশ বুক ফুলিয়ে বলে " আমার মা আমার কাছে
থাকে "- মাও গর্বিত এমন সন্তান নিয়ে। সমাজে পরিবারে সেই মায়ের ও সন্তানের কদর অনেক বেশি। অথচ ওই "সঙ্গী "টির অবদান বা ভূমিকা উহ্য থেকেই যায়। "সঙ্গী "টি মেয়ের জামাই হলে তার কপালে অনেক প্রশংসা জোটে - শ্রেষ্ঠ জামাইয়ের উপাধিও পায়। আর "সঙ্গী "টি যদি ছেলের বৌ হয় তবে কপালে প্রশংসা দূরে থাক ! এটাই তার ধর্ম তার কর্তব্য বলেই তাকে অগ্রাহ্য করা হয়। তার ভূমিকা হয় অস্বীকার্য- অগ্রহণীয় ! বরং ছেলে কেমন বৌকে "টাইট" দিয়ে রেখেছে বলে "মরদ" উপাধি পায় !
ওই মেয়েটা নিজের বাড়িঘর -পরিবার ছেড়ে আসে--নতুন মানুষ,নতুন পারিবারিক সংস্কৃতি ও নতুন পরিবেশে। অনেক কষ্ট ও বাধা বিঘ্ন পার করতে হয় তাকে এই সব নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়াতে। তা কি কারো চোখে পড়ে ? সে না চাইলে মরদ ছেলেটি মাকে কাছে রাখা অনেক দূরের ব্যাপার -মার কাছে যেতেও পারতো না। লুকিয়ে চুরিয়ে কৌশলে যেতে হত মাকে দু'দন্ড চোখের দেখা দেখতে। অনেক ছেলের সঙ্গী'র ঘোর নিষেধতা আছে --ছেলের তার মায়ের সাথে বলার ব্যাপারে। সেই ক্ষেত্রে ছেলেটা "মরদ" হয়েও পারে না মায়ের সাথে সম্পর্ক রাখতে। অনেক ক্ষেত্রে পাঠাতে বাধ্য হয় বৃদ্ধাশ্রমে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে হালচিত্র আলাদা। অনেক মেয়ের "সঙ্গীটি"র সম্পূর্ণ নিষিদ্ধতা আছে মার বাড়িতে যাওয়ার। কর্মজীবি মেয়ে উপার্জনের একটি টাকাও দিতে পারে না সঙ্গীটির কারণে। আরো নানান রকমের নিষেধাজ্ঞা থাকে সঙ্গীটির। অদ্ভুত ব্যাপার এই ক্ষেত্রে জামাই'কে খুব একটা দোষী করা হয় না। বেশির বেশি বলা হয় "আহা রে আমার মেয়েটার কপাল খারাপ"। এই একই ক্ষেত্রে ছেলের সঙ্গীটির ব্যাপারে মন্তব্য সম্পূর্ণ অন্য রকম। এখানে ছেলের কপাল খারাপ বলা হয় না -- খারাপ বলা হয় সঙ্গীটি'কে। যা অনিস্বীকার যোগ্য সত্য।
সুতরাং একজন ভালো সন্তান যখন কারো হয়। তার প্রশংসার সাথে সাথে তার "সঙ্গীটি"'র প্রশংসা করা অত্যাবশ্যকীয়। তাহলে একজন ভালো সন্তান হওয়ার কঠিন হবে না। সন্তানের মার কাছে যেতে বা কাছে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করতে হবে না ! মায়ের রান্না ও আদরে তৃপ্ত হাওয়ার জন্য তাকে নানা বাহানা- চল- চাতুরির আশ্রয় নিতে হবে না । মা'র বুকে সন্তান থাক সুখে একসাথে। মা দিবসের প্রাক্কালে এই কামনা।
কথাটা এতো সত্যি অনেক ছেলে আছে মাকে কাছে রাখতে কৌশল বা চাতুরী করতে তো হয়েই না। সমাজে পরিবারে মায়ের ও ছেলের অনেক দাম ।কিন্তু ছেলের বৌয়ের অবদানের কথা বলাই হয় না। মেয়ের জামাই হলে অনেক প্রশংসা জোটে আর ছেলের বৌ হয় তবে কপালে প্রশংসা কেন যেন এটাই তার ধর্ম তার কর্তব্য।এর জন্যই তার জন্ম তাই ধরে নেওয়া হয়। উল্টো ছেলে কেমন বৌকে "টাইট" দিয়ে রেখেছে বলে "মরদ" উপাধি পায় !দারুন লিখেছেন সানজিদা রুমি !
ReplyDeleteহাসিন জাহান জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ এমন একটা বিষয়ের উপর লেখার জন্য। হাসিন জাহানের কথা গুলো এত সত্য। ইটা আমাদের পরিবারেই ঘটেছে। তাই এ যে কতটা সত্য আমরা জানি। হাসিন জাহান যেন আমাদের কথাই লিখেছেন। অনেক শুভ কামনা
ReplyDeleteসানজিদা রুমিকে আন্তরিক ধন্যবাদ এমন একটা বিষয়ের উপর লেখার জন্য।কথা গুলো এত সত্য। আমার জীবনের গল্প আমার।যেন আমার কথাই লিখেছেন। তাই এ যে কতটা সত্য আমি টের পেয়েছি । অনেক শুভ কামনা
ReplyDelete