মেহরাব রহমানের গুচ্ছ কবিতা
আগুন ঠোঁটে
আগ্নেয়গিরি
চুমু
She wants dream-fabrics
to give
birth to a dream-child
from the
essence of.
যে শস্যের অভাবে যাবে না পচে।
বন্যা
যাকে রাহুর মতো তাড়িত করবে
না।
She will conceive,
A sweet
step in towards the conscience.
সে বিমোহিত, বিবস্ত্রা হতে চায়।
Wants an earthquake jerk at midnight.
তার
আগুনঠোঁটে আগ্নেয়গিরি চুমু
চায়
Fierce kiss on her volcanic lips.
কিন্তু
কোনো-এক বেদনা, স্থবিরতা,
তার
দ্যুতিমান আকাঙ্ক্ষাকে নিস্তেজ করে।
আমি
অপেক্ষায় থাকব।
তার
মন-ভালোর অপেক্ষায় ।
মুনি-ঋষির মতো ধ্যানমগ্ন অপেক্ষায় ।
কখন
প্রকম্পিত ঠোঁটে গাঢ় চুম্বনে আড়ষ্ট
করবে আমাকে ।
Tremendous Typhoon at midnight,
Can feel
that an earthquake is coming up.
শুনতে
পাচ্ছি ভূমিকম্পের
পূর্বাভাস ।
I shall
wait for the heaven,
তার
মন-ভালোর অপেক্ষায়।
তার
উত্তেজনার অপেক্ষায় ।
I have
dreamt,
The spring
of heaven is wilder
than the
earth.
তিনি
আমায় স্বপ্ন দেখিয়েছেন
স্বর্গলোকের—
ধরণীর চেয়ে অসভ্য এবং
বন্যতায় ঘেরা।
আমার
দুঃখ ভালোবাসা মাপার যন্ত্র নেই ;
নাহয়
সর্বক্ষণ মেপে নিতাম তার ভালোবাসার তাপমাত্রা,
জলবায়ু
ইত্যাদি।
এ- সময়— দুঃখের কোনো আদিগন্ত— নেই,
উৎস
খোঁজা বৃথা ।
আমি
বীজ বপন করেছিলাম
বৃষ্টি
এসে সব নস্যাৎ করল
।
আমি
ঈশ্বরের কাছে রোদ চাইলাম,
তিনি
সূর্য দিয়ে সব জল
শুষে নিলেন।
তোমার
জন্য শস্য চেয়েছিলাম,
কিন্তু
–অঙ্কুরোদ্গম হলো
না।
এক পরবাসীর ফর্দ
তবে
কি সূর্যের গায়ে ভীষণ জ্বর?
হয়তো
ঝরনার জল খেয়েছে প্রচুর
অগত্যা
মেঘের কাঁথা মুড়ি দিয়ে
শুয়ে
আছে শূন্যের বিছানায় ।
কিছু-কিছু বিপন্নতায়
গাছের পাতারা নড়ে না
ধীর
লয়ে হাওয়া বয়। পাতা
ঝরে, ঝরে যায়।
নবনীতার
যাওয়ার দিনের বিষন্নতা
তাই
কি কাঁদছে আকাশ?
তার
কণ্ঠস্বর কাঁপছে বৈতরণী ব্যথায়
ফিসফিস
বলে যায়, এত দূরে
কেন নবচাঁদ
কাছে
এসো, আরো কাছে
জোয়ারজলের
মতো নির্লজ্জ মিশে যাও বালুতটে।
দেখছ
না, ঐ যে উড়োজাহাজ,
একটু
পরে কলের বাজপাখিটা আমাকে
নিয়ে
উড়ে
যাবে দিগন্ত— থেকে দিগন্তে —
নোঙর
করবে আপন ¯ স্বদেশে।
আমার
বিয়োগের কটা দিন, নো
জাঙ্কফুড।
মাছ
খাবে, সবজি খাবে, আর
বেশি বেশি
বিশুদ্ধ
জল। সকালে-সন্ধ্যায়,
দিবসে-রাত্রিতে নিমগ্ন থেকো
প্রভুর
আরাধনায়। কথাকটা
কণ্ঠস্থ
করো তোতার মতো ; মনের ভেতরে
গেঁথে
নাও মনে থাকে যেন।
সম্রাজ্ঞী
তোমার আদেশ অমান্য করি
সে-সাহস কোথায়?
তবে
যে আমার একটা দীর্ঘ
ফর্দ মানে...,
মানে-মানে করছ কেন?
তালিকা তো পেয়েছি,
আর কেন?
যা আমার চাই
ক্ষুদ্র কাগজে পুরোটা ধরেনি
বাকিটা
রাখতে হবে
মগজে,
তোমার
মননে
নিভৃত
সংগোপনে।
ঠিক
আছে আকাশে ওড়ার আগে
বলে
যাও মৃত্তিকার মৃদুমন্দ কথা।
নবীনতা
তোমার ইচ্ছে
যদি
পার নিয়ে এসো
ধলেশ্বরী
পদ্মা, মেঘনা, যমুনার
জোয়ার-ভাটার এক আঁজলা জল
বৈশাখী
পূর্ণিমার মাতালকরা এক ফালি চাঁদ।
বুকে
ধরে নিয়ে এসো পাখির
কিচিরমিচির,
ফাল্গুনের
চৈত্র্যের কোকিলের কুহুতান, আমার প্রিয়
বর্ষাজলের
উন্মাদ নৃত্য,
কোলাব্যাঙের
ঘেঙর ঘেঙ, মেঘমালার রাগিণী।
তোমার
ইচ্ছে ,
যদি
পার নিয়ে এসো
নবান্ন
উৎসবে কৃষাণের ঘর থেকে
দুধ
চিতই, নলেনগুড়ের ভাপা পিঠে
আর নারিকেল পুলি অথবা
খেজুর
রসের পোড়-খাওয়া গন্ধ-মাখানো
কাওনের
ফিরনির -স্বাদ তারই
সঙ্গে
শীতের
একমুঠো মিঠেকড়া রোদ্দুর।
তোমার
ইচ্ছে ,
যদি
পার নিয়ে এসো
আষাঢ়ের
ঝুম্ঝুম বৃষ্টি
কবেকার
ফেলে-আসা অলস দুপুরের
ঘুম
এবং
শরতের এক বর্গাহাত নীলাভ
আকাশ।
২১-এর বইমেলা
পলাশ,
কৃষ্ণচূড়ার পথ ধরে
বাংলা
একাডেমীর সুরম্য প্রান্তর;
বৈশাখের
নববর্ষের প্রথম প্রহর,
রমনার
মুখরিত সবুজ চত্বর ;
সে এক অসম্ভব অনুভব
সমুদ্রসম
জাতীয় কবিতা উৎসব
তোমার
ইচ্ছে ,
যদি
পার নিয়ে এসো
ঐসব
উদ্যাপন থেকে
এক পেয়ালা টইটম্বুর আমেজ।
তোমার ইচ্ছে,
যদি
পার নিয়ে এসো
মুজিবের
গোর থেকে একমুঠো মাটি
যার
প্রতিটি ধূলিকণায়, জিবাস্মে
উচ্চারিত স্বাধীনতার
ধারা পাত
জনতার
বোল,
একটি
প্রাণের শব্দ
জয়বাংলা।
নবচাঁদ
এ তো এক যতিচিহ্নহীন
দীর্ঘ অভিলাষ।
তার
চেয়ে বল না কেন
রূপকথার
দৈত্য হয়ে তোমার জন্যে
আমার
করতলে নিয়ে আসি গোটা
বাংলাদেশটা।
আমার
হাতে এখন একবিন্দুও সময়
নেই
একটু
পরেই ডানা মেলে উড়ে
যাব শূন্যে মহাশূন্যে।
ভালো
থেকো। তুমি
ভালো থেকো।
এই পরবাসে রুদ্ধদ্বার , আমাকে শূন্যের কোঠায়
রেখে
ও চলে গেল কোন
সুদূরে।
আমার
ভুবন জুড়ে গভীর অন্ধকার
এখন
কেবল অথৈ নীরবতায়
ডুবসাঁতার
কাটা।
বালিশ-বদল
তুমি
যেদিন আসলে প্রথম আমার
ঘরে
পাশবালিশের
জায়গা দখল হাওয়া বদল
সঙ্গে
তারই বালিশ-বদল।
এমনি
ধারায় চলছিল তো চলছিল;
হঠাৎ
কখন বুকের ভেতর বন্ধ ঘরে
অন্ধ
জ্বালা তিরতিরিয়ে দুর“দুর“
কাঁপছিল
তো কাঁপছিল।
মান-অভিমান চলছিল তো চলছিল ;
তখন
আবার বালিশ-বদল জায়গা দখল
মাথার
নিচের বালিশ এখন কোল-বালিশ।
তোমার
সঙ্গে আড়ি আমার, কাড়ি
কাড়ি
নালিশ
শুধুই নালিশ।
কী যে জ্বালা
মহাজ্বালা
বালিশ
নিয়ে বিড়ম্বনা
কী যন্ত্রণা!
বালিশের
কি মুখ আছে?
আদর
দেয়ার ঠোঁট আছে?
কুসুম-কোমল বুক কাঁপে?
তোমার
যেমন?
বালিশের
কি ওম আছে?
অন্যরকম
ঝাঁজ আছে?
তোমার
যেমন?
বালিশের
কি মধ্যিরাতের ঢুলঢুল
মাতাল-করা চোখ আছে?
তোমার
যেমন?
বালিশের
কি পা আছে?
ঘুমের
ভেতর যখন-তখন
গায়ের
ওপর তুলে দেবে
নানান
ঢঙে নানান ভাঁজে
বালিশের
কি জাপটে ধরার পেলব
দুটো
হাত আছে,
তোমার
যেমন?
ঊর“র ভারে গুর“
গুর“ কাঁপবে
আমার
ক্ষীণ দেহ
বালিশের
কি তেমন কোনো ভার
আছে,
তোমার
যেমন?
আদর
করে শেষপ্রহরে মান ভাঙাবে
বালিশের
কি মন আছে,
তোমার
যেমন?
বালিশ
নিয়ে কী যন্ত্রণা
আড়িটাড়ি
বাতিল এখন
এই অকেজো শিমুল তুলোর বালিশে
আর কাজ হবে না।
আবার
আমার পালাবদল
বালিশ-বদল, হাওয়া-বদল।
উষ্ণ
বালিশ, পেলব বালিশ
প্রাণের
ছোঁয়ায় তপ্ত বালিশ
মনের
মাঝে আমার জন্যে
একশো
নালিশ
তেমনি
বালিশ থাকুক আমার
বুকের
ভেতরে সারাজীবন।
পাদটীকা ঃ আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধয়ে
চত্রিশল্পিী সয়ৈদ ইকবালরে চত্রির্কম
ব্যবহার করেছি গুচ্ছ কবিতার অলঙ্করন হিসাবে।
http://www.alokrekha.com
ঈদ মানে আনন্দ । আর এই আনন্দে যুক্ত হয় বিভিন্ন টেলিভিশনে নানা অনুষ্ঠান । এরই মধ্যে আলোকরেখা পড়াও একটা আনন্দ।মেহরাব রহমানের এক্তি কবিতা নয় একেবারে কবিতাগুচ্ছ। দারুন সব কবিতা ।মন্তা উৎফুল্ল হয়ে গেল ।আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ ও ঈদের শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteআলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ মেহরাব রহমানের কবিতা গুচ্ছ প্রকাশের জন্য । প্রতিটি কবিতা অনন্য।তবে আমার মনের গভীরে দাগ কেটেছে এক পরবাসীর ফর্দ। আমাদের অন্তরের কথা কবিতার কথা মালা।পরবাসী মানুষগুলোর ইচ্ছেগুলো প্রতিটি শব্দ এই কবিতায় । চাওয়া প্রতিটি বাক্যে । অপূর্ব অনবদ্য ।ঈদের শুভেচ্ছা কবি।
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের কবিতা গুচ্ছ প্রকাশের জন্য আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ । প্রতিটি কবিতা অসামান্য! অনন্যসুলভ ।কবিতার কথা মালা,প্রতিটি শব্দ,প্রতিটি বাক্যে যেন আমাদেরই অন্তরের আখ্যান ।চমত্কার, অপরূপ, অভূতপূর্ব,অপরূপ, অভিনব ও অনবদ্য।কবিকে জানাই ইদের শুভেচ্ছা!
ReplyDeleteসুপ্রিয় মাসুম রেজা, মোহন খান এবং মেহতাব পারভীনের অকৃপণ মন্তব্যের জন্য অন্তহীন কৃতজ্ঞতা
ReplyDeleteআমি অত্যন্ত আনন্দিত। কবি মেহরাব রহমান তাঁর ভক্ত পাঠকদের উদ্দেশে লিখেছেন এ পাঠকদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। সাধারণত কবিরা নিজেদের নিয়ে মোহিত থাকেন যে পাঠকদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন না। অনেক অনেক ধন্যবাদ কবি মেহরাব রহমান !!!
ReplyDeleteThank you mehrub Rahman for the wonderful trio-poems. Loved the way you fused English in Bangla poem which I started doing but had to face a lot of negative comments. But it took my breath away to see how the fusion actually worked with the genre you had. God bless and keep writing.
ReplyDelete