এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে।
সানজিদা রুমি
যত তোমায় ভুলতে
যাই দূরে ---
যাই দূরে ---
ততই ধর আঁকড়ে
বাঁধো আষ্টেপৃষ্ঠে;
চাই
যত ছাড়াতে।
তোমায় পিছে ফেলে
চলে যেতে চাই অচিন পুরে –
আগলে রাখো পথ
ভুলে যেতে চাই তোমায়
জীবন
অঙ্গনে-
আরো
ঢের ভালোবেসে ফেলো
আবদ্ধ কর;
আশ্লেষ বাঁধনে।
যত পালাতে চাই একান্তে
নির্লিপ্ত দ্বীপান্তরে-
তত করো
দৃঢ় শক্ত
অনড় বাহু;
এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে।
এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে।
আমিতো নই নিয়মসিদ্ধ
বিধিবদ্ধকরণ,
কেন
জড়াও নিবিড়ে
নিষ্ফল, বৃথা
আকিঁচন।
ভেসে যেতে চাই যদি
ডুবে যেতে চাই যত -
দু’হাতে আনো তুলে
ডুবুরীর মত।
সাধ্য কী তোমার চোখের
সামান্য আড়াল হই -
যেখানেই যাই সরে,
বিছিয়ে রাখো ডালপালা
কর
ভেদ অভিঘাত অন্তরে।
ক্রোশ পথও
তোমায় পেরিয়ে
অন্য পথে চলা-
দুরূহ,
দুষ্কর বৃথা প্রয়াস,
সমুদ্রের চেয়েও সমুদ্র তুমি
আকাশের চেয়েও আকাশ।
ভুবন মহন বাঁশির সুরে
নিয়ে যাও-
রুপকথার স্বপ্নপুরে
এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে।
তোমায় ভোলাতে বসি কবিতার বৈঠকে
গোপন অবগুণ্ঠন ঢেকে।
অমত্ত
কায়া স্থির চিত্ত-
তখনই কাছে টেনে নাও
অনাবৃত
করো আঁটসাঁট গ্রন্থি,
তপ্ত প্রশ্বাস, জ্বলন্ত নিঃশ্বাসে
অশান্ত কর মন
দেহ আনচান-
মিশে যাও কোষ থেকে কোষে।
অনু থেকে পরমানুর বিকিরণে
নিঠুর গাঢ় নিষ্পেষিত ওষ্ঠ চুম্বনে।
তোমার আমার তাপিত দেহ
তৃষ্না-ক্ষুধায় ভারাক্রান্ত।
ইন্দ্র-বীণার মীড়ের তানে
গোপন অলিন্দে –
জেগে থাকা ইচ্ছেগুলো
পরশ দিয়ে জাগিয়ে তোলো।
চেনা পথের বাইরে গিয়ে
আমার বুকের আগল খোলো।
খেলতে খেলতে বলতে বলতে
পৌছে-এ দাও চরম প্রান্তে।
তোমার আমার ক্লান্ত দেহ
রসে গন্ধে আহ্লাদিত -
প্রণয় সুধার মোহ
টানে
মধুবন্তী প্রেমের তানে।
লেপটে রাখো -
বুকের গহিন বালুর চরে,
এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ
করো মোরে।
প্রেম ভালোবাসা জীবনের সাথে এমনভাবে আঁকড়ে ধরে।তার থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ে ।সানজিদা রুমির এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে। কি যে সত্য । প্রতিটি শব্দে এই সত্যতা দৃশ্যমান। এক কথায় অনবদ্য।
ReplyDeleteএভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে। কি দারুন লিখেছ সানজিদা। আমাদের হৃদয় নিংড়ান কথা গুলো কথায় ছবিতে তুলে ধর এমনি করে যে মাঝে মাঝে চখের জল ধরে রাখতে পারি নে ।"আমিতো নই নিয়মসিদ্ধ-বিধিবদ্ধকরণ,কেন জড়াও নিবিড়ে নিষ্ফল, বৃথা আকিঁচন।ভেসে যেতে চাই যদি ডুবে যেতে চাই যত -দু’হাতে আনো তুলে ডুবুরীর মত।" একশ ভাগ খাঁটি কথা। নিয়মসিদ্ধ যে তাকেও ছাড়বে না আবার বিধিবদ্ধকরণ যে তাকেও হারাতে দেবে না , এটা বড্ড অত্যাচার জানো । এমন কথা আর লেখ একনিভাবে এই প্রার্থনা করি ।
ReplyDeleteসানজিদা রুমি একজন আসলেও সম্পূর্ণ নারী! তাই নারীর জীবনে এমন ঘটনাকে উপলব্ধি করেছেন কানায় কানায়।এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে। -এ যারা এই নিষ্ঠুর ভালবাসার স্বীকার প্রীতিটি লাইনের বাঁকে তারা নিজেকে খুঁজে পাবে! কি দারুন লিখেছন।
ReplyDeleteভালবাসার কি লিঙ্গ হয় ?সুতরাং সানজিদা রুমি একজন নারীর কথাই লিখেছেন কবিতায় এখানেই তার কল্পনার সীমাবদ্ধতা বলে মনে করি। তিনি নিজের ব্যক্তি স্বত্বা থেকে বেরোতে পারেন না, একজন কবি সার্বজনীন হবে এতাই কাম্য।
ReplyDeleteসানজিদা রুমীর লেখা আমার অনেক প্রিয়। ওনার শেরেবাংলা স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত "সংসার সমুদ্র" কবিতার বইয়ের প্রতিটা কবিতা অনেক হৃদয়গাহী।"এক কথায় দারুন! সানজিদা রুমির এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে। জীবনের কথা -ভাষা বা শব্দের খেলা নয় জীবনের প্রতিচ্ছবি " ! সত্য জীবনের কাছাকাছি সানজিদা রুমীর লেখা। বিমূর্ত নয়। অনেক শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteসানজিদা রুমীর লেখা আমার সব সময় অনেক প্রিয়। সহজ ভাব কবিতা অসাধারন লেখা-সানজিদা রুমির এভাবেই সম্পূর্ণ বিবশ করো মোরে। জীবনের কথা -ভাষা বা শব্দের খেলা নয় জীবনের প্রতিচ্ছবি সানজিদা রুমিকে অভিনন্দন .
ReplyDeleteআমারা এভাবেই বিবশ হই বলেই আমাদের এই সুযোগ নেওয়া হয়।আমরা পাই না নিয়মসিদ্ধ-বিধিবদ্ধকরণ হতে জড়িয়ে যাই নিবিড়ে নিষ্ফল, বৃথা আকিঁচনে। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা কেন সেই প্যনপেনানি গীত গাচ্ছি সানজিদা? এখন কি আমাদের বিবশ হলে চলবে।
ReplyDelete