নৃত্যকাব্য পরিবেশিত হয়েছে ১১ তম টরন্টো বাংলা বইমেলা ২০১৭, ৫ অগাস্ট , ২০১৭
নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনা: অরুণা হায়দার
সামগ্রিক পরিকল্পনা ও কবিতা : মেহরাব রহমান
আবৃত্তি: মেহরাব রহমান
আপনারা আলোকরেখায় আমাদের সবার প্রিয় ও স্বনামধন্য কবি
মেহরাব রহমান এর "কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম" অবশ্যই পড়েছেন
এবং উপভোগ করেছেন !
কবি বিভিন্নভাবে তাঁর পাঠকদের কাছে উল্লেখ করেছেন তিনি শুধু একজন মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন, তাঁকে যা করিয়ে নেয়া তাতে তাঁর নিজের কিছু কৃতিত্ব নেই! তিনি বলেন যে তিনি শুধু একজন করণিক !
এবং উপভোগ করেছেন !
কবি বিভিন্নভাবে তাঁর পাঠকদের কাছে উল্লেখ করেছেন তিনি শুধু একজন মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন, তাঁকে যা করিয়ে নেয়া তাতে তাঁর নিজের কিছু কৃতিত্ব নেই! তিনি বলেন যে তিনি শুধু একজন করণিক !
এবারে কবি মেহরাব রহমান তার লেখা সেই কবিতা নিয়ে
নাচের জগতের একটি প্রিয় নাম অরুণা হায়দারের সাথে জোট বেঁধেছেন তাঁর কারণিকের
কাজটুকুকে আরেক উঁচু পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্যে !"কাঁদে বিস্তীর্ণ
বনভূম"কে উনি এবারে জীবন্ত করে আমাদের উপহার দিয়েছেন। আলোকরেখার পাঠকদের জন্যে আমরা তা এখানে পোস্ট
করছি। আপনারা দেখুন ভগবানের করণিক-এর কর্ম-কান্ড !
কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম---মেহরাব রহমান
আমি যোগী সন্ন্যাসী হবো।
বৈরী হাওয়ায় বিবাগী পুরুষ ;
আমি এক গৈরিক বুদ্ধ হবো ।
অন্ধকার কিংবা আলোকরেখার কাছে
বিনম্র বিনয়ী
হবো ।
কারও কারও অন্তর অতলে উত্তপ্ত লাভা ;
তাই এতো চিৎকার,
তাই এতো বেদনা,
তাই এক প্রেম দুই হাওয়া;
এক নদী দুই চাওয়া ।
মেঘ জমে জমে, মেঘ জমে জমে
অপূর্ব আকাশ ছাই হয় প্রতিদিন ।
মানুষেরা কথা শোনেনা, অন্তর পড়েনা
কী কথা লোকেদের সাথে।
এখন শুদ্ধিকরণের পালা,
এখন পরিবর্তনের সঠিক সময়।
আমি বধি বৃক্ষের নীচে বসে দিলকোরান
পড়বো,
যীশুর মর্মে দাঁড়িয়ে বাইবেল পাঠ,
আর মসজিদ অথবা মন্দিরে অবনত চিত্তে ত্রিপিটক পড়বো।
আমি যীশু হবো ;
ক্রুশবিদ্ধ হবোনা, রক্তে রক্তে প্লাবিত করবোনা
জেরুজালেম, গোলগোথার নির্জন প্রান্তর।
আমি অলৌকিক বাতাস, অনন্ত যীশু হবো ।
বুদ্ধ,বুদ্ধ আমি অনির্বাণ গৌতম বুদ্ধ হবো
।
এই জপমন্ত্র হবে হৃদপিণ্ডের অপূর্ব তাবিজ:
'বুদ্ধম শরণম গচ্ছামি'
সমর্পিত হবো সর্বোত্তম বুদ্ধিমত্তার কাছে।
বুঝবো কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায়
'সংঘম শরণম গচ্ছামি '
সমাজের কাছে সমর্পন করবো আপন সত্ত্বা।
নিজ সুখ বিসর্জনে তুলে নেবো যন্ত্রণার কাঁটা।
'ধম্মম শরণম গচ্ছামি'
একমাত্র ধর্ম :
মানুষ হবো শুধুই মানুষ।
এই ত্রিবেণী বাণী নিয়ে
চলবো অন্তহীন আকাশলোকে।
আমি অমৃত লালন হবো;
আচানক পাগল হবো ।
নিজেকে চিনবো;
তারপর অচেনাকে ।
আমি অন্তর্লোকের অবিনশ্বর রবীন্দ্রনাথ হবো ।
অস্থির অজগর গিলে খাচ্ছে সভ্যতা ।
নষ্ট পোকামাকড়, ভ্রষ্ট সময়
কুরে খাচ্ছে প্রযুক্তির মগজ ।
পুড়ছে শহর,নগর,বন্দর ।
সুন্দরী পৃথিবীর বন্ধনির হুক ছিঁড়ে ফেলে
উত্তেজিত সূর্যপুরুষ ;
শাড়ীর আঁচল পোড়ায় নির্লজ্জ রোদ্দুরে ।
খামচে ধরে নাকের নোলক,
উমুক্ত প্রাঙ্গনে বস্ত্রহরণ করে,
এরপর দাবানল ধর্ষণ এবং উন্মাদ নৃত্য ।
সত্যের লেবাস এঁটে ধর্মের উগ্র মাস্তানরা
রক্তপতাকা উড়ায় ঝুলন্ত আকাশে।
রাতের সুনসান শান্ত অন্ধকার কাঁদে
নিরব যন্ত্রণায়।
কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম,
সাগর,নদী,পাহাড়,
মানবিক মানব এবং প্রকৃতি ।
তাই আমি নিশ্চয়ই ভবের পাগল হবো ;
লালন হবো ।
অমিয় যীশু হবো
অবশ্যই,অবশ্যই রবি রবীন্দ্রনাথ,
জ্ঞানতাপস গৌতম বুদ্ধ হবো ।
আমি প্রস্তুত;
প্রস্তুত এক নুতন অলৌকিক যাত্রায় ।
শ্মশানের গনগনে আগুনে
পুড়িয়েছি দীর্ঘ অতীত ।
ছাই ভস্ম সব ডুবিয়েছি গঙ্গায় ।
উপড়ে ফেলেছি ভবিষৎ ;
ভাসিয়েছি ভেলা নিরুদ্দেশ যাত্রায় ।
এখন বর্তমানের এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে
অনুভব করি
আমার আমির ভেতর ঈশ্বর ,
আরাধ্য প্রকৃতি,তুমি,তোমরা ;
সবাই বিশ্ব আমির মধ্যে একাকার।
আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা;
তার প্রতিটি রক্তাভ প্রকোষ্ঠে লেখা আছে
আমার গুরুর মন্ত্রবাণী;
নানা তারে বাজে,
নানা মূর্ছনায়,
নানা রাগে বাঁধা :
" আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও ।
আপনাকে এই লুকিয়ে রাখা
ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও
যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে
আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে
এই অরুণ আলোর সোনার কাঠি ছুঁইয়ে দাও ।
বিশ্বহৃদয় হতে ধাওয়া
আলোয় পাগল প্রভাত হাওয়া,
সেই হাওয়াতে হৃদয় আমার নুইয়ে দাও "
আমি অন্তর্লোকের অন্তর্যামী রবীন্দ্রনাথের
এই অমৃত বাণীর দ্রাক্ষারস
ঢেলে দেব ঈর্ষার উত্তাপে।
যুদ্ধের আয়োজনে দেব
হিমশীতল চিকিৎসা জল ।
আমি শক্তি সঞ্চয় করবো ;
সেই জ্ঞান বৃক্ষ
অনির্বান গৌতম বুদ্ধের কাছে।
নেভাবো সকল ক্রুদ্ধ আগুনের লেলীহান শিখা।
আমার নীল ধমনীর প্রতিটি রক্তকণায়,
যখন নিমগ্ন প্রার্থনা;
তখন দেহের কোনো ভার নাই
বুকের কোনো ব্যাথা নাই
বাতাসে ভাসছি আমি
বাহিরে ঝড় ভেতরে শান্ত নদী
চলে নিরবধি।
জল পড়ে পাতা নড়ে
জল তরঙ্গ বাজে
টুং টাং টাং
টুং টাং
আরাধ্য আরাধনায় আমি তখন
অবিনশ্বর ঈশ্বর ।
পাঠ করি আমার গহন গহীনে
“বুদ্ধম শরণম গচ্ছামি”
“ধম্মম শরণম গচ্ছামি”
“সংঘম শরণম গচ্ছামি”
“বুদ্ধম শরণম গচ্ছামি”
“ধম্মম শরণম গচ্ছামি”
“সংঘম শরণম গচ্ছামি”
“বুদ্ধম শরণম গচ্ছামি”
“ধম্মম শরণম গচ্ছামি”
“সংঘম শরণম গচ্ছামি”
সূচনা কাল :
২৩ মার্চ ২০১৭
সকাল ৮ টা
প্রকাশ কাল : রাত ১ টা ,৬ এপ্রিল ২০১৭
টরন্টো
http://www.alokrekha.com
আলোকরেখাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দারুন !বাক রুদ্ধ ! নয়ন মুগ্ধ !নতুন বিপ্লব কবিতা আবৃতি জগতে। বিস্তীর্ণ বনভূম--অধ্যাত্মবাদ ও যোগ সাধনের উদ্ভাস। এতো সহজ নয় ! এই পরিবেশনা দেখা ও কবিতাটা পড়ার সুযোগ করে দেবার জন্য। অনেক শুভ কামনা- কবি মেহরাব রহমান !
ReplyDeleteএমন দুর্লভ পরিবেশনা পরিকল্পনা নৃত্য ও চিত্রায়ন প্রকাশ করার জন্য আলকরেখা ধন্যবাদের উপরে। এ কবিতা অধ্যাত্মবাদ ও যোগ সাধনের কবিতা। । কবি মেহরাব রহমান আপনি একজন উচ্চ মার্গের কবিই শুধু নন। একজন বাহুমুখি প্রতিভার মানুস। কি করে এমন কবিতা লিখলেন। অনেক শুভ কামনা কবি মেহরাব রাহমান আবারও আলোকরেখাকে ধন্যবাদ এই কবিতাটা জন্য।
ReplyDeleteআসলেও তিনি শুধু একজন মাধ্যম হিসেবে কাজ করেন, তাঁকে করিয়ে নেয়া হয়- তিনি শুধু একজন করণিক !কি আধ্যাত্মিকতা আর গভীরতা। দারুণ এই বয়সে এত পরিণত কবিতা । মেহরাব রহমান আমার বরাবরই খুব প্রিয়। আমি তার প্রকাশিত সব কবিতা পড়েছি। তবে এই পরিবেশনা অসাধারন অনন্য। মেহরাব রহমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ।
ReplyDeleteটরন্টো বাংলা বইমেলা ২০১৭,পরিবেশিত নৃত্যকাব্য "কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম" যার নৃত্য পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন অরুণা হায়দার।এবং সামগ্রিক পরিকল্পনা ও
ReplyDeleteআবৃত্তি করেছেন মেহরাব রহমান। এটা দেখার আমাদের সৌভাগ্য হত না ১০ হাজার মাইল দূর থেকে।আলকরেখার বদৌলতে দেখতে পেলাম। দারুন পরিবেশনা। কবি মেহরাব রহমান অনন্য প্রশংসার অপেক্ষা রাখে না। এক কথায় অসাধারন!
আলকরেখা আমার একান্ত প্রিয় কবি মেহরাব রাহমানকে যেন আমাদের সাথে নুতুন রূপে পরিচয় করিয়ে দিল। তাঁর এই অনবদ্য কবিতা "কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম " পড়ার একটা চমৎকার ভালোলাগা ও অনন্য বটেই এখন কবি রুপকার যে রুপে রূপায়িত করেছেন তার প্রশংসা করার ভাষা নেই।
ReplyDeleteআলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ এমন একটি অসাধারন লেখা অ ভিডিও প্রকাশ করার জন্য।কবি মেহরাব রহমানের কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম" কবিতাটা আলকরেখায় পড়েছি। অনবদ্য কবিতা !কি আধ্যাত্মিকতা আর গভীরতা। দারুণ পরিণত ভাব বোধের কবিতা। কিন্তু অরুণা হায়দার নৃত্য পরিচালনায় ও মেহরাব রহমানের আবৃত্তি সামগ্রিক পরিকল্পনায় যে ছায়াচিত্র নির্মাণ করেছেন তা এই কবিতার মূল ভাবকে আরও বোধগম্য ও অনন্যতা দান করেছেন।অভিনন্দন কবি।
ReplyDeleteকাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম --এই অপূর্ব জপমন্ত্র 'বুদ্ধম শরণম গচ্ছামি''সংঘম শরণম গচ্ছামি''ধম্মম শরণম গচ্ছামি' আমাদের মানব কুলের মন্ত্র -অনেক শুভ কামনা কবি মেহরাব রাহমান আর আলোকরেখাকে ধন্যবাদ এই অনবদ্য পরিবেশনার জন্য। কবি আপনি অনেক ভাল থাকুন এই প্রার্থনা করি।
ReplyDeleteআলোকরেখা'য় প্রকাশিত লেখা,কবিতা বা সাহিত্যে গুনগত মানে অনন্য, অপ্রতিম ও ব্যতিক্রম।সে জন্য আলক্রেখার প্রশংশা প্রাপ্য।তবে যারা লেখেন তাদের কারনেই আলক রেখার এই জনপ্রিয়তা। তার প্রমান আমার প্রিয় কবি মেহরাব রাহমান-তাঁর "কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম" অনবদ্য কবিতার পরিবেশনা !কি আধ্যাত্মিকতা আর জীবনের গভীরতা।
ReplyDeleteমন্তব্য করার ভাষা নেই কবি মেহরাব রহমান। কি করে অধ্যাত্মবাদ ও যোগ সাধনের অভিব্যক্তি দিয়ে অসাধারন এমন কবিতা লিখলেন ও অসাধারন পরিবেশনা। এতো সহজ নয়! অনেক শুভ কামনা আর আলোকরেখাকে ধন্যবাদ তোমার এই কবিতাটা পড়ার ও দেখার সুযোগ করে দেবার জন্য।
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের "কাঁদে বিস্তীর্ণ বনভূম" নৃত্যকাব্য ও আবৃত্তি দেখে আমি অভিভূত। আত্ম শুদ্ধি ও যোগী সন্ন্যাসীর একাত্মতার সাথে মিশ্রিত এক অনুভূতি দিয়ে তৈরি অসাধারন প্রয়াস। কবিকে শতশ্রদ্ধ প্রণাম। আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ।অনেক শুভ কামনা ।
ReplyDeleteআমি কৃতজ্ঞ আলোকরেখার কাছে
ReplyDeleteআমি কৃতজ্ঞ আমার বোদ্ধা পাঠকদের কাছে যারা ভালোলাগার কথাটুকু অকৃপণভাবে জানিয়েছেন
আমিতো ক্ষুদ্র মাধ্যম মাত্র
অবিনশ্বর যিনি আমাকে এ বাণী দিয়েছেন তা অনেক উচ্চমার্গের
আমি কবিতার বিস্তর কৌশল এবং ছন্দ ও ভাষা তৈরী করে তার প্রকাশ ঘটিয়েছি সেখানে আমার সামান্য অর্জন
যাঁরা এই কবিতার ভাব বুঝতে পেরেছেন আমি মনে করি তাঁদের মেধা ও মনন আমার চেয়েও অনেক উপরে