ওগো বাঁশিওয়ালা-তুমি বাজাও
তোমার ইচ্ছে মত খেয়াল খুশিতে বেহাগ ভৈরবী ইমন রাগে তোমায়
যে বলব “ওগো বাঁশিওয়ালা বাজাও তোমার বাঁশি,শুনি আমার নূতন নাম” সে সাধ্য
আমার কই হয়তো মনে আছে তুমি তোমার প্রেমের মূর্তি গড়েছিলে আমার মাঝে।
অথচ পুরো সময় দাওনি রেখেছ আধাআধি করে কোন মতে।তাইতো মিল হয়নি ব্যথায় ও প্রেমে,মিল হয়নি ভালোবাসা ও ইচ্ছেয় পার করে দাওনি পারানি নৌকোয়। চলা আটক করে রেখেছ কালস্রোতের পারে- বালুডাঙায়।
সেখান থেকে দেখি প্রখর আলোয় ঝাপসা দূরের জগৎ।অকারণে কাঙাল মন অধীর হয়ে ওঠে।দুই হাত বাড়িয়েও নাগাল পাই না কিছুই-কোন দিকে।বেলা তো কাটে না,বসে থাকি জোয়ার-জলের দিকে চেয়ে ভেসে যায় মুক্তিপারের খেয়া ধনপতির ডিঙা বেলার আলো-ছায়ায়।দক্ষিণ হাওয়ার নব যৌবনের ভাটিয়ারি শুনতে শুনতে নিজেকে মনে হয়-পাহাড়তলীর ঝিরঝিরে নদী।ডানা দাওনি তুমি বাঁশি- ওয়ালা।শুধু তোমার গান দিয়েছে আমার স্বপ্নে-ঝোড়ো আকাশে উড়ো প্রাণের পাগলামি।অশান্ত দেহ মনে শান্ত হয়ে কাজ করা যে বড়ই দায়।শাশুড়ি নোনোদিনী বলে‘বাউলি বাউ"।তারা দেখে আমার ইচ্ছের-জোর।দুরন্ত ঠেলায় নিষেধের পাহারা কাত করে ফেলি এমন বুকের কঠিন পাটা আমার।মন নেই সংসারে,পাটরাণীর লোভের ঝাপট নেই,ধূলোয় লুটোই মাথা।ভালোবাসতে জানি,কাঁদতে শুধু জানি,জানিএলিয়ে পড়তে তোমার পায়ে।অথচ পুরো সময় দাওনি রেখেছ আধাআধি করে কোন মতে।তাইতো মিল হয়নি ব্যথায় ও প্রেমে,মিল হয়নি ভালোবাসা ও ইচ্ছেয় পার করে দাওনি পারানি নৌকোয়। চলা আটক করে রেখেছ কালস্রোতের পারে- বালুডাঙায়।
বাঁশিওয়ালা!যখন বেজে ওঠে তোমার বাঁশি আপন গরিমায় উপরে উঠে আমার মাথা।তখন কুয়াশার পর্দা ছেঁড়া তরুণ সূর্যে প্রাইভেট হয় আমার জীবন।আগুনের ডানা মেলে দেয় আমার বারণ-না-মানার অনুসৃত সাধনা।জানিনে,ঠিক জায়গাটি কোথায়?চিনবো কেমন করে ঠিক সময় কখন?শুধু কেবল উন্মত্ত অস্থির চিত্ত দোসর হারা আষাঢ়ের ঝিল্লিঝণক রাত্রে আমি সেই নারী ছায়া রূপে যাই তোমার অভিসারে চোখ এড়ানো পথে।সেই অজানাকে কত বসন্তে পরিয়েছ ছন্দের মালা।শুকোবে না তার ফুল।তোমার ডাক শুনে একদিন ঘরপোষা নির্জীব বধূ অন্ধকার কোণ থেকে বেরিয়ে এল ঘোমটা খসা প্রিয়া।যেন সে হঠাৎ-গাওয়া নতুন ছন্দ বাল্মীকির চমক লাগা গানের আসন।তোমায় লেখা চিঠি রাগিনী আবছায়ায় বসে- যদিবা জানি না না তার ঠিকানা।
ওগো বাঁশিওয়ালা!তোমার বাঁশির সুরের নাম জানি নে।কেবল সে সুর জাগায় মনেম ব্যাকুল ব্যথা।বুঝি বাজাও পঞ্চম রাগে?বুকে হঠাৎ ওঠে ঘনিয়ে শ্রাবণের বাদলরাত্রি।এমন-সময় বাজে তোমার বাঁশি ভরা জীবনের সুরে,মরা দিনের নাড়ীর মধ্যে দব্দবিয়ে ফিরে আসে প্রাণের বেগ।আমার রক্তে নিয়ে আসে তোমার সুর ঝড়ের ডাক,বন্যার ডাক আগুনের ডাক,পাঁজরের-উপরে-আছাড়-খাওয়া মরণ সাগরের ডাক,ঘরের-শিকল-নাড়া উদাসী হাওয়ার ডাক।যেন হাঁক দিয়ে আসে অপূর্ণের সংকীর্ণ খাদে পূর্ণ স্রোতের ডাকাতি-ছিনিয়ে নেবে,ভাসিয়ে দেবে বুঝি। অঙ্গে অঙ্গে পাক দিয়ে ওঠে কী বাজাও তুমি, ওগো আমার রাজন-যে তোমার বাঁশি বাজালে পরান-মাঝে।তার মন্ত্র যে লাগল প্রাণে মোহন গানে।হায়!বিকশি উঠল হিয়া নবীন সাজে ওগো কেশর রাজা।তোমার রঙে দিলে তুমি রাঙিয়ে আঙিয়া। তোমার মালা দিলে গলে খেলার ছলে হায়-তোমার সুরে সুরে বাজে প্রাণ-বীণা প্রতিদিন।
হে জীবনস্বামী!দাঁড়াব তোমরই সন্মুখে-করি জোড়কর,হে প্রিয়তম!দাঁড়াব তোমার অপার আকাশের তলে বিজনে বিরলে।
হে জীবনস্বামী!দাঁড়াব তোমরই সন্মুখে-করি জোড়কর,হে প্রিয়তম!দাঁড়াব তোমার অপার আকাশের তলে বিজনে বিরলে।
নম্র হৃদয়ে নয়নের জলে দাঁড়াব তোমারই সমীপে বিচিত্র এ ভবসংসারে কর্ম পারাবার ফেলে ভুবন- লোকের মাঝারে দাঁড়াব তোমারই সন্মুখে।তোমার এ ভবের কর্ম যবে সমাপন হবে।একাকী নীরবে দাঁড়াব নিবিড়ভাবে।কাঁখের ঘড়া যায় যদি যাক ভেঙেচুরে-যাক না।অঞ্জলি মোর বাঁকা হাসির প্রসাদ দিয়ে দিও ।সহজ সুখের সুধা তার মূল্য তো নাই,ছড়াছড়ি যায় সে-যে ওই যেখানে চাই-বড়ো-আপন কাছের জিনিস রইল দূরে-।বারে বারে চাইব না আর মিথ্যা টানে ভাঙন-ধরা আঁধার-করা পিছন-পানে।বাসা বাঁধার বাঁধন খানা যাক-না টুটে অবাধ পথের শূন্যে আমি চলব ছুটে।
ওগো রাজন!শূন্য-ভরা তোমার বাঁশির সুরে সুরে হৃদয় আমার সহজ সুধায় দাও-না পূরে ।
ওগো রাজন!শূন্য-ভরা তোমার বাঁশির সুরে সুরে হৃদয় আমার সহজ সুধায় দাও-না পূরে ।
বিষ্ণুপ্ৰিয়া দাসী
http://www.alokrekha.com
প্রেমের কি অভিব্যক্তি কি আকুতি বিষু প্রিয়া তোমাকে অনেক কিছু বলার নেই! এ যেন শ্যাম প্রিয়ার হৃদয়ের আকিন্চন ! সত্যি অর্পূর্ব তোমার ভাষা ও শব্দের বিন্যাস! খুব ভালো লাগলো পড়ে ! আনেক শুভ কামনা!
ReplyDeleteসত্যি কি যে অনবদ্য লেগেছে বিষ্ণুপ্রিয়ার লেখাটা ! বাধার বিরহে গাঁথা আর মুবলীধ্বনের নিঠুর লীলা তুলে এ লেখাকে অন্যমাত্রা দান করেছে ! আলোকরেখা সর্বদা মাণন্নত লেখা দিয়ে পাঠকদের আকর্ষিত করে!
ReplyDeleteখুবই সুন্দর লেখা।প্রতিটি শব্দ কথা মালা-রাধার বিরহ নিয়ে অনেক গান অনেক লেখা আছে। যা আপন গুনে মহিমান্বিত অনেক বিশাল কাব্য সাহিত্য।আমার মতে বিষ্ণুপ্রিয়ার এই লেখাটাও বিশিষ্ট সাহিত্য মানে উন্নত।মল্লিকা গুপ্ত
ReplyDeleteআলোকরেখায় আমরা প্রায়ই চমক পাই!বিষ্ণুপ্রিয়ার এই লেখাটাও আরেকটি চমক।অতীব সুন্দর লেখা।প্রতিটি শব্দ অতি সুনিপুন ভাবে গ্রথিত যা শ্রী রাধিকার বিরহ বয়ান করে সাথে কৃষ্ণের বাঁশির জ্বালা । সাহিত্য গুনে সমুচ্চ ও ঐশ্বর্যময়।
ReplyDeleteবিমহিত।হ্যা আলোকরেখা'র কঠিন সমালোচনা করি কারন পড়ার ব্যপারে আমি বেশ খুতখুতে । প্যানপ্যেনে ভালবাসার কথা ঠিক প্রানে ধরে না। বিষ্ণুপ্ৰিয়া দাসী'র "ওগো বাঁশিওয়ালা"-তুমি বাজাও তোমার ইচ্ছে মত খেয়াল খুশিতে - সেই প্যানপেনে নেই!আছে বলিষ্ঠ শব্দে ভালবাশার সংজ্ঞা বিষ্ণুপ্রিয়ার এই লেখাটাও আরেকটি চমক।অতীব সুন্দর লেখা।প্রতিটি শব্দ অতি সুনিপুন ভাবে গ্রথিত যা শ্রী রাধিকার বিরহ বয়ান করে সাথে কৃষ্ণের বাঁশির জ্বালা । সাহিত্য গুনে সমুচ্চ ও ঐশ্বর্যময়।
ReplyDeleteসেই অনাদি কাল থেকে মেয়েদের এই প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি কথা জীবনের বাস্তবতা। আমরা শুধু কাঁদতে জানি পায়ে পড়তে জানি। ভালো লাগলো না লেখাটা পড়ে। নিজের জীবনের সাথে মেলালাম আমার আর আদিকালের রাধার কোন পার্থক্য নেই। কিতন্তু বিষ্ণুপ্রিয়ার লেখাটা সাহিত্য গুন্ বিচারে অনেক ম্যান সম্মত।
ReplyDeleteসেই অনাদি কাল থেকে মেয়েদের এই প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি কথা জীবনের বাস্তবতা। আমরা শুধু কাঁদতে জানি পায়ে পড়তে জানি।আপনার ভালো লাগলো না লেখাটা পড়ে। নিজের জীবনের সাথে মেলালেন আর আদিকালের রাধার সাথে কোন পার্থক্য নেই সবই বুঝলুম। কিতন্তু এ মর্ম জ্বালা কেবল যে মজেছে সেই জানে বিষ্ণুপ্রিয়া লেখাটা'র জন্য অনেক ভালবাসা আর ধন্যবাদ ! ভালো থেকে ভাই ! অরুন্ধতী গাঙ্গুলি
Deleteলেখাটা পড়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি রাধিকার কষ্ট অনুভব করে । অনেক অনেক ভালো লিখেছো বিষ্ণুপ্রিয়া। এটাই ভালো হবে যদি বনমালী পরজনমে রাধা হয়ে জন্মায় !
ReplyDeleteখুব ভাল লাগলো লেখাটা ।ছরির সাথে সমন্বয়ে রাধার অন্তরের ব্যথা দারুন সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন বিষ্ণুপ্রিয়া।আমার রাধা কৃষ্ণের প্রেম কাহিনী খুব প্রিয়। সে রাষ্ লীলা বিরহ বা নৌকা বিলাস হোক না কেন। এর মাঝে সত্যি প্রেমের এক ধারা সূচিত হয়েছে। অনেক ভালো বাসা লেখিকা বিষ্ণুপ্রিয়ার জন্য।
ReplyDeleteবাঁশিওয়ালা-বাজায় বাঁশি ইচ্ছে মত খেয়াল খুশিতে।প্রেমের মূর্তি গড়ে ।আধাআধি করে কোন মতে
ReplyDeleteপার করেনি পারানি নৌকোয়।আটক করে রেখেছে চলা কালস্রোতের পারে- বালুডাঙায়।তারপর পাগল মন ! "হায় রে কানু হারামজাদা"- গানটা অতীব সত্য
সানজিদা রুমিকে ধন্যবাদ
ReplyDeleteএই লেখাটাও আরেকটি চমক। সুন্দর প্রবন্ধ।সব শব্দ অতি সুনিপুন ভাবে গ্রথিত যা শ্রী রাধিকার বিরহ বয়ান করে সাথে কৃষ্ণের বাঁশির জ্বালা । সাহিত্য গুনে সমুচ্চ ও ঐশ্বর্যময়।”
প্রতিটি কথা বাস্তবতা। আমরা শুধু কাঁদতে জানি পায়ে লুটাতে জানি।আপনার ভালো লাগলো না লেখাটা পড়ে। নিজের জীবনের সাথে মেলালেন আর আদিকালের রাধার সাথে কোন পার্থক্য নেই সবই বুঝলুম। কিতন্তু এ মর্ম জ্বালা কেবল যে মজেছে সেই জানে বিষ্ণুপ্রিয়া লেখাটা'র জন্য অনেক ধন্যবাদ ! সুবেছা রইলো
ReplyDeleteওগো বাঁশিওয়ালা বাজাও তোমার বেশি :
ReplyDeleteচমৎকার প্রবন্ধ। অনেকবার পড়লাম।
সানজিদা রুমিকে অভিনন্দন। আরো সুন্দর লেখার অপেক্ষায় রইলাম
ওগো বাঁশিওয়ালা বাজাও তোমার বাঁশি। সানজিদা রুমি ,কি করে লেখেন এমন অপরূপ প্রবন্ধ ? অনেক ধন্যবাদ
ReplyDeleteওগো বাঁশিওয়ালা বাজাও তোমার বাঁশি। ওগো বাঁশিওয়ালা বাজাও তোমার বাঁশি। সানজিদা রুমি ,কি করে লেখেন এমন সুন্দর লেখা ? আগামী লেখার অপেক্ষেয় থাকবো। অনেক শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন
ReplyDelete
ReplyDeleteওগো বাঁশিওয়ালা!তোমার বাঁশির সুরের নাম জানি নে।কেবল সে সুর জাগায় মনেম ব্যাকুল ব্যথা।বুঝি বাজাও পঞ্চম রাগে?বুকে হঠাৎ ওঠে ঘনিয়ে শ্রাবণের বাদলরাত্রি।এমন-সময় বাজে তোমার বাঁশি ভরা জীবনের সুরে,মরা দিনের নাড়ীর মধ্যে দব্দবিয়ে ফিরে আসে প্রাণের বেগ।আমার রক্তে নিয়ে আসে তোমার সুর ঝড়ের ডাক,বন্যার ডাক আগুনের ডাক,পাঁজরের-উপরে-আছাড়-খাওয়া মরণ সাগরের ডাক,ঘরের-শিকল-নাড়া উদাসী হাওয়ার ডাক।যেন হাঁক দিয়ে আসে অপূর্ণের সংকীর্ণ খাদে পূর্ণ স্রোতের ডাকাতি-ছিনিয়ে নেবে,ভাসিয়ে দেবে বুঝি। অঙ্গে অঙ্গে পাক দিয়ে ওঠে কী বাজাও তুমি, ওগো আমার রাজন-যে তোমার বাঁশি বাজালে পরান-মাঝে।তার মন্ত্র যে লাগল প্রাণে মোহন গানে।
মাইরি লিখেছো বটে. সানজিদা তোমায় হাজার প্রণাম
প্রেমের কি অভিব্যক্তি কি আকুতি বিষু প্রিয়া তোমাকে অনেক কিছু বলার নেই! এ যেন শ্যাম প্রিয়ার হৃদয়ের আকিন্চন ! সত্যি অর্পূর্ব তোমার ভাষা ও শব্দের বিন্যাস! খুব ভালো লাগলো পড়ে ! আনেক শুভ
ReplyDelete