সঞ্চিতা বুঝে উঠতে পারে না কখন যে কি করবে? ওর মেজাজটা এখন তুঙ্গে। নিজের পরেই সে ভীষণ বিরক্ত। অথচ ওর স্বভাবজাত হাসি মুখ দেখে কি বোঝার কোন উপায় আছে? নিজের মনে বক -বক
করতে করতে শিল্পী ও অতিথিদের বসার স্থানটা জায়গাটা গুছিয়ে নেয়।সবকিছু হতে হবে সূক্ষ্ম নিখুঁত-ঠিকঠিক। মেয়ে বলে--"কুকি কাটার"। আর স্বামী শাফকাতের কাছে বাড়াবাড়ি।
তবুও এই খুঁতখুঁতে স্বভাবটা কিছুতেই ছাড়তে পারেনা সঞ্চিতা। মঞ্চটা গদি-কমফোর্টার ও দেশ থেকে আনা নকশী কাঁথা দিয়ে নিজ হাতে তৈরী করেছে।পশ্চাৎপট রেশমের সাদা কাপড়ে ওপরে লাল রঙ-তুলি দিয়ে লিখছে রবিঠাকুরের--গান "আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও--আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও"। আরেক পাশে সোলা কেটে লিখেছে--"এসো হে বৈশাখ" পুরো গানটা। এই সোলা কাটতে যেয়ে কতবার যে এ্যন্টিকাটার দিয়ে হাত কেটেছে তার ইয়াত্তা নেই। তাতে অবশ্য সঞ্চিতার কোন ব্যথা বা কষ্ট হয় না। দেখতে সুন্দর হয়েছে এতেই সে তৃপ্ত। আর ব্যথা সহ্য করার ক্ষেত্র ওর জুড়ি মেলা ভার। এতসব কিছু না করলেও চলে। কিন্তু এটা এক ধরণের বাতিক। কোন আচার--বিধি পালনে সঞ্চিতার কোন সমঝোতা নাই। কত যে বকা খেয়েছে শাশুড়ি আর স্বামীর কাছে। এখন বকে বাচ্চারা। ওই একি কথা শুনতে শুনতে ওর কান পাকার উপক্রম। "সব কিছুতেই বেশি বেশি"-"ইউ আর সো এক্সট্রা"-" ইউ আর টু মাচ"---তাতে ওর অবশ্য কিছুই আসে যায় না। দেখতে সুন্দর ও অনুষ্ঠান প্রযোজ্য হলেই হল। ল্যাম্পটেবিলে রাখা ঘড়ির দিকে চোখ রাখে সঞ্চিতা।ওমা!সময় যে একেবারেই নেই।কবিতা-গানগুলো একটু ঝালিয়ে নেবে ভেবেছিলো। যাকগে! সময় নেই! ভালোই ভালোই সব মিটে গেলেই হল।সাউন্ড-সিস্টেম,ডালাকুলা,বাদ্যন্ত্র সব ঠিক ঠাক আছে কিনা দেখে নেয় শেষ বারের মত।হায় ঈশ্বর! কারো কোনদিকে খেয়াল নেই ! সবাই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত! বাঁয়াটাও ঠিক মত বাঁ দিকে রাখতে পারে না। ছেলের ওপর মনে মনে রাগে গজরাতে থাকে। তখনই মেয়ে হঠাৎ বাইরে থেকে এসে বললো-------করতে করতে শিল্পী ও অতিথিদের বসার স্থানটা জায়গাটা গুছিয়ে নেয়।সবকিছু হতে হবে সূক্ষ্ম নিখুঁত-ঠিকঠিক। মেয়ে বলে--"কুকি কাটার"। আর স্বামী শাফকাতের কাছে বাড়াবাড়ি।
--মা বাইরের আলপনাটার ফিনিসিং হয় নি -ভালো দেখাচ্চে না। “ওড” লাগছে --
এতক্ষনে সুরঞ্জনা মুখ খোলে।
--দে-না-মা-শ্রেষ্ঠা! একটু আলপনাটা শেষ করে-আমার হাতে এখনো অনেক কাজ বাকি। ডাইনিং টেবিলটা আবার একটু ঠিক ঠাক করে সাজাতে হবে -তোর বাপি কষ্ট করে খৈ-মুড়কি -বাতাসা দেশ থেকে এনেছে। ওগুলো ছোট ছোট ধামায় সাজানো বাকি। আমার রেডি হতে হবে ! প্লিস সোনা ! ----
---seriously? তুমি পারোও মা ! -only me and me ! উফ! You are too
much!
চোখ দুটো ভুরুতে উঠিয়ে কাঁধ ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে দুম-দুম করে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যায়ে শ্রেষ্ঠা।সঞ্চিতার এবার সত্যিই বুঝি মাথা খারাপ হয়ে যাবে। ওপর দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করে! আজ যেন ওর মান থাকে অথিতিদের সামনে। এরই মধ্যে হঠাৎ দেওয়ালে টাঙানো ছবিটা ধুম করে পড়ে গেলো। এদেশের এই আরেকটা সমস্যা-হালকা কাঠের দেওয়াল-এ কিছু ভারী টাঙানোই দায়। মড়ার উপর খাড়ার ঘা! ভাগ্য ভাল কাঁচটা ভাঙে নি। সুরঞ্জনার বড় ছেলে অভিক ওপর থেকে জিজ্ঞেস করে -----
--তুমি ঠিক আছো তো মা?
--আমি ঠিক আছি । একটু নিচে আয় না বাবা !-ছবিটা পড়ে গেছে একটু লাগিয়ে দিয়ে যা না বাবা---
এই বলেই সঞ্চিতা বাইরে যায় আলপনাটায় শেষ তুলির আঁচড় দিতে। টরোন্টোতে বেশ আগেই স্প্রিঙ এসেছে এবার। এপ্রিলের মাসের ১৫ তারিখ অথচ ঠান্ডা নেই। শুধু একটা টি-শার্ট গায়েই কাজ করছে বাইরে।অবশ্য কানাডার আবহাওয়ার কোন ঠিক নেই। এদেশে একটা জনপ্রিয় কথন প্রচলিত আছে যে, এখানে তিনটি w-এর কোন ভরসা নেই।"weather-wife-work"।
একেবারেই ঠাণ্ডা নেই বরং মিষ্টি সুন্দর মৃদু বাতাস ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে।মুহূর্তে সঞ্চিতা ফিরে যায় কলেজ জীবনের সেই সময়ে। পুরনো ঢাকা থেকে কলেজে যাওয়ার সময়-রমনা পার্ক পেরিয়ে রিক্সা পিজি--হাসপাতাল থেকে বাঁয়ে মোড় নিয়ে চারু কলার সামনে আসতেই-একটা দখিনা দমকা হাওয়া ছুঁয়ে যেত।কি মিষ্টি একটা গন্ধ দেহ মন পুলকে ভরিয়ে দিত। সঞ্চিতা সেই সৌরভে ভাসতে ভাসতে নিমিষেই পেরিয়ে যায় দশ হাজার মাইল।
কলেজ চত্বর। ঢুকতেই গেটে দারোয়ান দাদুর সেই মিষ্টি হাসিতে অভ্যর্থনা। দুলা'ভাইয়ের মজাদার চটপটি কেন্টিনের সমুসা-চা-সিঙ্গারা। শহীদ-মিনারের বেদীতে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা। অকারণ হাসিতে গড়াগড়ি। ক্লাসঘর, ল্যাবের ঝাঁঝাল গন্ধ,বন্ধুদের হয়ে প্রক্সি দেওয়া সাংকৃতিক সপ্তাহ ও নৃত্যনাট্যের রিহারসেল।কখনো বা দুরন্ত হরিণের বেগে দাওয়া-আরার কখনো উদাস নয়নে আকাশ পানে চেয়ে ফরিদের জন্য অপেক্ষা করা। আচ্ছা! ও কি আর আমার কথা ভাবে ? ও কি আমার কথা বলেছে ওর বৌকে? সামান্য একটা ভুল বঝাবুঝি সবকিছু কেমন এলোমেলো করে দিল।পৃথিবীর দুই প্রান্তে আজ দুজনে! সব স্মৃতিুগুলো যেন আলপনার এক একটা রঙ। সুরঞ্জনা ফেলে আসা স্মৃতি-অসময়ের এই মৃদুমন্দ মিষ্টি বাতাস ও আলপনার কারুকার্যে বিলিন হয়ে যায়। হঠাৎ সম্বিত ফেরে এক অ-সুরো স্বরে----
--কি হল কোথায় গেলে? কোন গর্তে যে ঢোকে হাজার ডাকলে যদি পাওয়া যায়-একটু পরেই গেষ্ট চলে--আসবে -আমার পাঞ্জাবী পায়জামা কোথায়? সারাদিন যে কি করে এই -মেয়েমানুষটা -গুড ফর নাথিং---- সুরঞ্জনা পড়ি মরি করে এক প্রকার দৌড়েই আসে।
--তোমার কি কোনদিন আক্কেল হবে না? এতক্ষন ধরে চেচাচ্ছি শুনতে পাও নি? নাকি শুনতে না পাওয়ার অভিনয় করছিলে? তুমিতো আবার থেটার করা মেয়ে-------
এই থিয়েটার শব্দকে কে ব্যঙ্গ করে "থেটার" বললে আজো সঞ্চিতার বুকে বড্ড বাজে। থিয়েটার যে ওর কাছে উপাসনালয়। সেই বিয়ে হওয়া থেকে আজ অব্দি এই কথাটা প্রজন্ম ভেদে শুনে আসছে।আগে শ্বাশুড়ী বলতো ! এখন স্বামী বলে !এরপর হয়তো বাচ্চারাও বলবে।
--না--আসলে-আমি--বাইরে আলপোনা -আমি--কাজ-- করছিলাম ---সুরঞ্জনা ইতস্তত করে।
--থাক! আমাকে আর কাজ দেখতে হবে না। I know you in and out-- যতসব এক্টিং---
-- আমিতো তোমার পাঞ্জাবি--পায়জামা ইস্তিরি করে বিছানার ওপরেই রেখে এসেছি। তুমি দেখো নি ?
--ঠিক আছে -ঠিক আছে। সওয়াল কোনটা পরব? সেটা কি ঠিক করে রেখেছো? নাকি আমাকে নিচে এসে দেখতে হবে- ম্যাডাম একটু বলে দেবেন কোনটা পরবো?
---না আমি তোমার সবকিছই স্যান্ডেল সহ ঠিক করে রেখে এসেছি। সঞ্চিতা উত্তর দেয় স্তমিত স্বরে।
--কিছু যদি সময়মত পাওয়া যায়-বলতে বলতে বেড রুমের দিকে যায়--কিছুক্ষণের জন্য স্তম্ভিতর মত শাফকাতের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে -চুপচাপ একা।
বাড়ির ভেতর থেকে পুন্যি পুকুর নাটকের গান ভেসে আসে"-"কলা পাতা মোড়া ছায়া রোদ্দুর উঠোন-এর কোণে ছড়ান সুদূর !এই মেঘ আসে সরে যায় উঠোনের কোন এক বসে ঠাঁয় কি দেখে পুন্য পুকুর? পুতুল মেয়েটি'র সামনে মুকুর। জানি কি আঁধার- কি জানি আলো ? দুটি পুতুলের সংসার-কালো।কালো ছায়া আসে দেয়া আচমকায় পূণ্যি একলা শুকায়।দুয়ো-রাণীর উঠোনের কোন কিসের কাহিনী- সোনার ছায়ারা নিয়ে যায় দূর জোড়া পুতুলের পুণ্যি পুকুর। একদিন যদি হাওয়া দেয় খুব অন্য দিনটি-জলে ডুব ডুব কখন দেখেছে মায়া ঘনঘন রূপকথা আনে স্বপ্নের ভোর হাওয়ায় হাওয়ায় পুতুলের পুণ্যি পুকুর। একদিন যদি জাগে ব্রত কথা কার চোখ থেকে হটাৎ অযথা খুঁজে ফেরে প্রেম মনি মনি মুক্তোর ঘরে থেকে দূরে অচেনা বাসর”-এই গানটির সাথে সঞ্চিতা নিজের জীবনের।বাসার ভেতর ষ্টার জলসা চলছে? কে দেখছে? সঞ্চিতা ছাড়া বাংলা সিরিয়াল কেউতো দেখে না? মাথার ভেতরটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে।বাসায় যে দেশ থেকে শাফকাতের বড় ভাই ও ভাবী এসেছেন ভুলে বসে আছে।হ্যা ! মিতা ভাবী দেখছে ষ্টার জলসা। উনি বাংলা-হিন্দি সিরিয়ালের পোকা।কোন সিরিয়াল বাদ দেন না কোথায় বেড়াতে গেলে আগেই বলবেন--"রেকর্ডে দিয়েছিস তো? এসে দেখবো।"খুব ভালো হাসি খুশি মনের মানুষটা। কোন কুটনামীর মধ্যে থাকেন না।যা বলার মুখের ওপর বলেন উনি। ধর্ম কর্ম না করলেও ধর্মের আচার বিচার--পাপ পুন্য দারুন মানেন। কবরের সাপ কাটা ও দোজখের আগুন নিয়ে সদাই ভয়ে থাকেন। সঞ্চিতার বাড়িতে বুদ্ধের ওকিছু মূর্তি আছে তার ভারী অপছন্দের। তাই বারবার বলেন
--আহারে এগুলো সরা! ফেলে দে ঘরে ফেরেস্তা আসবে না! আয় বরকত সব যাবে!সঞ্চিতা তুই না হয় আগে হিন্দু ছিলি! এখনতো কলমা পড়ে মুসলমান হয়েছিস।এখনও এই মূর্তি তুরটির উপর এত পিরিত গেল না? আখিরাতের কথা ভাব। মরতে হবে না? আল্লাকে কি হিসাব দিবি?তোর পেয়ারের শাশুড়ী তোকে এত ধম্ম কম্ম শেখালো সব কি গুলে খেয়েছিস? দাজ্জাল বেটি মরেও শান্তিতে পাচ্ছে না -ভাটকতে হুই আত্মা হোকে তেরে ঘাড় মটকে দেঙ্গে "-----মিতার এই হিন্দি সিলিয়ালের সংলাপ শুনে সঞ্চিতা হেসে কুটি কুটি।
---হাসছিস যে বড়-ম্যায় ক্যায়া জোকার হুঁ? শোন বাপু! আমি যা বলার সামনে বলি আড়ালে কথা বলার অভ্যেস নেই। সাফুও (শাফকাত চৌধুরীর ডাক নাম) এগুলো পছন্দ করে না। স্বামীকে তো আর হাতে রাখতে শিখলি নি -অন্তত নিজের ম্যান সম্মানটুকু রাখ ! ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। তাদের সামনে তোর এই অপমান আমার ভালো লাগে না। আমি তো আর তোর মত বেহায়া না ---
সঞ্চিতা জানে এই মানুষটা মুখে যাই বলুক ওকে অনেক ভালোবাসে। জীবনের চড়াই উৎরাইতে সব সময় ওর পাশে থেকেছে। মানুষটার মনটা বড্ড ভালো শিশুর মত। মুখটা খারাপ-ঠাস ঠাস করে সত্য কথাগুলো মুখের ওপর বলে দেয়।এই জন্য শ্বশুরকূলে কেউ তাকে খুব একটা পছন্দ করেনা। শ্বাশুড়ি সাথে কোনদিন বনেনি তার। তাই বিয়ের বেশ কিছুদিন পর থেকেই আলাদা। সঞ্চিতার ভাসুর শওকাত কিন্তু মিতা অন্ত প্রাণ। তিনি যে স্ত্রীকে ভয় পান তা নয়। তিনি ভালোবাসেন স্ত্রীকে শ্রদ্ধাভরে সঞ্চিতার ওদের সম্পর্কটা খুব ভালো লাগে। সারাক্ষন ওর ভাসুর তার স্ত্রীর পিছনে লাগেন তাকে রাগেতে। আর মিতাও বাচ্চাদের মত রেগে কপট অভিমানে বলে----
---যাও আমার চোখের সামনে থেকে ! তোমাকে কি করে কে এতটা কাল সহ্য করলাম ? মরলে বাঁচি।
শওকাত চৌধুরীও সাথে সাথে লেগে যান স্ত্রীর মান ভাঙাতে। এ যেন রাধা-কৃষ্ণ! সঞ্চিতার ভারী ভালো লাগে ওদের এই খুনসুটি। খুব কি কঠিন এমন একটা জীবন পেতে? বেশি কিছু নয় একটা সাধারণ জীবন চেয়েছিল সঞ্চিতা। পানি পুকুরের গানটার মত ওর জীবনটাও কলাপাতা মোড়া ছায়া রোদ্দুর--
কখনও মেঘ-কখনও আঁধার ! তবুও সে ঠাঁয় বসে সংসার আগলায়। স্বামীর সোহাগে প্লাবিত হতে কেন পারে না সঞ্চিতা। ভয়ে বুক কাঁপে -এই বুঝি আসে আচমকা অযথা হটাৎ রাগের ঘনঘটা।
সেই ব্রত--- কথা? সেই পুণ্যি পুকুর?কেন কুমারী ব্রত? স্বামী ও শ্বশুর কুলের মঙ্গল কামনা? মা ও দিদিমার সাথে- সঞ্চিতাও ভক্তির সাথে এই "পুন্যি পুকুর" ব্রত পালন করেছে। বাড়ির উঠোনের মাঝখানটায় ছোট্ট পুকুর তৈরী কোরে বৈশাখ থেকে চৈত্র সংক্রান্তি পর্যন্ত প্রতিদন এক ঘটি জল ঢেলে তার মাঝে একটি ফুল দিয়ে প্রণাম করে বলতে হত ব্রত কথা--" পুণ্যি পুকুর পুষ্পমালা কে পুজোরে দুপুর বেলা? আমি সতী নিজ ব্রতী। হবে পুত্র মরবে না, চোখের জল পড়বে না। পুত্র দিয়ে স্বামীর কোলে মরণ যেন হয় এক গলা গঙ্গাজলে"। ওতো মনে প্রাণে দিয়ে এই ব্রত করেছে। তবে কোথায় পুণ্যি ?কোথায় পুকুর ? শুধু পুতুল মেয়েটি'র সামনে মুকুর। সেই মুকুরে বারংবার নিজেকে খোঁজে সঞ্চিতা। এই সব অবহেলা অপমান কি ধর্ম ত্যাগের কারণে ? কিন্তু সে তো তার ধর্ম-ই পালন করছে। ধর্ম মানে চরিত্র। যেমন রাসায়নিক উপাদানের চরিত্র অর্থাৎ ধর্ম থাকে। তেমনই মানুষের চরিত্রও মানুষের ধর্ম। কালক্রমে এই চরিত্র অর্থাৎ ধর্ম রূপান্তরিত হয়েছে আচার-বিধি পুরোহিত রাজনীতিতে। ঈশ্বরবাদ না অনীশ্বরবাদী অন্য কথা। সঞ্চিতা কোনদিনই "ধার্মিক" ছিলো না। হিন্দু ব্রাহ্মণের ঘরে না জন্মে। সে অন্য কারো ঘরে যদি জন্মাতো তখন তাকে সেই "ধর্মের" আচার বিধি পালন করতে হত। আমরা জন্মাবার কালে নাম-গোত্র- ধর্মহীন একজন মানব হয়েই জন্মাই।জন্মের পর পরেই আমাদের গায়ে জাত ও ধর্মের মোহর লেগে যায়।আর এই মোহর যেন ক্রীতদাসের পরোয়ানা।সারাটা জীবন বয়ে বেড়াতে হয়। প্রতিবাদ-প্রতিবন্ধকতা-বাধা বিঘ্ন উপেক্ষা করে যারা বেরিয়ে আসে বা আসতে চায়-তাদের সইতে হয় অনেক বিড়ম্বনা-অত্যাচার। কোন কোন ক্ষেত্রে জীবন নাশ অথবা নির্বাসিত জীবন যাপন। চলবে--------------
সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত
http://www.alokrekha.com
সানজিদা রুমির "অনন্দিত উত্তরণ" গল্পটা পড়ে খুবই ভাল লাগলো। একটা মেয়ের জীবনে তার স্বামী সন্তান সমাজ ইত্যাদির এক রূপ রেখা ফুটিয়ে তুলেছেন এখানে। বিষের করে একটা পর্যায়ে সন্তানদের অবহেলা স্বামীর অযথা রূঢ় ব্যবহার। বাকিটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "অনন্দিত উত্তরণ" গল্পটা পড়ে খুবই ভাল লাগলো। বরাবর-ই সানজিদা রুমির লেখায় মন ও মননের সুগভীর অনুচিন্তন,ভাব, অভিব্যক্তির ছায়া দেখতে পাই । অপূর্ব শব্দশৈলী চমৎকার। অপরূপ-বহুবর্ণ ও ভাষার প্রকাশ। উত্কৃষ্ট ও চমৎকার সৃষ্ট কবিতা । অনেক ভালোবাসা ।বাকিটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "অনন্দিত উত্তরণ" গল্পটা পড়ে খুবই ভাল লাগলো। মনে হল কোন ছায়াছবি দেখছি ।যেমন শব্দশৈলী চমৎকার তেমনি অপরূপ-বহুবর্ণ ও ভাষার প্রকাশ।বাকিটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। অনেক ভালোবাসা।
ReplyDelete