শক্তি চট্টোপাধ্যায় (২৬. ১১. ১৯৩৩ ~ ২৩. ০৩. ১৯৯৫)
শক্তি চট্টোপাধ্যায় – জনপ্রিয় কবি ছিলেন। প্রথম জীবনে গল্প রচণা করতেন স্ফুলিঙ্গ সমাদ্দার ছদ্মনামে।
“কবিতা” পত্রিকায় তাঁর প্রথম কবিতা ছাপা হয় । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় “কৃত্তিবাস” পত্রিকাকে ঘিরে
তাঁর প্রথম পর্বের কবিতায় নিয়ম শাসিত জীবনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, নিয়ম ভাঙ্গা জীবন যাপনের গৌরবায়ণ
দেখতে পাওয়া যায়। সেই সময় কবিকে হাংরি জেনারেশন বা হিংরিয়ালিস্ট আন্দোলন-এর নেতৃত্বে দেখা যায়।
পরবর্তি পর্বে এই উত্তালতা স্তিমিত হয়ে আসে। বন্ধুত্ব, নারী, মানব সংসর্গ, জীবনের আনন্দ ও ব্যর্থতা বোধ
নিয়ে তাঁর কবিতা। প্রকৃতির প্রতি তীব্র আকর্শন, নারীর ভালবাসা প্রভৃতি তাঁর কাব্য জগতের প্রধান উপকরণ।
তাঁর নিজস্ব ছন্দস্পন্দ এবং বলিষ্ঠ ভাষা তাঁকে বিশিষ্টতা দিয়েছে।
১৯৭৫ সালে তিনি ভূষিত হন আনন্দ পুরস্কারে এবং ১৯৮৪ তে পান সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার। তাঁর আকস্মিক
অকাল প্রয়াণের সময় তিনি বিশ্বভারতীর অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
হে প্রেম হে নৈঃশব্দ – ১৯৫৭, হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান – ১৯৬৯, যেতে পারি কিন্তু কেন যাব – ১৯৮২,
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। তাঁর কবিতা অজশ্র এবং শতস্ফূর্ত।
যদি পারো দুঃখ দাও – শক্তি চট্টোপাধ্যায়
যদি পারো দুঃখ দাও, আমি দুঃখ পেতে ভালোবাসি
দাও দুঃখ, দুঃখ দাও – আমি দুঃখ পেতে ভালোবাসি।
তুমি সুখ নিয়ে থাকো, সুখে থাকো, দরজা হাট-খোলা।
আকাশের নিচে, ঘরে , শিমূলের সোহাগে স্তম্ভিত
আমি পদপ্রান্ত থেকে সেই স্তম্ভ নিরীক্ষণ করি।
যেভাবে বৃক্ষের নিচে দাঁড়ায় পথিক, সেইভাবে
একা একা দেখি ঐ সুন্দরের সংশ্লিষ্ট পতাকা।
ভালো হোক মন্দ হোক যায় মেঘ আকাশে ছড়িয়ে
আমাকে জড়িয়ে ধরে হাওয়া তার বন্ধনে বাহুর।
বুকে রাখে, মুখে রাখে – ‘না রাখিও সুখে প্রিয়সখি!
যদি পারো দুঃখ দাও আমি দুঃখ পেতে ভালোবাসি
দাও দুঃখ, দুঃখ দাও – আমি দুঃখ পেতে ভালোবাসি।
ভালোবাসি ফুলে কাঁটা, ভালোবাসি, ভুলে মনস্তাপ –
ভালোবাসি শুধু কূলে বসে থাকা পাথরের মতো
নদীতে অনেক জল, ভালোবাসা, নম্রনীল জল –
ভয় করে।
http://www.alokrekha.com
কবিতার সাথে সাথে কবির জীবনী খুব ভাল লাগলো আলকরেখার এই নতুন প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাই।
ReplyDeleteশক্তি চট্টোপাধ্যায় এর উপর লেখাটা থেকে অনেক কিছু জানলাম। আলোক রেখাকে অনেক ধন্যবাদ
ReplyDeleteশক্তি চট্টোপাধ্যায় এর উপর লেখাটা পড়ে উনি কত বড়ো একজন কবি। সানজিদা রুমিকে অনেক সাধুবাদ। আশা করি সামনে এমন আরো লেখা আলোক রেখায় পাবো
ReplyDelete"আকাশের নিচে, ঘরে , শিমূলের সোহাগে স্তম্ভিত
ReplyDeleteআমি পদপ্রান্ত থেকে সেই স্তম্ভ নিরীক্ষণ করি।
যেভাবে বৃক্ষের নিচে দাঁড়ায় পথিক, সেইভাবে
একা একা দেখি ঐ সুন্দরের সংশ্লিষ্ট পতাকা।"
শক্তি চট্টোপাধ্যায় এর কবিতার এই লাইন গুলো
কত কথা মনে করিয়ে দেয়।
এমন অনেক শক্তিমান কবি আছে আমাদের উপমহাদেশে
যাদের আমরা চিনি না। আলোক রেখার সুবাদে শক্তি চট্টোপাধ্যায় কে চিনলাম ,জানলাম ,তার কবিতা পড়লাম। অনেক ধন্নবাদ আলোক রেখাকে
শক্তি চট্টোপাধ্যায় এর লেখাটি কঠিন ভাষায় হলেও চমত্কার একটি কবিতা ,কবি ও কবিতা আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্নো আলোক রেখাকে ধন্যবাদ
ReplyDeleteকবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় একজন বিদ্রোহী কিন্তু নৈরাশজনক জনক কবি। "যদি পারো দুঃখ দাও" কবিতাটি অত্তন্ত উচ্চ মানের কিন্তু নৈরাশজনক। মন খারাপ করিয়ে দেয় কিন্তু তাও সাধুবাদ জানাতে হয় কারণ trajedy ও তো সাহিত্তে অনেক বড়ো স্থান পেয়েছে। শেক্সপীয়ারের কথাই ধরুন না কেন , যাকে বলা হয় king of trajedy
ReplyDelete