আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও মেঘবালিকার জন্য রূপকথা — জয় গোস্বামী ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    মেঘবালিকার জন্য রূপকথা — জয় গোস্বামী


    মেঘবালিকার জন্য রূপকথা — জয় গোস্বামী


    আমি যখন ছোট ছিলাম
    খেলতে যেতাম মেঘের দলে
    একদিন এক মেঘবালিকা
    প্রশ্ন করলো কৌতুহলে

    “এই ছেলেটা, 
    .                         নাম কি রে তোর?”
    আমি বললাম,
    .                          “ফুসমন্তর !”

    মেঘবালিকা রেগেই আগুন,
    “মিথ্যে কথা । নাম কি অমন
    হয় কখনো ?”
    .                      আমি বললাম,
    “নিশ্চয়ই হয় । আগে আমার
    গল্প শোনো ।”

    সে বলল, “শুনবো না যা-
    সেই তো রাণী, সেই তো রাজা
    সেই তো একই ঢাল তলোয়ার
    সেই তো একই রাজার কুমার
    পক্ষিরাজে
    শুনবো না আর ।
    .                               ওসব বাজে ।”

    আমি বললাম, “তোমার জন্য
    নতুন ক’রে লিখব তবে ।”

    সে বলল, “সত্যি লিখবি ?
    বেশ তাহলে
    মস্ত করে লিখতে হবে।
    মনে থাকবে ?
    লিখেই কিন্তু আমায় দিবি ।”
    আমি বললাম, “তোমার জন্য
    লিখতে পারি এক পৃথিবী ।”

    লিখতে লিখতে লেখা যখন
    সবে মাত্র দু-চার পাতা
    হঠাৎ তখন ভুত চাপল
    আমার মাথায়-

    খুঁজতে খুঁজতে চলে গেলাম
    ছোটবেলার মেঘের মাঠে
    গিয়েই দেখি, চেনা মুখ তো
    একটিও নেই এ-তল্লাটে

    একজনকে মনে হল
    ওরই মধ্যে অন্যরকম
    এগিয়ে গিয়ে বলি তাকেই !
    “তুমি কি সেই ? মেঘবালিকা
    তুমি কি সেই ?”

    সে বলেছে, “মনে তো নেই
    আমার ওসব মনে তো নেই ।”
    আমি বললাম, “তুমি আমায়
    লেখার কথা বলেছিলে-”
    সে বলল, “সঙ্গে আছে ?
    ভাসিয়ে দাও গাঁয়ের ঝিলে !
    আর হ্যাঁ, শোন-এখন আমি
    মেঘ নই আর, সবাই এখন
    বৃষ্টি বলে ডাকে আমায় ।”
    বলেই হঠাৎ এক পশলায়-
    চুল থেকে নখ- আমায় পুরো
    ভিজিয়ে দিয়ে-
    .                        অন্য অন্য
    বৃষ্টি বাদল সঙ্গে নিয়ে
    মিলিয়ে গেল খরস্রোতায়
    মিলিয়ে গেল দূরে কোথায়
    দূরে দূরে…।

    “বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়
    বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়-”
    আপন মনে বলতে বলতে
    আমিই কেবল বসে রইলাম
    ভিজে একশা কাপড়জামায়
    গাছের তলায়
    .                         বসে রইলাম
    বৃষ্টি নাকি মেঘের জন্য

    এমন সময়
    অন্য একটি বৃষ্টি আমায়
    চিনতে পেরে বলল, “তাতে
    মন খারাপের কি হয়েছে !
    যাও ফিরে যাও-লেখ আবার ।
    এখন পুরো বর্ষা চলছে
    তাই আমরা সবাই এখন
    নানান দেশে ভীষণ ব্যস্ত
    তুমিও যাও, মন দাও গে
    তোমার কাজে-
    বর্ষা থেকে ফিরে আমরা
    নিজেই যাব তোমার কাছে ।”

    এক পৃথিবী লিখবো আমি
    এক পৃথিবী লিখবো বলে
    ঘর ছেড়ে সেই বেড়িয়ে গেলাম
    ঘর ছেড়ে সেই ঘর বাঁধলাম
    গহন বনে
    সঙ্গী শুধু কাগজ কলম

    একাই থাকব । একাই দুটো
    ফুটিয়ে খাব—
    .                    দু এক মুঠো
    ধুলো বালি-যখন যারা
    আসবে মনে
    .                   তাদের লিখব
    লিখেই যাব !

    এক পৃথিবীর একশোরকম
    স্বপ্ন দেখার
    সাধ্য থাকবে যে-রূপকথার—
    সে রূপকথা আমার একার ।

    ঘাড় গুঁজে দিন
    .                       লিখতে লিখতে
    ঘাড় গুঁজে রাত
    .                      লিখতে লিখতে
    মুছেছে দিন—মুছেছে রাত
    যখন আমার লেখবার হাত
    অসাড় হল,
    .                    মনে পড়ল
    সাল কি তারিখ, বছর কি মাস
    সেসব হিসেব
    .                       আর ধরিনি
    লেখার দিকে তাকিয়ে দেখি
    এক পৃথিবী লিখব বলে
    একটা খাতাও
    .                       শেষ করিনি ।

    সঙ্গে সঙ্গে ঝমঝমিয়ে
    বৃষ্টি এল খাতার উপর
    আজীবনের লেখার উপর
    বৃষ্টি এল এই অরণ্যে
    বাইরে তখন গাছের নিচে
    নাচছে ময়ূর আনন্দিত
    এ-গাছ ও-গাছ উড়ছে পাখি
    বলছে পাখি, “এই অরণ্যে
    কবির জন্যে আমরা থাকি ।”
    বলছে ওরা, “কবির জন্য
    আমরা কোথাও আমরা কোথাও
    আমরা কোথাও হার মানিনি—”

    কবি তখন কুটির থেকে
    তাকিয়ে আছে অনেক দূরে
    বনের পরে, মাঠের পরে
    নদীর পরে
    সেই যেখানে সারাজীবন
    বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে,
    সেই যেখানে কেউ যায়নি
    কেউ যায় না কোনদিনই—
    আজ সে কবি দেখতে পাচ্ছে
    সেই দেশে সেই ঝরনাতলায়
    এদিক-ওদিক ছুটে বেড়ায়
    সোনায় মোড়া মেঘহরিণী—
    কিশোর বেলার সেই হরিণী ।

     http://www.alokrekha.com

    6 comments:

    1. বাণী ভট্টাচার্যSeptember 13, 2018 at 3:05 PM

      বহু চেষ্টা করেও এতদিন আলোকরেখা খুলতে পারিনি। আজ নুতুন লেখা ও আলোকরেখায় যেতে পেরে স্বস্তি বোধ করছি। আর জয় গোস্বামীর মেঘবালিকার জন্য রূপকথা কবিতার জন্য কিছু বলা বাহুল্য। অনেক প্রার্থনা আলোকরেখার জন্য।

      ReplyDelete
    2. বহু চেষ্টা করেও এতদিন আলোকরেখায় ঢুকতে পারিনি। আজ আলোকরেখায় নুতুন লেখা ও খুলতে পেরে খুব ভালো লাগছে । আর জয় গোস্বামীর মেঘবালিকার জন্য রূপকথা কবিতা আমাদের সবার খুব প্রিয় । অনেক প্রার্থনা আলোকরেখার জন্য। আলোকরেখার চলার পথ সুন্দর ও সুললিত হোক।

      ReplyDelete
    3. কামরুজ্জামান হীরাSeptember 13, 2018 at 3:45 PM

      বহু চেষ্টা করেও এতদিন আলোকরেখা পড়তে পানিনি মনটা খুব খারাপ হয়েছিল। বুঝতে পারিনি ইটা কি বন্ধ হয়ে গেলো কি না । আজ আলোকরেখায় নুতুন লেখা পেয়ে খুব ভালো লাগছে । আর জয় গোস্বামীর মেঘবালিকার জন্য রূপকথা কবিতা আমাদের সবার খুব প্রিয়। আমি বহুবার বহু জায়গায় আবৃতি করেছি । অনেক শুভ কামনা আলোকরেখার জন্য। আলোকরেখার চলার পথ সুন্দর হোক ।আমাদের মনন ও প্রজ্ঞা আলোকিত হোক।

      ReplyDelete
    4. নাসির হোসেনSeptember 13, 2018 at 4:39 PM

      আলোকরেখাকে আবার সক্রিয় হতে দেখে খুব ভালো লাগলো-

      ReplyDelete
    5. প্রদীপ সেন গুপ্তSeptember 13, 2018 at 5:53 PM

      এত সুরুচিপূর্ণ সাজানো গোছানো একটা অনলাইন বাঙলা সাহিত্যের পত্রিকা পড়তে খুব ভালো লাগে। আজকাল প্রিন্টিং পত্রিকা তো পড়াই হয় না। কত পত্রিকা আমাদের এই টরন্টো শহরে কিন্তু অনলাইন পত্রিকা পড়া অনেক সহজ। তাই যখনি সময় পাই অনলাইন পত্রিকা পড়ি। কাজের মাঝেও পড়া হয়। তার মধ্যে আলোকরেখা আমার সব থেকে প্রিয়।মাঝে কিছুতেই পড়তে না পারে মনটা খারাপ হয়েছিল। আশা করি আর হতাশায় পড়তে হবে না। আলোকরেখার চলার পথ মসৃন হোক। অনেক অনেক শুভ কামনা।

      ReplyDelete
    6. আলোকরেখার একজন নিয়মিত পাঠক ও মাঝে মাঝে অংশগ্রহণ করা লেখক হিসেবে এর কখনও কখনও থেমে থাকাটা আমাকেও কষ্ট দেয় !

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ