আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও সমুদ্র অভিসারী ----------------------—----- সুনীতি দেবনাথ ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    সমুদ্র অভিসারী ----------------------—----- সুনীতি দেবনাথ



    সমুদ্র অভিসারী

    ----------------------—-----

     © সুনীতি দেবনাথ

    পেরুর উপকূলে ওরা উড়ত ডানা মেলে
    রূপোলি ঝিলিক দেয়া বালির উপরে,

    আর আটলান্টিক সমুদ্রের নীল সমারোহে
    আকাশ উঁকি দিয়ে হেসে উঠত খিলখিল।

    পেলিক্যান আর সিগ্যাল পাখিরা
    হাজারে হাজারে যে বিপুল গরিমা নিয়ে

    সারাদিন উড়ে উড়ে কর্কশ সঙ্গীতে
    সমুদ্রের ঢেউয়ে দোলা খেত আর

    সোনালি রূপোলি মাছের ঝাঁকে দিত হানা ঝাঁপিয়ে!
    তখন সেই কর্কশ সামুদ্রিক সুরে হার মানতো

    জুলিয়েটের বারান্দার শেকসপীয়রের সেই
    মিস্টি মধুর সুরেলা নাইটিঙ্গেল।

    নোয়ার আর্ক থেকে উড়ে চলে যাওয়া

    সুন্দর কবুতর
    ওদের সাহসী ডানার ঝাপটে ম্লান মনে হতো। 
    আর সেই সব সোয়ালো পাখির

    দ্বিখণ্ডিত দীর্ঘপুচ্ছ দীঘল ডানার
    শোভন উড়ালও ওদের ডানার ছন্দে হেরে যেতো,

    হেরে যেতো গুস্তাভো আদোলফো বেকোরের
    বসন্তবিহারী পরিযায়ী দীঘল সোয়ালো!

    কতকাল কতযুগ ওরা সমুদ্র অভিসারী
    উড়েছিল নেচেছিল গেয়েছিল

    দুরন্ত উন্মুক্ত জীবনের জয়গান
    ওরা তা ভুলেছিল, ভুলেছিল পেরুর বাসিন্দা।

    সমুদ্রের তীরে ভারে ভারে স্তুপে স্তুপে
    জমেছিল বিষ্ঠার পাহাড়,

    রোদে পুুড়ে স্পর্ধায় আকাশে তুলেছিল মাথা।
    পেরুকে লুণ্ঠণ করে নিয়ে এবার

    কুচক্রি সাম্রাজ্যবাদীদের
    পাখির বিষ্ঠা

    এটাও চাই, চাই এই খাঁটি নাইট্রেট
    একটুও যাবে না ফেলা

    শকুনির লুব্ধ দৃষ্টি যেমন ভাগাড়ে!
    কোন্ বিজ্ঞানী যে বলেছেন

    এই বিষ্ঠা নিখাদ নাইট্রেট,
    গম ক্ষেতে তুলবে ফলনের ভরন্ত তুফান।

    ওদিকে য়ুরোপে শূকর মোরগ
    মাছ চায় নোনা সমুদ্রের,  মাছ দরকার!

    পেরুর উপকূল লোভনীয়
    পেলিক্যান সীগ্যালের বংশ পরম্পরার খাদ্যের  ভাণ্ডার।

    জাহাজ জাহাজ নাইট্রেট

    নিয়ে গেল মার্কিনি বণিক, 
    হাজার হাজার জাহাজ পাখিদের বঞ্চিত করে

    মুখের গ্রাস নিল কেড়েয়ুরোপে ভেসে গেলো।
    সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসে

    য়ুরোপ মার্কিন আকাশে আকাশে

    শীতের ঝরাপাতার মতন
    উড়তে লাগল পতপত করে টাকা,

    টাকা আর টাকা, ধনতন্ত্রের পরম রতন!
    সার গেল মাছ গেল গেল গেল সব গেল
    রয়ে গেল ক্ষুধার্ত মানুষ আর সমুদ্রাভিসারী হাজারো পেলিক্যান

    কী দুরন্ত মৃত্যুর মিছিল!
    মাছুয়া নৌকো ঘিরে পেলিক্যান উড়ে যায়

    খাদ্যের টানে সমুদ্র অভিসারে গভীর থেকে গভীরে
    ডানা ভারি হয়ে হায় পড়ে যায়

    নিষ্ঠুর সমুদ্র লেখে মৃত্যু পরোয়ানা।
    দলে দলে চলে তারা সড়ক ধরে শহরে

    ফেরে না তো আর,
    লিমার পথে অসংখ্য পেলিক্যান ঘুরে মরে পড়ে থাকে।

    আগ্রাসী ধনতন্ত্র রুদ্র রূপে হাসে
    গড়ে ওঠে সভ্যতার পতনের ইতিহাস!

    পেরুর ভ্রমণকারীগণ,

    দেখেছো কি মৃত নগরীর সারি?
    ঝুলছে এদিকে ওদিকেও বোবা টেলিফোনের তার,

    প্রেতনগরীতে রাবিশের স্তুপ, মৃত্যুর গহ্বর?
    বুজে যাওয়া নাইট্রেট রেলপথ,

    বিস্ফোরণে বিস্ফোরণে নাইট্রেট জমিনের কঙ্কাল?
    সাদা পাহাড়ের স্তুপীকৃত জঞ্জালে আচ্ছন্ন নগরী?

    ভয়াল শীতের শীতল বাতাসে সেখানে
    কবরস্থানে কেঁপে কেঁপে ওঠে ক্রুশগুলো!

    হায়রে  সভ্যতা!
    মৃত্যুর ওপার থেকে

    চেয়ে  থাকে পাখি আর মানুষের চোখ।

    কাজরী,
    ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫

     http://www.alokrekha.com

    7 comments:

    1. কাম্রুজ্জামান হীরাDecember 19, 2018 at 4:41 PM

      "সমুদ্র অভিসারী " কবিতায় সুনীতি দেবনাথ পাখিদের উড়ে যাওয়া জানা ঝাপ্টানো সমুদ্র বিহারের মাধ্যমে বিশ্ব সমাজের চালচিত্র তুলে ধরেছেন। দারুন অনবদ্য কবিতা। অনেক অনেক শুভেচ্ছা কবি।

      ReplyDelete
      Replies
      1. অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা
        সম্মানিতা কাম্রুজ্জামান হীরা ।

        Delete
    2. রেজা আমিনDecember 19, 2018 at 4:54 PM

      "সমুদ্র অভিসারী " কবিতায় সুনীতি দেবনাথ শক্তিশালী কবি হিসাবে তেমনি কবিতার বিষয় ও প্রতিটি শব্দ শক্তিমান। কবির এই মিশ্র প্রতিক্রিয়া আমাদেরকে নিয়ে গেছে আপন বিশ্ব ভুবনে। অনেক অনেক ভালো লাগলো এই উচ্চমানের কবিতা পড়ে। ভালোবাসা কবিকে” অনেক অনেক শুভেচ্ছা কবি।

      ReplyDelete
      Replies
      1. রেজা আমিন, আপনার মন্তব্যে আপ্লুত হলাম । ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি!

        Delete
    3. দূর্বা দাসDecember 19, 2018 at 4:58 PM

      "সমুদ্র অভিসারী " কবিতায় সুনীতি দেবনাথ শক্তিশালী কবি হিসাবে তেমনি কবিতার উত্কৃষ্ট চমৎকার জীবন বোধের প্রকাশ।অপূর্ব বিষয় বস্তু,ভাষাভাব ও শব্দচয়ন ও রচনা শৈলী মিলিয়ে অনবদ্য ও অনিন্দ্য এক কবিতা। অনেক অনেক শুভেচ্ছা কবি।

      ReplyDelete
      Replies
      1. মাননীয়া দূর্বা দাস, আপনার মন্তব্যটি আমাকে অভিভূত করেছে! অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা!

        Delete
    4. সুতপা দত্ত গুপ্তাDecember 19, 2018 at 5:41 PM

      প্রশংসাবাদী কবিতা ! অপূর্ব। । সুন্দর ! একটা চমৎকার কবিতা ! জীবনের এমন ভাবনা, প্রতিফলন প্রশংশার দাবিদার । অনিন্দ্য এক কবিতা। বড্ডো ভালো। অনেক ভালোবাসা কবি।”

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ