বাংলা
সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ : অধ্যাপক বাদল বরণ বড়ুয়া
॥
নাটকে মুক্তিযুদ্ধের কথা ॥
মুক্তিযোদ্ধাদের
সাহসী বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধে ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর
সহায়তায় আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।একটি পতাকা ও একটি মানচিত্র।বাংলা
সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলত হয়েছে ।
নাটক,
কবিতা ছড়া,গান,গল্পউপন্যাস,প্রবন্ধ,স্মৃতিকথা,ইতিহাস,গবেষণাও চলচ্চিত্রে অবদমিত বাঙালি জাতিস্বত্বার
নির্দ্বিধ ধারাবাহিকভাবে
উজ্জীবনে মাধ্যমে শোষণ মুক্ত এক অসাম্প্রদায়িক সুন্দর
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ
রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা উঠেছে।
যে সোনার
বাংলা গড়ার এক আপোষহীন স্বপ্ন
দেখে ছিলেন।৫২'র ২১'শে
ফেব্রুয়ারির পথ বেয়ে ৭১'
সালে ৭ই মার্চ তাঁর
ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি মুক্তিকামী সাড়ে সাত লক্ষ বাঙালিকে উবুদ্ধ করে ছিলেন আওভান জানিয়ে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের।গোটা জাতিকে সেই স্বপ্নে জাগরিত করে ছিলেন জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর সে আওভানে বাংলার
পাকিস্তনের দ্বারা নিপীড়িত নির্যাতিত মুক্তি কামী বাঙালী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিল।দীর্ঘন'মাস মরণাপন সংগ্রাম ও যুদ্ধ করে
আমরা সেই কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম।সেই মুক্তিসংগ্রামের ভয়াবহ চিত্র আমাদের কবি ও সাহিত্যিকের লেখায়
সেই চেতনা প্রতিফলন ঘটে।মুক্তিযুদ্ধ ও তার চেতনা
নিয়ে বাংলা
সাহিত্যের অন্য শাখার তুলনা মূলক বিচারে নাট্য সাহিত্য অনেক বেশি সমৃদ্ধ।বিশেষতঃ মুক্ত-নাটক ও গ্রূপ থিয়েটার
আন্দোলন পাকিস্তানী আমলেও উল্লেখযোগ্য। আজকের বিষয় নাটকে মুক্তিযুদ্ধের কথা। মুনীর চৌধুরীর 'কবর' নাটক বাঙলালির অধিকার চেতনার প্রথম বিস্ফোরণ।মুক্তি যুদ্ধের অমোঘ অনিবার্য শুনি বাণী মুর্দা ফকিরে কণ্ঠে "এ মুর্দা কবরে
থাকবে না।বিশ,পঁচিশ,ত্রিশ যতই নীচে চাপা দাও!কবর ভেঙে বেরিয়ে চলে আসবে উঠে আসবে”।“কবর" নাটকে প্রতিবাদী ও সোচ্চার মুখ্য
রূপক চরিত্র মুর্দা ফকির।সে
একসময় স্কুল মাস্টার ছিল।৪৩'সালে দুর্ভিক্ষে তার চোখের সামনে বৌ,বাবা,মা, ভাইবোনকে
মরতে দেখেছে।কাউকে কবর দিতে পারেনি।সে গোরো-স্তানেই থাকে।মরার সময় হলে যেন চট করে কবরে
ঢুকে যেতে পারে।শহীদের লাশ-গুলো চিনতে পারেনি যে,এদের অন্যায়
ভাবে হত্যা করা হয়েছে।সে তাই বলে-‘বাসিমরার গন্ধ আমি চিনি না!এই লাশের
গন্ধ অন্যরকম ওষুধ,গ্যাস বারুদের গন্ধ'!শহীদের রক্তে অর্জিত বাঙালির এ স্বাধীনতা অর্জনে
ঐতিহাসিক সত্যটি দেদীপ্যমান হয়েছে।শুধু তাই নয়!গুলিতে নিহত
লাশগুলো যখন কবরে যেতে চায় না,তখন নেতার
এই উক্তি: “তোমার মত ছেলেরা দেশের
মরণ ডেকে আনবে।তুমি বেঁচে থাকলে দেশে আগুন বারবার জ্বলে উঠবে।সব পুড়িয়ে ছারখার না হওয়া পর্যন্ত
আগুন তো নিভবেনা”।বাংলার দামাল ছেলেরা সব পুড়বে তবেই,বাংলার স্বাধীনতা আনবে। এমন অনবদ্য ও দৃষ্টি উন্মোচনকারী
নাটক আর লেখা হয়
নি।স্বাধীনতার ওই অমোঘ প্রেরণায়
মুক্ত স্বদেশ ভূমিতে বসে ’৭৫' সাল পর্যন্ত স্বল্প সময়ে খ্যাত-অখ্যাত,প্রবীণ ও নবীন মিলে
প্রায় চল্লিশজন নাট্যকার আর অর্ধ শতাধিক
নাটকে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতার চেতনার কথা।সব নাটক স্বধীনতার ইতিহাসের
কাল পর্বে গুরুত্ব পূর্ণ দলিল ও স্মারক হিসেবে
স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মমতাজউদ্দিন
আহমদ মুক্তিযুদ্ধর চেতনার সফল নাট্যকার।মুক্তি-যুদ্ধের চেতনা নিয়ে তাঁর প্রথম কবিতা একুশে ফেব্রুয়ারি।প্রথম নাটক 'স্বাধীনতা চট্টগ্রামের অবদান' 'স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা' গ্রন্থভুক্ত
প্রথম ৪'টি নাটক
১৯৭১থেকে ১৯৭২'র ফেব্রুয়ারীতে রচিত।তিনি বলেছেন
"তখন যুদ্ধ শুরু ভিতরে বাইরে-ঘরে থাকতে পারতুম না পথে নেমে
ছিলুম। সাথে ছিল মুক্তিকামী মানুষের মিছিলের ঢল আর কণ্ঠে
ছিল স্লোগান"এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনিতার সংগ্রাম" -স্বাধীনতাযুদ্ধের হাতিয়ার ছিল নাটক।খোলা মাঠের উদ্যোম মঞ্চে নাটক"। মমতাজউদ্দিন আহমেদ ‘কি চাহ শঙ্খচিল’নাটকে
পাকিস্তানি সৈন্যন ও তাদের দোসর
রাকজাকার দালালদের দ্বারা বাঙ্গালী নারীধর্ষণ ও নির্যাতনের মর্মন্তু
চিত্র তুলে চিত্র ধরেছেন।শঙ্খচিলের শিকারে তিনি ৭১'ধর্ষিতা নারী রৌশন আরা এবং আরো অনেক নারী লাঞ্ছনা ও ধর্ষণের চিত্র
তুলে ধরেছেন।এছাড়া অন্নান্যনাটকেও এই চিত্র প্রাধান্য
পেয়েছে।আলাউদ্দিন আল আজাদের নাটক
'নিঃশব্দ যাত্রা নরকে" 'লাল
গোলাপী"- নীলিমা ইব্রাহিমের ‘যে অরণ্যে আলো
নেই ইত্যাদি।
আমাদের
দুর্ভাগ্য যে,স্বাধীনতার কিছুদিন
পরে পাকহানাদের দোসর দালালচক্র আবারও মুখোশ পাল্টেস্বাধীনতা স্বপক্ষীয় শক্তির সঙ্গে মিশে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করে সমাজে পুনর্বাসিত হয় রাষ্ট্রক্ষমতা
অধিষ্ঠিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে করেছে বিতর্কিত,বিকৃত,পরিবর্তিত।
নীলিমা
ইব্রাহিমের নাটকের একটি খ্যাত সংলাপ: ওরা ধর্মের
নামে
আমাকে
ধর্ষণ
করেছে
আর
ধর্মের
দোহাই
দিয়ে
আমাকে
আশ্রয়চ্যু
করেছে
তোলার
বাবা।
কল্যাণ
মিত্রের ‘জল্লাদের দরবার’ স্বাধীনতা সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে ছিল প্রেরনা।সেই স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানিদের শোষণ,বঞ্চনা,মুক্তিযুদ্ধে সময়ে রাজাকার,আল-বদর, আল-শামস-দালালদের পৈশাচিক কাহিনী জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
মুক্তিযুদ্ধে
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ-ধর্ষণেরচিত্র এই নাটকগুলোতে অংকিত
হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযান আত্মত্যাগ ও সাহসের সাথে
যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার বিষয়টি প্রাধান্য।মুক্তিযুদ্ধে দ্বিতীয় ভাগে দেখতে পাই,স্বাধীনতা উত্তর সময়ে মুক্তি যোদ্ধাদের হতাশা,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা খণ্ডন,স্বপ্নভঙ্গের করুণচিত্র।স্বাধীনতা বিরোধীদের উত্থান বিশেষ বঙ্গবধূর স্বপরিবারে হত্যা। পরবর্তীতে
সেই খুনিদের পুনর্বাসন করা।এই ঘটনাগুলো বেশি আরক্ত করে নাট্যকার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে।মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তি
নাটকের রচনা বেশী।মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে সর্বশেষ লিখেছেন
'তাহারা তখন'।১৯৭৪-‘সুবচন নির্বাসন’দিয়ে জয়যাত্রা শুরু হয়। আবদুল্লাহ-আল-মামুনের নাটকে
স্বাধীনতার যুদ্ধ নানাভাবে এসেছে।তরুণ প্রজন্মের বিভ্রান্তি,প্রচন্ড ভাবে তাকে নাড়া দেয়। বাংলাদেশে ধর্ম ব্যবসায়ীর হাতে মানবতার অবমাননা নারীনিগ্রহের চিত্র ফুটে উঠেছে।'মেরাজ ফকিরের মা' নাটকে।'এখনও ক্রীতদাস’
নাটকের মুল বিষয় হচ্ছে,রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকে যে দল তারা
তরুন্দের ক্রীতদাস বানিয়ে রাখে।বিরোধীদল দেশের তরুণদের অন্যভাৱে ক্রীতদাস বানিয়ে রাখে।‘তোমরাই’ নাটকে রঞ্জুরা স্বাধীনতা
ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে
অপব্যাখ্যা বিভ্রান্তি শিকার।বিবিসাব মুক্তি যোদ্ধার
স্ত্রী মরিয়মবিবি তার অনুকনীয় প্রতিবাদী ও সুন্দর ব্যবহারের
এলাকাবাসীর বিবি সাব হয়ে ওঠে।একটা রিক্সা গ্যারেজের মালিক।সে লক্ষ্য করছে স্বাধীনতার যে জশত্রু আবার
সমাজে ক্ষমতা- সম্মানের আসনে বসে আছে।বসিরুদ্দিন মোল্লা,৭১'র শান্তি
কমিটির মেম্বার ছিল।স্বাধীনতা বিরোধী বসিরউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে হাত মেলায় ক্ষমতার লোভে। তার পক্ষ নিলে বিবিসাব প্রশ্ন করে –
মরিয়ম:স্বাধীনতার পর পর আপনি
ভাষণ দিচ্ছেন-বসিরুদ্দিন মোল্লা শান্তিকমিটি মেম্বার আছিল।তার দুই পোলা আছিল বদরবাহিনী, স্বাধীন বাংলাদেশে আগে মাপ নাই-দিচ্ছেন না এই ভাষণ?
মেম্বার
: তা দিচ্ছি।
মরিয়ম
: তাইলে!
মেম্বার
: অহন দিনকাল অন্যরকম হইয়া গেছে বিবিসাব।
মরিয়ম:অহন দিনকাল অন্যরকম হয় নাই।অন্যরকম হইছেন
আপনারা।ক্ষমতার নেশায় পাইছে।
-ক্ষমতায়
যাইবার লাইগ্যা আপনারা আজকে এই পাট্টি করেন
কালকে ঐ পাট্টি করেন।উল্লিখিত
নাটকগুলো ছাড়া আরও নাটক :মমতাজউদ্দীন আহমদের 'ফলাফল নিম্নচাপ,‘ক্ষবিক্ষত,সাত ঘাটের কানাকড়ি ’সেলিম আল-দীন ‘জন্ডিস
ও বিবিধ বেলুন,’‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’,‘কিত্তন
খোলা ও ---- কেয়ামত-মঙ্গল। মামুনুর রশীদ:ওরা কদম আলী,ইবলিশ,সমতট,জয়-জয়ন্তু,
নাসিরুদ্দিন ইউসুফ:একাত্তরে পালা,ঘুমনেই এস.সোলায়মান:"খান্দানীকিসসা,কোর্টমার্শাল। এই দেশে ওই বেশে,ইঙ্গিত।
নিরঞ্জন অধিকারী’র
রাজাকরে কিস্সা।মঈন আহমদের প্রতিদিন একদিনও আরো অনেক নাটক।সচরাচার নাটক লেখেন না এমন লেখকও
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে নাটক লিখেছেন।নাসিমা ইবরাহিমের:'সে অরণ্য আশা
নেই বশির আল হেলালের :স্বর্গের
সিঁড়ি ইত্যদি।মানুনুর রশিদ ও সেলিমআলদীনেরনাটকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
লোকে শ্রেণীদ্বন্দ্বের টানাপোড়েন পরিলক্ষিত হয়।এস,এ সোলায়মান নাটকে
তির্যকভঙ্গী ওহাস্য রসের অবারিত শ্লোগান,গানের ব্যবহার বাংলানাটককে অবলুপ্ত ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করছে
:রাজাকাররে
তোরা ক্ষমা করতে পারিস, আমি পারি না?রাজাকারকে তোরা
মন্ত্রীবানাতে পারিস আমি স্বামী
করতে পারিনা।একাত্তরের দালালকে স্বাধীনতার
পদক দিতে পারিস একাত্তরের দালালের গলায় আমি মালা দিতে পারবো না ।
জিনাত
মহলের এ প্রশ্নের কোনো
উত্তর নেই।তারএই জিজ্ঞাসা দর্শক পাঠককে শুধু সচকিত করেনা।তীব্র তীরে অভিঘাতও করে।মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ভিন্নএক যুদ্ধের প্রান্তরে।মুক্তিযুদ্ধেরচেতনা
ও তার পুনরুদ্ধারের
যুদ্ধে জিনাত মহল একাই অবতীর্ণহয়,পাঠকদর্শক শ্রোতারাও যুদ্ধে সামিল হয়।সৈয়দ শামসুল
হক মুক্তিযুদ্ধেরনবপ্রজন্মেকাছেমুক্তিযুদ্ধের
সবচেয়ে সার্থক নাটকপ্রথম কাব্যনাটক
মুক্তিযুদ্ধের
সমাপ্তিতে আসন্ন বিজয়লগ্নে গ্রামে প্রবেশ করছে মুক্তিবাহিনী।এ সংবাদ গ্রামে মাতবর যে যুদ্ধের সময়
পাকিস্তানীদের দালালী করেছে এমনকি নিজের মেয়েকে তুলে দিয়েছে পাকিস্তানীসেনা অফিসারের হাতে ভীত সম্ভ্রন্ত হয়ে পড়ে।অবশেষে সাতবারের
সামনে আত্মহত্যা করে তার আত্মজা-মুক্তিযোদ্ধারা হত্যার করে মাতবরকে।‘নাটকটির এই পরিণতিতে পাই
যে,পাকহানাদার বাহিনিকে মিত্র বানিয়ে
যারা এদেশ,মাটি ও মানুষের সাথে
বেঈমানী করেছে তাদের পরিনতি এমনি হয়, হতে হয়।ধর্মের নামে দেশকে তারা ভুলুণ্ঠিত করেছে,অপমানিত করেছে মানবতার
কলংকিত করেছে জাতির পবিত্র
সত্তাকে। সৈয়দ হকে রকৃতিত্ব এখানেই যে, তিনি বিষয়টি কাব্যনাট্যের মত সুউচ্চ শিল্পাঙ্গিকের
মাধ্যমে অত্যন্ত সফলভাবে
আনতে পেরেছেন।কাব্যনাট্যে আঙ্গিকে রচিত এই নাটক আঞ্চলিক
শব্দের নিপুন ব্যবহারে যুদ্ধকালীন উত্তর বাংলার গ্রামীণ জীবনকে শব্দবন্দী
করে ধরে রেখেছে।আঞ্চলিক ভাষার গতিময়তা, শব্দকুলশী প্রয়োগ যুদ্ধচলাকালীন জীবন বাস্তবতার কাব্যিক উচ্চারণে পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’বাংলাদেশের নাট্য সাহিত্যের-একটি পালাবদলকারী নাটক হিসেবে বিবেচিত। পাইকের সংলাপে প্রতিশোধের
বাণী উচ্চারিত, তা বুঝি বাংলাদেশের
জন্য এখনও প্রাসঙ্গিক
: এদিকে,
এদিকে সব আসেন এখন
দেখাইয়া
দেই সব কোথায় কখন
কি
গজব কি আজাবে ছিল
লোকজন
জালেমের
হাতে ছিল যখন শাসন
শত
শত মারা গেছে আত্মীয়স্বজন।
এদিকে,
এদিকে সব আসেন তখন
দেখাইয়া
দেই সব কিভাবে কখন
মেলেটারি
ঘাঁটি নিয়া ছিল কয়জন
কারা
কারা সাথে ছিল তাদের তখন।
অবিলম্বে
সারা দেশে ঘেরা প্রয়োজন
জলদি,জলদি সব চল
এখন
তাঁর আর একটি কাব্যনাট্য
‘গণনায়ক’ সেক্সপীয়রের
‘জুলিয়াস সীজার’ অবলম্বনে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পটভূমিতে রচিত নাট্যকারেরা দুটি দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনার মুল্যায়ন করেছেন। এক: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভয়াল বাস্তবতা নির্মাণ, হানাদার বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ। দুই: স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের
চেতনার অবমায়িত চিত্র, মুক্তিযোদ্ধাদের বিপর্যস্ত অবস্থা, স্বাধীনতাবিরোধীদের উত্থান, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল ইত্যাদি।নাট্যকারেরা মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি দেখছেন কমিটমেন্টবা সামাজিক দায়বদ্ধতার দৃষ্টিকোন থেকে।তাই মুক্তিযুদ্ধে
চেতনা নাটকে বিস্তার লাভ করেছে বহুমাত্রিক চেতনায়।অনেক
নাটক-নাট্যকার আছেন। খুব
সংক্ষিপ্ত পরিসরে নাট্য সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের রূপরেখা অঙ্কনের একটি অপূর্ণাঙ্গ প্রয়াস মাত্র।বর্তমানেনাটকে মুক্তিযুদ্ধের ব্যবহার ক্ষীয়মান ধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। পরিবেশ পরিস্থিতিগত কারণেই এককালের
প্রিয় বিষয় পরে আকর্ষণ হারায়। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি প্রতিনিয়ত ছোবল মারছে।এ দ্বন্দ্বাত্মক অবস্থার
পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নাটক প্রত্যাশিত।তবু
বাঙালীর সবচেয়ে গৌরবের
ও গুরুত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধ-সংগ্রামী বাঙালী জাতিসত্তাকে নব নতুন
আশা আর আকাঙক্ষার বাণী
শোনাবে প্রতিনিয়ত।নাটক হবে আরও শিল্পশোভন,মানসমৃদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী
শ্রেষ্ঠ সাহিত্য মাধ্যম।
http://www.alokrekha.com
বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ : অধ্যাপক বাদল বরণ বড়ুয়া ॥ নাটকে মুক্তিযুদ্ধের কথা পরে খুব ভালো লাগলো। তথ্যবহুল লেখা। নাটকে মুক্তিযুদ্ধের কথা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম। লেখককে সাধুবাদ।
ReplyDelete