শুভাশীষকে চিঠি ' ......………. মুনা চৌধুরী ---- এপিসোড ৪ …
নিলিশ্বরী,
সত্যিই তো, যখন তোমায় চলে যেতে বলেছিলাম তখন
আমি কাঁদছিলাম না তবে কাঁদছিলো আমার পৃথিবী।
The day I told you to leave, I wasn’t crying but my world was.
The sun, the moon, the celestial bodies were sobbing.
Looking at me, the angels with wings were weeping
the infinite mind was grieving as well ....
Even today
the space that I occupy, the compartment, the walls, the roof
the lofty canopy, ceiling of stars- cry.
Now I know
how to cry, grieve, mourn, weep, sob and even
howl without restraint under strong impulse of pain, suffering, agony.
And for sake of peace
peace of fragment of a second, I cry.
I cry wholeheartedly.....
শুভাশীষ
১৮ই জুন ২০১৬,
টাওয়ার হিল, লন্ডন
শুভ,
ভাবছিলাম তোমায় লিখবো এভাবে বলোনা, কেননা আমরা দুজনই তো কেঁদেছি নীরবে, শব্দহীন হয়ে। কিন্তু তুমি এতো
সুন্দর করে লিখলে,
আমাকে বলতেই হলো লিখে যাও ধ্রুব সত্য গুলো। Let your moist heart combine with your rousing,
timeless sentiments and let those verses be my eternal bliss!
শোনো, তুমি ছিলে রাজপুত্র সিদ্ধার্থ তাই
মায়াবতীর মোহনীয় বাহুবন্ধনের মায়ায় তুমি বাধা পড়োনি। জগৎবিস্বাসী বুদ্ধ যা সঠিক ভেবে
নির্বাচন করেন সকলে সেটাই মেনে নেয়। আমিও তাই মেনে নিয়েছিলাম। তোমার 'উচিত' টাই জিতে গিয়েছিলো আমার 'ইচ্ছে'র কাছে। রবিঠাকুর যেমন বলতেন 'আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের
আশায়'- আমিও তেমনি জেনে শুনে সর্বনাশের আশায় বসে থাকতাম। ভাবতাম তোমাদের মতো দেবতাদের
দৌরাত্ম যেখানে,
আমার মতো নমঃশূদ্রদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় সেখানে। যুগে যুগে
প্রেমিকরা যখন প্রেমিকাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, ইতিহাস তখন অস্ত্রধারী সৈনিকের
দৃষ্টির মতো থেকেছে নিস্পৃহ। আমার মৃত্যু আমি অনেক আগেই দেখেছিলাম, শুরু থেকেই দেখেছিলাম, কিন্তু মানতে চাইনি কখনোই।
এতো দ্রোহ, এতো অগ্নুৎপাত পেরিয়ে এরপরও বলতে হয়
19 years zoomed
in a whisker and you came to wake me up in a world full of sunshine. কাহলিল জিব্রানই যেন সত্যি হলো কেননা, ‘Sorrow and joy come together and when one sits
alone with you at your board- the other is asleep upon your bed’. দুঃখ যখন সঙ্গী হয়ে পাশে থাকে, সুখ তখন শিওরেই ঘুমিয়ে রয়। আমরা জানতাম কালো মেঘের ওপারেই
থাকে রুপোর ছটা। অবিনশ্বর তো এভাবেই ওর সৃষ্টিগুলোকে পরম যত্নে দেখে রাখেন। ওর উপর
আমার বিশ্বাস হারায়নি কখনো কিন্তু আমি আটকে ছিলাম এক মহাকালে যে কালের কোনো আদি
ছিলোনা, অন্ত ছিলোনা,
মধ্য ছিলোনা ... 'নান্তঅং ন, মধ্যনং ন, পুনস্তবাদিম'। ঠিক জানতাম একদিন দেখা হবে, সেইদিনের জন্য ছায়াপথে অপেক্ষার
প্রয়োজন হবে না,
তার আগেই আমাদের দেখা হবে নিশ্চয়ই। 'আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগল
প্রেমের স্রোতে,
অনাদি কালের হৃদয় উৎস হতে'- আর তাই আমরা আছি, আমরা ছিলাম, আমরা থাকবো। হয়তো নীরবে থাকবো, তাই না হয় থাকি, এটাওতো আর কম প্রাপ্তি নয়।
নিলিশ্বরী
২১শে জুন ২০১৬,
ধানমন্ডি, ঢাকা
PS. ঘুম ভেঙে উঠতেই, জানালা খুলে দেখি বাড়ির সামনের
মস্ত বড়ো কৃষ্ণচূড়াটায় থোকা থোকা লাল ফুল ফুটেছে। তুমি কি জানতে আমি ফুল খুব
ভালোবাসি? সাদামাটা আমি তোমার কাছে মনে মনে কাঠগোলাপ চাইতাম। কেন জানো? কাঠগোলাপ আমার শৈশব। কাঠগোলাপ
কুড়িয়ে বড়ো হয়েছি তাই। আমাদের স্কুলে অনেক কাঠগোলাপের গাছ ছিল। রোজ সকালে ক্লাস
শুরু হবার আগে আমরা কাঠগোলাপ কুড়াতাম। কিন্তু এখন তোমার কাছে চাইবো কাঠগোলাপ অথবা
কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া কেন জানো? তুমি যখন এসেছিলে আর যখন চলে গেলে তখন ওটা ছিল কৃষ্ণচূড়ার
সময়। তাই every year
when কৃষ্ণচূড়া returns with vengeance with its abundance of luscious red it reminds me
of May. তোমার সাথে আবার যদি কোনোদিন দেখা হয়, আমার জন্য যদি তুমি কিছু আনো, এক থোকা কৃষ্ণচূড়া অথবা কাঠগোলাপ
এনো। দুহাতে তোমার প্রেম কৃষ্ণচূড়া অথবা কাঠগোলাপে মুড়িয়ে আমায় দেখতে এসো।
মেঘহরিণী,
তুমি কি চাও আমি সত্যি লিখে যাই
আমার মনের কথাগুলি?
লিখবো তবে, ‘তোমার জন্যে লিখতে পারি এক পৃথিবী’। জয় গোস্বামীর মতো করেই বলি তাহলে, “তুমিই কি সেই মেঘবালিকা? তুমি কি সেই?’… ‘শোনো, এখন আমি মেঘ নেই আর, সবাই এখন বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়’/বলেই হঠাৎ এক পশলায় চুল থেকে নখ/আমায়
পুরো ভিজিয়ে দিয়ে/অন্য অন্য বৃষ্টি বাদল সঙ্গে নিয়ে/মিলিয়ে গেল খরস্রোতায়/মিলিয়ে
গেল দূরে কোথায়/দূরে দূরে…
আমি কেবল বসে রইলাম/ভিজে একশা কাপড়জামায়/গাছের তলায় বসে
রইলাম/বৃষ্টি নাকি মেঘের জন্য’! তোমার জন্য সত্যি সত্যি তাই লিখে যাচ্ছি মেঘহরিণী, কিশোরবেলার সেই হরিণী।
যে কৃষ্ণকালো অন্ধকারাচ্ছন্ন
দিনগুলি পার করেছি তোমায় তাড়িয়ে দিয়ে, সেই দিনগুলিতে আমার একটাই ভাবনা ছিল, আমি নিজেকে ক্রমাগত জিজ্ঞেস করতাম will I die with same kind of thirst for not getting
something so small, so insignificant? কোনো নুয়ে পড়া কৃষ্ণচুড়ার জন্য, কোনো উইলোর ঝাড় কিংবা শুকনো
বকুলফুলের মালার জন্য আমিও কি ঝরে যাবো একদিন? তুমি বার বার বলো আমি ছিলাম
রাজপুত্র সিদ্ধার্থ কিন্তু আমি তো আসলে সিদ্ধার্থ ছিলাম না, আমি করুণাসিন্ধু বুদ্ধ হতে চাইনি
কখনো। সেই মহামানবদের পথের পথিকও আমি হতে চাইনি। কিন্তু স্বয়ং অবিনশ্বর আমাকে একটা
কঠিন পথের পথিকে রূপান্তর করতে চাইতেন। আমি তো একজন সাধারণ মানুষ ছিলাম। একজন
সাধারণ মানুষ,
যার কিছু সাধারণ স্বপ্ন ছিল মাত্র। All I wanted was to be me. A simple, silly, very
ordinary me to exist in this exotic world of সোনালী
ডানার চিল, নদী-মাঠ-ভাঁটফুল,
ধানসিঁড়ির পাড়, গাছের সাথে সখ্যতা, নদীর সাথে কথাবলা, আর বেগুন ক্ষেতের ছোট্ট টুনটুনি
পাখিটা। My question
was why couldn’t I live in this enchanting world of জীবনানন্দ
আর মহাদেব with less
pain, just with less pain. কবি হুমায়ুন আজাদ মারা যাবার কিছুদিন
আগে যেমন লিখেছিলেন,
'আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো/ছোট ঘাসফুলের
জন্যে/একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে/আমি হয়তো মারা যাবো চৈত্রের বাতাসে/উড়ে
যাওয়া একটি পাঁপড়ির জন্যে/একফোঁটা বৃষ্টির জন্যে/... খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে/খুব ছোট দুঃখের জন্যে/আমি
হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে/একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে’.
ভাবতাম অবিনশ্বর তো বসেই থাকে তার
ভান্ডার খুলে,
দিতে চায় তাই বসে রয়। তিনি তো সেই রাজাধিরাজ যার দুয়ারে আমি
ফিরে এসেছি বারবার। তার জন্যই তো মুঠো বেঁধেছি ছোট্টবেলার বিশুদ্ধ প্রভাত বন্দনা। আশ্রয়ের
জন্য তো ওর দিকেই হাত বাড়িয়েছি, অনন্তর তো ডেকেছি তাকেই, ওর বেদিতেই তো অর্ঘ দিয়েছি, প্রণত থেকেছি ওর সমুখেই। ভেবেছি
এতো ভালোবেসিছি যাকে তার সন্তোষ পাই না কেন? জগৎসংসারে যাকে তুচ্ছ করে সবাই ফেলে
দেয়, সে মানুষকে নাকি তিনি কুড়িয়ে নেন বুকে- তবে? আমিও তো চাইনি অতকিছু শুধু চেয়েছি
সাধারণ মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকবার অল্প কিছু।
I faked my days; I faked my hours. I was at my nadir and showed the
world I was the happy jolly guy but in reality I was living a charade for all I
knew and wanted to quit the stage I was performing for. সোমনাথ
রায় এর মতো I died in a
thousand dreams, strolled on a million lands, obstacles deterred me from
achieving salvation making my life a baffling journey of countless miles. গ্রীক ট্রাজেডির নায়কের মতো I felt there wasn’t a tragedy that has eluded me, not even a
thunderstorm that hasn't passed by my door but I stood alive unscathed, asking
for 'more' !
মনে আছে তুমি সবসময় বলতে আমার চোখে
তুমি দুঃখ দেখতে পেতে। সেই বেদনা কিসের জানতে চাইতে। হেসে বলতে, 'আমারে পাচ্ছে সহজে বোঝো/তাইতো এতো
লীলার ছল/বাহিরে যাহার হাসির ছটা/ভেতরে চোখের জল' . হয়তো এমন কোনোদিন আসবে যখন আমি
তোমায় বলবো, সব বলবো তোমায়। জেনে রেখো, আমার ভেতরের যত হাহাকার তার রহস্য আমি শুধু তোমার কাছে ছুটে
এসেই বলতে পারি।
ভালো থেকো নীল। May the Almighty bless you for the kindness you harbor
in your soul.
শুভাশীষ
২৪ শে জুন ২০১৬,
টাওয়ার হিল, লন্ডন
শুভ,
“এতোকাল
পেরিয়েও সূর্য কখনো পৃথিবীকে বলেনা ‘তুমি ঋণী'আমার কাছে’। দেখো, কি আশ্চর্য সেই ভালোবাসা যা আলোকিত করে পুরো আকাশ’- হাফিজের কথাটা মন দিয়ে শোনো আর
ভেবে দেখো সত্যি তুমি আমার কাছে অথবা আমি তোমার কাছে, আমরা কেউ কারো কাছে ঋণী নই। আমরা
তার কাছে ঋণী যিনি আমাদের মিলিয়েছিলেন, যিনি আমাদের এই অনিন্দসুন্দর ভালোবাসায় আলোকিত করেছিলেন, যাঁকে চিনবার জন্য আমাদের
নির্বাচিত করেছিলেন আর যার পথে আমাদের হাটিয়েছিলেন।
Don’t you know the ‘Devine Secret’ is veiled in the beginning of the
creation? The Beloved was a hidden treasure and He wanted to be known, so He
created the Lover. এই ‘Devine Secret’ এর রহস্য জানবার জন্যেই যুগে যুগে আমাদের জাগরণ!
আমাদের জাগরণ রহস্যের দুয়ার খুলবার চাবি ছিল মাত্র যা আমাদের সেই আলোকিত জগতের
সন্ধান দিতে পেরেছিলো। অবিনশ্বর সেই কঠিন পথে আমাদের হাটিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তিনিই আবার আমাদের সেই পথ
পার করিয়েছেন পরম মমতায়,
পরম স্নেহে, পরম ভালোবাসায়। Now we bleed inside out, within us, without us, like a beautiful love
story and everything within us is for the Beloved!
আমার জীবনের কঠিনতম ক্রান্তিলগ্নে, আমি ডুবে ছিলাম বিজন ব্যথায়, হিরণ দাহে, গভীর শোকানলে, যখন নতুন বসন্ত আসতো বারবার মরা
সূর্যমুখী নিয়ে,
বুনো হাওয়া অশান্ত বাতাস নিয়ে- সেই তখন বাবা বুঝতে পেরে
একদিন আমায় ডেকে বলেছিলো আম্রপালি’র গল্প। আমার ‘দাস্তে শিফা’ বাবা। বাবার রোগীরা বলেন বাবার হাত ধরলে নাকি তারা সুস্থ
হয়ে যান। ওরা আরো বলেন,
বাবার কথা শুনলেও তারা নাকি মনে সাহসপান, তার বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে আরোগ্য
লাভ করেন। জীবনের কঠিনতম মুহূর্তে, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও বাবা ভাঙেননি, দৃঢ়তার সাথে মুখোমুখি হয়েছেন
পৃথিবীর। আমি নিজেও আরোগ্য লাভ করেছিলাম বাবার কথায়। গল্পের ছলে বাবা বলেছিলো, অবিনস্বরে সমর্পিত হও, সেখানেই মুক্তি পাবে। যদি ভিক্ষুর
দলের সাথে আম্রপালি যুক্ত হয়ে ঈশ্বরের সন্ধান পেতে পারে, তুমিও ঈশ্বরের সন্ধানে সমর্পিত করো
নিজেকে। তোমার পথের ঠিকানা তুমি নিজেই খুঁজে পাবে।
আমিতো চিরকাল বাবার মেয়ে ছিলাম।
বাবা যেমন বিশ্বাসীদের দলে ছিলেন, আমাকেও তিনি শৈশব থেকে বিশ্বাসীদের দলে থাকার মন্ত্রে
দীক্ষা দিয়েছিলেন। বাবার দেখানো পথের পথিক হয়ে আমি সেই ভয়ানক দাহ থেকে বাঁচতে
পেরেছিলাম। এখন তোমার জায়গায় তুমি থাকো, আর আমার জায়গায় থাকি আমি। কার্তিকের গানের মতো 'তুমি আমার পাশে বন্ধু হে বসিয়া
থাকো, একটু বসিয়া থাকো! আমি মেঘের দলে আছি, আমি ঘাসের দলে আছি, রোদের মধ্যে রোদ হয়ে যাই, জলের মধ্যে জল, বুকের মধ্যে বন্ধু একটা নিঃশূণ্য
অঞ্চল!.... তুমি না হয় এভাবে থাকো বন্ধু হে, বসিয়া থাকো, একটু বসিয়া থাকো'! জেনে রেখো, তুমি এভাবে পাশে চুপ হয়ে থাকলেও
আমি অনেক ভালো থাকি।
কাল পুরোনো কাগজপত্র ঘাটতে গিয়ে
পেয়েছি অনেক বছর আগের কিছু লেখা। সেই যে বললাম বিজন ব্যথা, হিরণ দাহ পাড়ি দিয়েছিলাম, সেই সময়কার লেখা। ১৯ বছর পাড়ি দিয়ে
তোমায় দিলাম। দেরি হলো অনেক, ক্ষতি কি, তাওতো তোমায় দিয়ে গেলাম….
He remembered first rays on her face.
She remembered his childlike juvenile laughter.
He hadn't spoken word.
Neither did she.
She was calm.
So was he.
He hadn't been able to bring himself to say goodbye.
Neither did she.
They were both brought to a standstill, a halt.
Days, months years, decades continued and memories of
আকাশ ছাড়িয়ে থোকা থোকা লাল
কৃষ্ণচূড়া,
bluebells, rustic kisses and yellow garlands passed but they both wondered why
it was so hard to say goodbye.
নিলিশ্বরী
29 শে জুন ২০১৬,
ধানমন্ডি, ঢাকা
নীল,
‘কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে … /সকলই নিবে কেড়ে, দিবে না তবু ছেড়ে/মন সরে না যেতে, ফেলিলে একি দায়ে’- কাল গেয়েছি বন্ধুদের আড্ডায় আর
ভেবেছি রবিঠাকুর কি আমার মনের কথাগুলোই লিখেছিলেন? তিনি জানতেন মানুষ ভালোবাসায় ঘায়ে
কাঁদতে পারে কেমন করে। মানুষের মনের যত ধরণের দুঃখের ভার, বেদনার কথা আমাদের রবি কেমন করে
নির্দ্বিধায় সব বলে গেলেন।
প্রত্যেকবার তোমার চিঠি পড়ে
অনেক্ষন থমকে বসে থাকি। কি বলবো উত্তরে, কিভাবে শুরু করবো বুঝতে পারি না। ‘বিস্মিত হয়ো না ভাগ্যের চক্রপাকে…
মর্যাদা দিও সেই পাত্র যা ধারণ করো, যে মাটি দিয়ে তা তৈরী…
ফারহাদ ঝরিয়েছিলো রক্ত-অশ্রু শিরিনের ঠোঁটের
আশায়
আজো দেখি সেই স্থানে টিউলিপ ফোটে
টিউলিপ জানে ভাগ্য ঠকায় কখন, কিভাবে.
ফুলেল পাপড়ি-মোড়া সুরাপাত্র ধরো, যতক্ষণ না পর্যন্ত স্মৃতি ধূসর না
হয়.
…মুসলাবাদ এর হাওয়া, রুকনাবাদ এর জল
থমকে দেয় বর্তমান,
হন্য করে তাড়িয়ে বেড়ায় ঘর থেকে বহুদূর.
হাফিজের মতো পান কর সূরা যতক্ষণ না
পর্যন্ত বীনার সুরে তন্দ্রাচ্ছন্ন হও.......
কেননা হৃদি-সুখ বোনা থাকে শুধু মাত্র রেশম তন্তু-এ’! তোমার গত চিঠির উত্তর তোমার
প্রাণের হাফিজ সিরাজী’র কথায় নাহয় এভাবেই দিলাম।
কাল ছেলেদের জন্মদিন। তুমি ওদের আশীর্বাদ
করবে না? তুমি ঠিক যেমনটা বলতে,
তোমার স্বপ্নের হিজল পাতা হৃদয় দুলিয়ে তুমি হবে ‘Love stuck’ মা। আমার স্ত্রী জুলিয়াও ঠিক
তেমনটা ছেলেদের বেলায়,
একেবারে ভালোবাসায় বিদ্ধ। তোমার ভাষায় she is the love-struck mother. তুমি
মজা করে সবাইকে বলতে তোমার ছেলে হলে সে হবে ‘আলী কা দুলারা'। হযরত আলী (র:), চতুর্থ খলিফা যাঁকে বলা হয়
মিস্টিকদের মিস্টিক,
সুফীদের সুফী, সেই আলী’র দুলারা অর্থ বালক। যে বালকেরা খানিকটা মিস্টিক হয়, মানুষের জন্য যাদের মমতামাখা নরম
হৃদয় থাকে, যারা খানিকটা জোতির্ময়, অপাপবিদ্ধ, খানিকটা অন্যরকম, স্রষ্টার ভাবনায় ভাবুক শুভ্র সেই বালকদের নাকি এই নামে ডাকা
হয়। ওদের ভেতর নাকি সুন্দরের এস্রাজ বাজে, মনের গালিচায় বোনা থাকে রেশমের
কারুকাজ। ওরা মানুষের অন্তরে নাকি শুধু দেখে আলোর ফুল, দেখে সপ্তর্ষি পর্যন্ত অলীকতম
অনিন্দসুন্দর সব সৃষ্টি। তুমি বলে যেতে তোমার সেই ছোট্ট ছেলের হৃদয়ে হলুদ ফুলের
রোশনাই ছড়াবে,
যে রোশনাই দিয়ে সে অবিনশ্বরকে আর পৃথিবীর মানুষকে
ভালোবাসবে। তুমি কোনো রাজপুত্র চাইতে না, বলতে তোমার ছেলে হবে মাটির মানুষ। টাকা-পয়সা, নাম-যশ, ক্ষমতা’র উপরে ঈশ্বরের যে পরম সত্য জগৎ আছে, তোমার ছেলে সেই জগতের মানুষ হবে।
পৃথিবীর ইঁদুর দৌড়ে,
জীবনে প্রতিদিন যারা জাগতিক কাজকর্মে জিততে চায়, তোমার ছেলে তাদের দলে থাকবে না।
তোমার এইসব পাগলামো কথাবার্তা আমি আর আমাদের বন্ধুরা শুনে মজা পেতাম, আমরা হাসতাম। তোমার কথার আলো
আঁধারি খানিকটা বুঝতাম,
খানিকটা বুঝতাম না।
আজ দেখো, তোমার কোনো ছেলে হলো না। ছেলে হলো
আমার। ঈশ্বর তোমায় পুত্র-শূন্য করে আমার কোল জুড়ে দিলেন দুইজন ‘আলী কা দুলারা’। কি আশ্চর্য আমার যমজ ছেলেদের
মানুষের জন্য ভীষণ মমতা,
সেই সাথে স্রষ্টার প্রতি অগাধ ভালোবাসা। ওরা সত্যি সত্যি
খানিকটা মিস্টিক,
একেবারেই তোমার কল্পনার সেই আলী কা দুলারাদের মতো! ওরা অনেক
মজার মজার সাংঘাতিক সব ঘটনা ঘটায়, তোমায় আরেকদিন বলবো।
তোমার প্রার্থনা অবিনশ্বর ফেলতে
পারেননি। অবিনশ্বর জানতেন তুমি বেশি খুশি হবে যদি তোমার পছন্দের জিনিসগুলো তিনি
আমায় দেন, আর সেকারণে তিনি আমায় দুহাত ভরে দিয়েছিলেন। আমি তোমায় পুরোপুরি চিনতে পারিনি
ঠিক, কিন্তু তিনি তো সর্বজ্ঞানী, তাই তিনি তোমায় ঠিক চিনেছিলেন।
শুভাশীষ
৪ঠা জুলাই ২০১৬,
টাওয়ার হিল, লন্ডন
শুভ,
‘আমার মা না হয়ে তুমি যদি অন্য কারো মা হতে
ভাবতে তোমায় চিনতেম না, যেতেম না ওই কোলে?
দুই জায়গায় থাকতো বাড়ি
আমি থাকতাম এই গায়েতে তুমি পারের
গায়ে
..... দিন ফুরোলেই তোমার কাছে পেরিয়ে যেতাম নায়ে’ । সেই যে তুমি বললে রবিঠাকুর সব
মনুষ্য ভাবনার কথা লিখে রেখে গেছেন, আসলেই তাই অবিনশ্বর কোন মায়ের কল্পনার অমল ধবল বালককে যদি
অন্য কারো করে পাঠান,
মনের সেই ভাবনাগুলো কেমন হবে সেটাও তিনি মায়াভরে লিখে রেখে
গেছেন। সে কারণে তার কবিতায় খোকা বলে সে ঠিক পারের গাঁয়ে, নৌকো পাড়ি দিয়ে, তার না দেখা মাকে দেখতে যাবে!
এভাবে রবিঠাকুরের কবিতা অতলে অন্তরীণ, গভীরতায় গভীর কিন্তু সেইসাথে অবাক করা স্বাভাবিক সাবলীল সব
ভাবনার মালাগাথা!
তুমি যে বললে তোমার ছেলেদের
জন্মদিনে আশীর্বাদ করবো,
জন্মদিন নামের বেপারটা নিয়ে আমার অসম্ভব কান্না ছিল, এখনো আছে- সীমাহীন কান্না। আর আছে
চরম নিস্তব্ধতা। তোমার-আমার দুজনার জন্মদিন নিয়েই কান্না। আমার কোনো জন্মদিনে তুমি
আমাকে কোনোদিন আশীর্বাদ করোনি, শুভেচ্ছা দাওনি। আমায় অবাক করে তুমি আমার জন্মদিনে অদৃশ্য
হয়ে যেতে। একইভাবে তোমার জন্মদিনে আমি তোমায় খুঁজে পেতাম না। তোমায় শুভেচ্ছা
পাঠালেও তার কোনো উত্তর আসতো না, কোনো সাড়া মিলতো না। তোমার এই বেপারগুলি আমি কোনোদিন
বুঝিনি। আমাকে ভয়ানক কষ্ট দেয়া অনেক বেপারগুলির মধ্যে এগুলোও আমি মেনে নিয়েছিলাম।
আমি চোখ বন্ধ করে,
নীলকণ্ঠ হয়ে বিষ পান করতাম আর অপেক্ষায় থাকতাম দিনটা কখন
শেষ হয়ে, তুমি কখন আবার স্বাভাবিক হবে। দিনগুলো পার হতো, তুমিও একদম স্বাভাবিক হয়ে যেতে যেন
কিছুই হয়নি! তুমি অবাক হয়ে বলতে তুমি জানোনা কবে আমার জন্মের দিন। আমার জন্ম হয়তো
এমন কোনো অভিশাপ ছিল তোমার জীবনে, যে দিনকে তুমি মনে করতে চাইতে না। দিনগুলো পার হয়ে কখন নতুন
সূর্যোদয় আসবে সেই নুতন দিনের অপেক্ষায় আমি থাকতাম। বলেই ফেললাম তোমায়, ভাবলাম সবই তো বলেছি তাই এটাও নাহয়
বলে দেই। কেন জানি আজকাল সারাক্ষন মনে হয় আমার সময় ফুরিয়ে আসছে। জীবনের এই
গোধূলিলগ্নে দাঁড়িয়ে এমন কোনো প্রশ্নবোধক চিহ্ন তোমার কাছে রেখে যেতে চাইনা আর!
ক্ষমা করে দিও আমায় এভাবে বলার কারণে।
অবশ্যই লিখবো আমি, তোমার ছেলেদের জন্মদিনে ওদের
আশীর্বাদ করে নিশ্চই লিখবো। আমি ওদের আশীর্বাদ-পত্র এই চিঠির সাথেই দিয়েছি। ওদের
দিয়ে দিও। জানি,
তোমার মতো বাবা যাদের, সেই 'আলী'র দুলারা' ছেলেরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক
না কেন, তারা মানুষ হিসেবে অনিন্দসুন্দর মনের, আলোকিত মনের মানুষ হবে। তারা আমার
স্বপ্নে থাকা ঈশ্বরের ভাবনায় ভাবুক অমৃতের সেই বালক, তবে একজন নয় দুজন!
জন্মদিনে ছেলেদের আদর আর সেইসাথে
জুলিয়াকেও শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা দিও। আমি জানি, তোমায় মনে করিয়ে দিতে হবে না-
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার তোমায় যে দিয়েছে সে তোমার সন্তানদের মা। যেমন ভালোবাসায়, আদরে, স্নেহে, যত্নে, সম্মানে, তাকে রেখেছো, যেন আমি দেখে যাই একই ভাবে তুমি
তোমার এই রাজকন্যাকে আগলে রেখেছো আজীবন। আমি ভালোবেসেছিলাম তোমার সেই জীবন দর্শন
যেখানে সমগ্র নারীকুলের প্রতি ছিল তোমার ভক্তি আর শ্রদ্ধাবোধ। আমি জানি, তুমি অন্তরে ধারণ করো সেই বাণী ‘One who treats ones wife like a Princess must be
raised by a Queen’. আমি চোখ বন্ধ করে বলতে পারি, এই কথার জলছাপ তোমার হৃদয় জুড়ে
যিনি এঁকে দিয়েছিলেন তিনি তোমার মা। তোমার শান্তিনিকেতনে পড়ুয়া আঁকিয়ে মা, যার লাবণ্য আর মাধুর্যে আমি এখনো
মুগ্ধ হই, যে মা তোমার রাজরানী। ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা’- অবিনশ্বর যেন আমাদের মা বাবাকে সেই
যত্নে আর ভালোবাসায় রাখেন ঠিক যেভাবে তারা আমাদের শিশুকালে পরম যত্নে আর ভালোবাসায়
তাদের আশ্রয়ে আশ্রিত করেছিলেন।
আর কিছু বলতে ভালো লাগছেনা। শরীরটা
ভালো নেই কয়েক মাস ধরে,
আর থাকতে না পেরে আজ ডাক্তার বাড়ি গিয়েছিলাম। সব হয়, শুধু হয়না নিজের জন্য দেখভাল।
Gratitude to the Almighty to make the world conspire in such a way that
I had to meet you in those faraway sun kissed days of my life. ভালো থেকো।
নিলিশ্বরী
৫ই জুলাই ২০১৬,
ধানমন্ডি, ঢাকা
স্নেহকমলেষু লক্ষী ছেলেরা,
আজ তোমরা সতেরোটা বসন্ত পেরিয়ে
এলে! অবিনশ্বরের কাছে পাঠিয়ে দিলাম লাল খামে তোমাদের জন্য আকাশ ছোয়া আশীর্বাদ।
তোমাদের বাবা বললো তোমরা নাকি ভীষণ
সব মজার মজার কান্ড ঘটাও যেকারণে বাবা একেবারে মুগ্ধ! আর তোমাদের মা নাকি তোমাদের
ভালোবাসায় তেমনিভাবে বিদ্ধ। তোমাদের মতো লক্ষী ছেলেদের জন্মদিনে নতুন করে উপদেশ
দেবার কিছু থাকেনা তবে আশীর্বাদ করবার অনেক কিছু থাকে।
আমি তোমাদের পড়াশোনা, জাগতিক সব বিজয় ইত্যাদি নিয়ে কোনো
কথা বলবোনা। রবিঠাকুরের খোকা যেমন বলেছিলো, 'মা যদি হও রাজি, বড় হয়ে আমি হবো খেয়া ঘাটের মাঝি'- তেমনি তোমরা যদি বলো আলো হবো, আমি বলবো তাই হয়ো। কেননা তোমরা যাই
হও না কেন, যে কাজই করোনা কেন,
সব কাজের মধ্যে দিয়ে তোমরা যে পৃথিবীর মানুষকে ভালোবাসবে, আমি সেটা জানি। হীরে-জহরত, ম্যানশন-স্যাতো, প্রাইভেট প্লেনএ হলিডের মতো বৈভবের
বৈপরীত্যে এই অসম্ভব পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে যারা আধপেটা, যাদের মাথার উপর ঠাঁই নেই কোনো।
আমি শুধু বলবো তোমাদের সব কাজের মধ্যে ওদের মনে রেখো, ওদের জীবনে ফোটাতে চেষ্টা করো আলোর
ফুল।
আমার মতো ভাঙাচোরা, হৃদয়সর্বস্ব মানুষের আজকের এই
বৈভবের উন্মর্গ পরিবেশে বেঁচে থাকা বড়ো কষ্ট। আমি শুনেছি, তোমরা মাটির মানুষ, সহজিয়া মানুষ- তোমরা সবসময় সাধারণ
মানুষের শুভাশুভ দেখো,
মন্দ দেখোনা। রাজা যায়, রাজা আসে, রাজপুত্র যায়, রাজপুত্র ও আসে। তোমাদের মতো মাটির
মানুষদের অতলস্পর্শী হৃদয়বোধ আজকে এই বিপন্ন সময়ে বড়ো দরকার- রাজপুত্রদের চাইতেও
অনেক বেশি দরকার। তোমরা এমনিভাবে মাটির মানুষ হয়ে বেঁচে থেকো, পৃথিবীর মানুষদের এভাবে ভালোবেসো
যেও, এই প্রার্থনা করি।
এখন অনেক রাত। আমি ঘুমোতে যাইনি।
ঘুম যে আসেনা সোনারা। একা একা বসে ভাবছি কোন কথাগুলি তোমাদের জন্য লিখে রেখে যাবো
আলোর ঝর্ণার কাছে,
বুনো ফুলের স্তুপে, যেগুলো নির্ভেজাল ভালোবাসা হয়ে
তোমাদের জন্য রয়ে যাবে আজীবন।
অনেক আদর নিও।
তোমাদের নীল খালামনি
৫ই জুলাই ২০১৬,
ধানমন্ডি, ঢাকা
http://www.alokrekha.com
কতদিন পর আলোকরেখায় কোন লেখা প্রকাশিত হল। আমরা হতাশ হয়ে গেছিলাম যে আলোকরাখা বুঝি বন্ধ হয়েই গেলো। খুব ভালো লাগলো। আলোকরেখার কলার পথ মসৃন হোক এই কামনা করি।
ReplyDeleteদারুন লেখা ও অভিব্যক্তি। উত্কৃষ্ট চমৎকার জীবন বোধের প্রকাশ।অপূর্ব বিষয় বস্তু,ভাষাভাব ও শব্দচয়ন ও রচনা শৈলী মিলিয়ে অনবদ্য ও অনিন্দ্য। এখানে শুধু শুভ আর নীলের কাহিনী গাঁথা হয়নি আকল প্রেমের কথা বর্ণিত হয়েছে। আলোকরেখাকে ও লেখন মুনা চৌধরী অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ।
ReplyDeleteচিঠিগুলো দারুন অভিব্যক্তিতে পূর্ন । শুভাশীষ ও নিলীশ্বরী'র মধ্যে যে কথোপোকথন চিঠির মাধ্যমে ভাব ও সাহিত্যের যে আদান প্রদান তা অনবদ্য। যেন গল্প পড়ছি। খুবই ভাল লাগলো। তাছাড়া জ্ঞান ও প্রজ্ঞার যে ছাপ লেখকের জ্ঞানের পরিধির প্রমান করে। খুব ভালো লাগলো। লেখক মুনা চৌধুরীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteচিঠিগুলো শুধু শুভাশীষ ও নিলীশ্বরী'র ভালবাসার আদান প্রদান নয়। উচ্চ মার্গের সাহিত্য। এখানে দুজনের ভালো বাসার কথা ,ব্যক্তিগত জীবন যাত্রা সুফিবাদ বিশ্ব সাহিত্য গল্পের ছলে লেখককের লেখাকে করেছে সমৃদ্ধ।
ReplyDeleteলেখকের হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতির কি গভীর প্রকাশ।গহীন জগতে কখনো শান্ত যদি আবার কখনো জোয়ার ভাটায় আবার খরস্রোতা নদীর মত আঁকড়ে ধরে। অভিমানী চেতনার অভিব্যক্তি এই চিঠিগুলি । অনিন্দ্য সুন্দর "শুভাশীষকে চিঠি' গুচ্ছ মুনা চৌধুরীর দেশি ও বিশ্বসাহিত্যের উপর সাধনা ও জ্ঞানের পরিধি প্রকাশ করে । আমরা অপেক্ষায় থাকি এমন লেখা পড়ার জন্য । মনটা ভরিয়ে দিল। দারুন অনুভূতি বার বার পড়তে ইচ্ছে করে। ! আলোকরেখাকে ও লেখককে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ।
ReplyDeleteঅনিন্দ্য সুন্দর "শুভাশীষকে চিঠি' গুচ্ছ মুনা চৌধুরীর দেশি ও বিশ্বসাহিত্যের উপর সাধনা ও জ্ঞানের পরিধি প্রকাশ করে । আমরা অপেক্ষায় থাকি এমন লেখা পড়ার জন্য । মনটা ভরিয়ে দিল। দারুন অনুভূতি বার বার পড়তে ইচ্ছে করে। ! আলোকরেখাকে ও লেখককে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ।
ReplyDelete"ভাবতাম তোমাদের মতো দেবতাদের দৌরাত্ম যেখানে, আমার মতো নমঃশূদ্রদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় সেখানে। যুগে যুগে প্রেমিকরা যখন প্রেমিকাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, ইতিহাস তখন অস্ত্রধারী সৈনিকের দৃষ্টির মতো থেকেছে নিস্পৃহ। " কি দারুন কথাগুলো। লেখক মুনা চৌধুরীর চিঠি গুলো পরে মনটা ভারী হয়ে উঠলো। দারুন লেখা। খুব ভালো লাগলো।
ReplyDelete'আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায়'- আমিও তেমনি জেনে শুনে সর্বনাশের আশায় বসে থাকতাম। ভাবতাম তোমাদের মতো দেবতাদের দৌরাত্ম যেখানে, আমার মতো নমঃশূদ্রদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় সেখানে। যুগে যুগে প্রেমিকরা যখন প্রেমিকাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, ইতিহাস তখন অস্ত্রধারী সৈনিকের দৃষ্টির মতো থেকেছে নিস্পৃহ। আমার মৃত্যু আমি অনেক আগেই দেখেছিলাম, শুরু থেকেই দেখেছিলাম, কিন্তু মানতে চাইনি কখনোই।এতো দ্রোহ, এতো অগ্নুৎপাত পেরিয়ে এরপরও বলতে হয়
ReplyDeleteশুভাশীষ ও নীলেশ্বরী বিমূর্ত হয়েও আমাদের কাছে মূর্তমান। শুভাশীষকে চিঠি ' এটি উচ্চমানের ও হৃদয়ের গভীর অনুভূতি দিয়ে লেখা একটা "মাস্টার পিস্ ".আগের চিঠিগুলো পড়ে চোখ ঝাপসা হয়ে গেছিল বার বার চোখ মুছতে হয়েছে। এবারের চিঠিগুলো বুকের ভেতর টনটন করে উঠলো হৃদয় ভারী হয়ে গেলো ।অনন্য ! অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।
ReplyDelete"দুঃখ যখন সঙ্গী হয়ে পাশে থাকে, সুখ তখন শিওরেই ঘুমিয়ে রয়" শট বাধা বিচ্ছেদের মাঝেও নিলিশ্বরী'র এই আশাবাদ অনন্য ! অনেক অনেক ভালো লাগলো। ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।
ReplyDeleteপ্রথম পর্ব থেকে এই পর্বে নীল বিষেশ করে শুভাশীষ অনেক পরিপক্ক। এখানেই লেখকের সার্থকতা। একটা কাল্পনিক চরিত্রকে বাস্তব করে তুলে ধরা ,প্রতিটি চিঠি এক একটা যেন ইতিহাস। কালের স্বাক্ষী। খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন আরো ভালো ভালো লেখার আশায় থাকলাম।
ReplyDeleteভালো লাগলো। সুন্দর লেখা।
ReplyDeleteWhy are you hidden ?
Deleteএতো জ্ঞান গর্ভ লেখা মুনা চৌধুরীর লেখাকে সমৃদ্ধ করেছে। বহু কিছুর মধ্যে লেখক চিঠির মাধ্যমে একটা বাবা ও মেয়ের নিবিড় সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। এই অংশটুকু আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। খুব উচ্চ মানের লেখা। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো লেখক ও আলোকরেখার জন্য।
ReplyDeleteশুভাশীষকে চিঠি ' লেখনীতে মুনা চৌধুরী অবিনশ্বরের সাথে তাঁর যে যোগাযোগ তা অংকিত করেছেন অপূর্ব ভাবে। কি অনবদ্য এই কথা গুলো "অবিনশ্বর তো বসেই থাকে তার ভান্ডার খুলে, দিতে চায় তাই বসে রয়। তিনি তো সেই রাজাধিরাজ যার দুয়ারে আমি ফিরে এসেছি বারবার। তার জন্যই তো মুঠো বেঁধেছি ছোট্টবেলার বিশুদ্ধ প্রভাত বন্দনা। আশ্রয়ের জন্য তো ওর দিকেই হাত বাড়িয়েছি, অনন্তর তো ডেকেছি তাকেই, ওর বেদিতেই তো অর্ঘ দিয়েছি, প্রণত থেকেছি ওর সমুখেই। ভেবেছি এতো ভালোবেসিছি যাকে তার সন্তোষ পাই না কেন? জগৎসংসারে যাকে তুচ্ছ করে সবাই ফেলে দেয়, সে মানুষকে নাকি তিনি কুড়িয়ে নেন বুকে- তবে? আমিও তো চাইনি অতকিছু শুধু চেয়েছি সাধারণ মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকবার অল্প কিছু।"
ReplyDeleteMy heartfelt appreciation to all readers of Shubhashish ke Chiti. Keep on reading Alokrekha and God bless you all.
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর "শুভাশীষকে চিঠি ' পড়ার জন্য এতদিন অপেক্ষা করতে হয়। মুনা চৌধুরী ও আলোকরেখার কাছে বিনীত নিবেদন যেন "শুভাশীষকে চিঠি ' তাড়াতাড়ি প্রকাশ করার জন্য। আমরা অধীর অপেক্ষায় আছি আগামী লেখা পড়ার জন্য।
ReplyDeleteThank you Kobita Roy for liking the novel. 'Shubhashish ke Chithi' is published once a month only because Alokrekha scheduled it that way. Also there are variety of writings that are published by Alokrekha to have intereesting contents for all the readers. Next episode of 'Shubhashish ke Chithi' will be published around 25th March. Cheers.
ReplyDeleteদারুন
ReplyDeleteমন ছুঁয়ে গেলো
মন ভারাক্রান্তও হয়েছে বটে
অনেক ভালো লেগেছে
লেখককে ধন্যবাদ