এক বাউলের
ভিন ধারাপাত
মেহরাব
রহমান
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
মাইনা
লইছো এই বান্দার শত
অনাচার
মাইনা
লইছো বাউলের কত অইত্যাচার
এই
উড়াকু সংসার
আমারে
বান্ধে বারবার
জানি
আমি ছাইড়তে হবে এই অবাক জীবন
ডাক
পোইড়লে যাইতে হবে অইন্য এক ভূবন
যে
থাইকবার সে ক্যান হারায়
সকাল সকাল
যার
যাইবার সে থাইক্কা যায়
য্যান চিরকাল
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
বহুত
দুঃখ দিছি কইন্যা তোমারে আমি
কতযে
দিয়াছি যন্ত্রনা জানে অন্তর্যামী
পিরিতি
পিরিতি কইরা বান্ধিয়াছি ঘর
এতো
কষ্ট লইয়া তুমি করো নাই পর
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
কইন্যা
তোমার বুদ্ধি য্যান সোনার মোহর
পদ্মার
যৈবতি ঢেউয়ে
কী
দারুন চমকায় অষ্টপ্রহর
চাঁদনী
রাইতে উজানে ভাসে আলোর বইন্না
ধইন্নো
ধইন্নো সোনামুখ বধূ রাজকইন্না
আমার
মতন বেভুল বাউলেরে
বুকে
লোইছো টাইন্না
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
কইন্না
মোটরযান চালাও য্যান সুদূর সাম্পান
হাল
ধইরা বইসা থাক আমার বিবিজান
নগরে
বন্দরে ঘুরি দুই মহাজন
নাও
ছাইড়া যাও তুমি
পাল
উড়াইয়া যাও
পাশে
বইসা আমি য্যান আউলিয়া ফকির
আল্লাহ়্
আল্লাহু বইল্লা ধরি নানান সুর
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
নুতন
বৌ ছিলে যখন সুন্দরী তখন
রশইঘর
যাইতে দেই নাই যখন তখন
সোনারঙ
যদি যায় অঙ্গারে পুড়িয়া
ভয়
হইতো মনে মনে থাকিয়া থাকিয়া
পাখির
পালকের লাহান শরীল ছিল হায়
ভয়
হইতো বাতাসে না উইড়া চইলা
যায়
সময়ে
ভালোমন্দ সবকিছু বদলায়
আদমও
বদলাইছে যেমন হওয়ার হাওয়ায়
ভিতরে
বাহিরে কইন্না তুমিও যেমন
আমিও
বদলাইছি বহুত তোমারি মতন
লাইলী
মজনুর প্রেমদরিয়ায় ভাসি দুই-জনা
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
বাহুরও
বন্ধনে তারে বন্ধনী পরাইছি
ভেলুয়া
সুন্দরীরে লইয়া নাও হারাইছি
অসীম
দরিয়ায় ভাসাইয়াছি ভেলা
কে
জানে কে জানে
কোথায়
থামিবে এই অচেতন খেলা
দেওয়ানা
এই পাগল জানে
জানে
আমার জান-বন্ধু সে
অদৃশ্য
আন্ধারে থাকে যে
অসীম
আলোকে থাকে সেই লোক
তারে
পাইলে ভুইলা যাই দ্যুলোক ভূলোক
হারায়
হারায় বলি কিছু-না হারায়
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
শোনেন
শোনেন মহাজনা শোনেন দিয়া মন
সকলেরে
শোনাই আমি বন্দনারো গান
উত্তরে
বন্দনা করি
দক্ষিণে
বন্দনা
পূবেতে
বন্দনা করি
পশ্চীমে
বন্দনা
অন্তরে
বন্দনা করি
বাহিরে
বন্দনা
তোমারে
বন্দনা করি
ওগো
দিল-পরান
এক
বাউলের ভিন ধারাপাত করিয়া বর্ণন
কবিতায়
বলিতেছি জীবনো গাঁথন
চান্দেরইরোশনাই
ঢাইলা আইলা আমার ঘরে
কবুল
কবুল বোইলেছো কইন্যা
দেন
মোহর দেই নাই
বলিব
কথক আমি শেষ কথাখান
শোনো
শোনো মহারানী আমার দিল-পরান
তোমারে
দিয়াছি আমি অমৃত সমান
সবে
ধন নীলমনি আমার হৃদয়খান
রঙ্গিলা
সাম্পানে আমি তুইলেছি তোমারে
ছাইড়োনা
ছাইড়োনা কইন্যা কখনও আমারে
যদি
পড়ি তুফান ঝড়ে
সঙ্গে
লইয়া ভাইসা বেড়াই অদক্ষ এক মাঝি
মুখ
ফুইটা বলো কইন্যা তুমি আছ রাজি
আমরা
দুইজনা যাইবো দূর বহু দূর
অন্তহীন
চঞ্চলা ওই সময় প্রপাত
এইখানেই
শেষ কৈরলাম
এক
বাউলের ভিন ধারাপাত
http://www.alokrekha.com
দাম্পত্য জীবনের আসল ছবিটা তুলে ধেরেছেন কবি মেহরাব রহমান তার কবিতায়। কবুল বলেছে কন্যা কিন্তু দেনমোহর দেওয়া হয়নি। এই দুটি লাইনে পুরো কবিতাটির নির্যাস। খুব ভালো লাগলো ভিন্নধর্মী একটা কবিতা পড়ে। অভিনন্দন।
ReplyDeleteসুহৃদ মিতা রহমান
Deleteঅনেক কৃতজ্ঞতা
পাঠকের ভালোলাগা আমাকে উজ্জীবিত করে
এক বাউলের ভিন ধারাপাত " এক ভিন্ন ধারায় কবিতা। কবি মেহরাব রহমান এই কবিতার মাধ্যমে এক ধরণের স্বীকারোক্তি করেছেন। যে কন্যা কবুল বলেছে সে তার সর্বত্র দিয়ে বাউলের জীবন ধরে রেখেছে বাস্তবতায়। খুব ভালো লাগলো এই ভিন্ন ধরণের কবিতা পড়ে। অনেক ভালোবাসা কবি .
ReplyDeleteসুপ্রিয় মোহন সিরাজী আপনার ভাললেগেছে যেন আমি সুখী বোধ করছি
Deleteধন্যবাদ
"এক বাউলের ভিন ধারাপাত " এক ভিন্ন মাত্রার কবিতা। এক বাউলের নিজের কথা। বাউলের ছন্নছাড়া জীবনকে তার জীবন সাথী "কইন্যা " তাকে জীবন বোধ শিখিয়েছে শত কষ্ট সহ্য করেও ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখে। খুব সুন্দর কবিতা। বড্ডো ভালো লাগলো। ভালো বাসা কবি।
ReplyDeleteসুপ্রিয় নাদিম ইকবাল
Deleteআমি কবিতা নিয়ে নিরীক্ষা করি
জানি আমি এরকম কবিতা কবিতা হিসাবে সফলতা নাও পেতে পারে
তবু লিখি
আপনার মতো বোদ্ধা পাঠকের ভালোলাগা মানে অনেক পাওয়া
কৃতজ্ঞতা; ভালো থাকবেন
কবি মেহরাব রহমান "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " কবিতায় এক ভিন্ন ধারা যোগ করেছেন। গ্রাম্য ভাষায় কি অপূৰ্ব জীবনের চিত্র অঙ্কন করেছেন। খুব ভালো লাগলো কবি।
ReplyDelete•
আমার বিনম্র কৃতজ্ঞতা ও অনেক ভালোবাসা
Delete• কবি মেহরাব রহমান "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " কবিতায় কইন্যার যে চিত্র অংকিত করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার। তার বুদ্ধি যেন সোনার মোহর অপরূপ রূপবতী যেন চাঁদের আলো ,সোনামুখ যেন রাজকন্যা। কি দারুন সব উপমা ব্যবহার করেছেন কবি এই কবিতায়।
ReplyDeleteঅনেক কৃতজ্ঞতা
Deleteঅনেক শুভ কামনা
কবি মেহরাব রহমান "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " কবিতায় কবির হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতির কি গভীর প্রকাশ।গহীন জগতে কখনো শান্ত যদি আবার কখনো জোয়ার ভাটায় আবার খরস্রোতা নদী।কবির ভালোবাসার চেতনার অভিব্যক্তি এই কবিতা। নিদারুন একটা কবিতা। অনেক শুভেচ্ছা কবি
ReplyDeleteকৃতজ্ঞতা , শ্রদ্ধা ও অনেক কৃতজ্ঞতা
Deleteকবি মেহরাব রহমান "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " আমরা অপেক্ষায় থাকি কবি মেহরাব রহমানের কবিতার জন্য। "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " মনটা ভরিয়ে দিল। দারুন অনুভূতি কবিতা বার বার পড়তে ইচ্ছে করে। ! আলোকরেখাকে ও কবি মেহরাবকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা ।
ReplyDeleteধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা
Deleteআপনাদের অপেক্ষাকে আমি পূরণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করবো
কবি মেহরাব রহমান "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " উত্কৃষ্ট চমৎকার জীবন বোধের প্রকাশ।অপূর্ব বিষয় বস্তু,ভাষাভাব ও শব্দচয়ন ও রচনা শৈলী মিলিয়ে অনবদ্য ও অনিন্দ্য এক কবিতা। আমরা অপেক্ষায় থাকি কবি মেহরাব রহমান কবিতার জন্য। মনটা ভরিয়ে দিল। দারুন অনুভূতি কবিতা বার বার পড়তে ইচ্ছে করে। ! আলোকরেখাকে ও কবিকে অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা
ReplyDeleteজ্বি দাদা আপনাদের ভালো লাগলে আমি অনেক উৎসাহ বোধ করি
ReplyDeleteকবি মেহরাব রহমান "এক বাউলের ভিন ধারাপাত " কবিতায় শুধু রূপের বনর্ণা করেন নাই এক বাউলের আউলা জীবনকে বেঁধেছে সাংসারিক জীবনে। এই কবিতার মুখ্য বিষয়বস্তুই তাই। খুব ভালো লাগলো কবিতাটা পড়ে। অনেক অনেক শুভেচ্ছা কবি। আলোকরেখাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন একটা কবিতা পড়ার সুযোগ করে দেবার জন্য।
ReplyDeleteসুপ্রিয় মেঘনা গুহ
Deleteআমার কবিতা পড়ার এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য বিনম্র কৃতজ্ঞতা
আলোকরেখার লেখক কবিদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। তাঁরা আমরা যারা মন্তব্য করি তাদের মন্তব্যের উত্তর দেন। এতে আমাদের উৎসাহ দ্বিগুন হয়ে যায়। হয় তাঁদের সাথে কথোপথন হচ্ছে। অনেক অনেক শুভকানা আর ভালোবাসা।
ReplyDeleteআলোকরেখাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।আবার নুতুন করে শুরু করার জন্য। আমরাতো হতাশ হয়ে গেছিলাম। নতুন লেখা পেয়ে আমাদের উৎসাহ দ্বিগুন হয়ে গেছে । অনেক অনেক শুভকানা আর ভালোবাসা।
ReplyDelete