আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি
সানজিদা রুমি
আমি ৭১'র যুদ্ধ দেখিনি
দেখিনি ক্ষত বিক্ষত মানুষের লাশ শকুনে খাওয়া
শুনিনি কোন ধর্ষিতা নারীর ক্রন্দন।
আমি শুনেছি আমার শাশুড়ির পুত্র হারানোর আর্তনাদ
কারণে অকারণে তার রোষ
বলতে না পারা ক্রোধের দহনে
এক ষোড়শী পুত্রবধূকে ঝলসানো।
না আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি
দেখিনি আগুনে পড়া বিদ্ধস্ত বাংলাদেশ।
দেখেছি একটি পরিবারকে ধ্বংসস্তুপ মাঝে -
ধিকি ধিকি জ্বলতে ,
আমিও সেই আগুনে হয়েছি দগ্ধ
পারিনি কিছুই মুখ ফুটে বলতে।
আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি ,শুনিনি
পাকসেনার বেয়োনেটে গাঁথা কোন শিশুর চিৎকার বা গ্রেনেডের গর্জন
কিন্তু স্বামীর বুকে মাথা রেখে শুনেছি মেশিন গান আর বুলেটের স্পন্দন।
না আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি ,শুনিনি
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের চরম পত্র
শুনেছি স্বাধীনতার গল্প বাসর রাতে --
উত্তেজনায় শিহরণে তাকে দেখেছি বারংবার কাঁপতে।
সে নব বধূর চুলের সোঁদা গন্ধে নয়
নিঃশ্বাসে বারুদের ঝাঁজালো গন্ধময়।
আজও যখন সে চোখ বোজে নিবিড় আলিঙ্গনে
ক্ষণিকে ওঠে চমকে --মনে পোড়ে
নিজ হাতে মারা মুখ পাক সৈন্যের।
এভাবেই কাটাচ্ছি দিন জীবন
একটি যুদ্ধে বিধস্ত নিয়ে একটি পরিবার।
না আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি ,দেখিনি
উল্লাসে ফেটে পড়া রাজাকার
শুধু জেনেছি কুলষিত হয়েছে আমার স্বাধীনতা
তাইতো উড়েছে দালালের গাড়ির বহরে--
লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার রক্তে অর্জিত পতাকা।
সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত http://www.alokrekha.com
কবিতাটা এত সুন্দর যা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয় ।আমরা স্বাধীনতার অনেক গল্প শুনেছি কিন্তু এক্তা যুদ্ধ বিধ্বস্ত পরিবারের কষ্ট সাঞ্জিদা রুমি দারুন করে লিখেছেন।অনেক শুভ কামনা আপনার পরিবারের জন্য
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি" কবিতাটা অনেক হৃদয়গ্রাহী। আমরা স্বাধীনতার অনেক কবিতা পড়েছি। কিন্তু এই কবিতাটি ভিন্নধর্মী। খুব সুন্দর কবিতা।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "আমি স্বাধীনতার যুদ্ধ দেখিনি" কবিতাটা অনেক গভীর ও হৃদয়স্পর্শী। সানজিদা রুমির এই পরিবারের সাথে আমার নিবিড় সম্মন্ধ। সানজিদা রুমি অপূর্ব ভাবে বর্ণনা করেছেন। খুব ভালো লাগলো পড়ে। আশা করি পুরো পরিবারটি সুন্দর হোক। ভালোবাসা।
ReplyDelete