তেপান্তরের মাঠে
মুনা চৌধুরী
শোকের প্রত্নখনি বুকে চেপে তুমি বলবে আমায়
"উঠবে,
তুমি জেগে উঠবে।
নরম ঘাসের দেশে, লাল গোলাপের ক্ষেতে
জলপাই বাগানে, তুলতুলে মেঘের পৃথিবীতে
জেগে উঠবে আবার।
অবিশ্বাস্য বেদনার হাত থেকে, নরহত্যার পৃথিবী থেকে
বধ্যভূমির শহর থেকে, বিপন্ন মানুষের নিরন্ন জীবন থেকে
যোজন যোজন দূরে
শেষ আকাশের শেষ ঠিকানায়
জেগে উঠবে আবার।
তখন-
তোমার জন্য টাঙিয়ে দেব বেলী ফুলের দেয়াল
তোমার জন্য রেখে দেব সহস্র রাত্রি গান গাইবার।
শান্তির ঘুম ঘুমিয়ে নিও আমার বুকে
ফেরেশতাদের বলে দেব পাহারা দিতে তোমার স্বপ্নগুলো হাজার বছর।
নিযুত কোটি বিকেল দেব তোমায় কবিতা পড়ার
অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, আর শব্দের হেয়ালী
আরো দেব লেখার জন্য বাধঁছাড়া সময়
বিচিত্র প্রাচীন সব পৌরাণিক কল্পকথা, পুণ্যবতীদের গল্প, বেদনার আদি গাঁথা।
আর
চোখে চোখ রেখে রাতভর গল্প বলবো- যত রাজ্যের কথা
যেমনটি বলেছিলেন মহামতি প্লেটো
দার্শনিক হেগেল
যীশুর শিষ্য অগাস্টিন
মহামতি বুদ্ধ
মনুষ্য সন্তান লালন
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ
অথবা
কবিকুল চূড়মনি মাইকেল
আর কে কি এঁকেছিলে দু'হাত দিয়ে
যে হাতগুলো হয়েছিল বিধাতার হাতে রূপান্তর-
মাইকেলএঞ্জেলো, রাফায়েল, পিকাসো, গ্রেকো আর জয়নুল।
তারপর শোকের প্রত্নখনি বুকে চেপে তুমি জপে যাবে
সেইসব স্বর্গীয় পংক্তিমালা-
'ফাবি আইয়ি আলাই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবুন
তাবারা কাসমুকা রাব্বিকা জিলজালালী ওয়াল ইকরাম'
আর অপেক্ষায় রবে অনন্তজন্মে আবার দেখা হবার
যখন সময় জমাট বাধবে একখণ্ড রুপোলি ভোর"।
http://www.alokrekha.com
কবি মুনা চৌধুরী তেপান্তরের মাঠে স্বর্গীয় প্রেমের উপমা দিয়েছেন। দারুন একখানা কবিতা উচ্চ মানের। খুবই ভালো লাগলো। কবি আপনি ভালো থাকেন আর এমন উচ্চ মানের লেখা আমাদের উপহার দেন।
ReplyDeleteতেপান্তরের মাঠে কবিতায় কবি মুনা চৌধুরী প্রেমকে উচ্চ মার্গে পৌঁছে দিয়েছেন। স্বর্গ সুখের উপমা দিয়েছেন যেখানে নরম ঘাসের দেশে, লাল গোলাপের ক্ষেতে ,জলপাই বাগানে, টাঙিয়ে দেবে বেলী ফুলের দেয়াল সহস্র রাত্রি গান গাইবার।শান্তির ঘুম প্রিয়র বুকে ফেরেশতাদের বলে দেবে পাহারা দিতে স্বপ্নগুলো হাজার বছর।নিযুত কোটি বিকেল দেব তোমায় কবিতা পড়ার অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, আর শব্দের হেয়ালী আরো দেব লেখার জন্য বাধঁছাড়া সময় বিচিত্র প্রাচীন সব পৌরাণিক কল্পকথা, পুণ্যবতীদের গল্প, বেদনার আদি গাঁথা।কিযে ভালো লাগের কবিতা পেলাম অনেকদিন পর। শুভ কামনা কবি।
ReplyDelete"তেপান্তরের মাঠে " কবি মুনা চৌধুরী'র প্রেমের উচ্চ মার্গীয় কবিতা।প্রিয়াকে বুকে চেপে ধরে প্রেমিকের কষ্টের মাঝেও এক মোহনীয় রূপের বর্ণনা করেছেন। খুব ভালো কবিতা।
ReplyDelete"তেপান্তরের মাঠে " প্রেমের উচ্চ মার্গীয় কবিতা।শুধু প্রেমের কবিতা নয়। বিশ্বমানের কবিতা। এখানে বেহেস্তের রূপের অপরূপ বর্ণনা করা হয়েছে।আরো বর্ণিত হয়েছে যখন সে জেগে উঠবে তখন থাকবে না কোন হানাহানি বধ্যভূমির শহর থেকে, বিপন্ন মানুষের নিরন্ন জীবন। অনেক শুভেচ্ছা কবি।
ReplyDelete"তেপান্তরের মাঠে " বিশ্বমানের কবিতা। বিষয়বস্তু ,স্বর্গীয় বর্ণনা ,বিশ্বের মহামতীদের কথায় নন্দিত হয়েছে কবিতাখানি। আমি কবি মুনা চৌধুরীর জোট প্রশংসা করি তা যথেষ্ঠ নয়। ভালো থাকবেন কবি। আমরা আপনার লেখা পেলেই পড়ি অতি উৎসাহের সাথে। আলোকরেখাকে ধন্যবাদ।
ReplyDeleteবুকের ভেতরে ধারণ করা এক অসহনীয় কষ্টের ক্ষোভকে, তার ব্যাপ্তিকে, তার গভীরতাকে ছবির পর ছবি এঁকে পৃথিবীর সবাইকে, তার প্রেমিককে জানান দেয়া প্রেমিক মুনা চৌধুরীর এই "তেপান্তরের মাঠে "! এ জীবনে অভীষ্ট প্রেমিকের বাহুপাশে আবদ্ধ হয়ে নিজেকে বিলিয়ে দেবার, এই জনমে একসাথে পৃথিবীর তাবৎ শিল্প-সংস্কৃতি-সংগীত ও জ্ঞানের মার্গীয় চর্চা থেকে প্রাপ্ত স্বর্গীয় আনন্দ ও জীবন-যুদ্ধে জীবনের পথে মুখোমুখী হওয়া মানুষের প্রতি মানুষের অবিচার আর নির্মমতা প্রসূত বেদনা আর হাহাকার - এর কোন কিছুই জানা হলোনা ও ছোঁয়া হলোনা, তার এই দুঃখে, তার অভিমানে শীতের বরফ জমা প্রান্তরে বয়ে যাওয়া হু হু বাতাসের মত পাঠকের হৃদয়ের তন্ত্রীর প্রতিটি কোষে এক তীব্র ভালোলাগা কষ্ট দেয়া এই কবিতা!
ReplyDeleteদারুন ভালোলাগার কবিতা। সত্যিকারে কোন প্রেমিক এমন করে বলতো কেবল কবির কল্পনাতে নয়। খুব ভালো লাগলো পড়ে। ভালোবাসা কবিকে আকাশ সমান।
ReplyDeleteকবি মুনা চৌধুরীর "তেপান্তরের মাঠে" কবিতাটি খুব দারুণ মন কাড়লো। চমৎকার সম শব্দ সম্ভারে সমৃদ্ধ কবিতাটির জন্য কবিকে অভিনন্দন।
ReplyDeleteকবিতা মানেই কি কষ্ট ?
ReplyDeleteকিছু পাঠক হয়তো জানেন না তাদের জন্য বলছি, এ কবিতার উদ্ধৃতি- "ফাবি আইই আলাই রাব্বিকুমা তুকাজজিবুন/ তাবারা কাসমু রাব্বিকা জিলজালালী ওয়ালইকরাম" পবিত্র কোরান এর সূরা আর রহমান [৭৭:৭৮] থেকে নেয়া. এই দুটো লাইন এর অর্থ "আমরা সৃষ্টিকর্তার কোনো নিয়ামত কি অস্বীকার করতে পারি? যে সৃষ্টিকর্তা কল্যাণময় প্রভু ও বিপুল করুনার অধিকারী."
ReplyDeleteআমি জাত কবি না, কিন্তু পাঠকেরা আমায় কবি বলে সম্বধন করে আমায় সম্মানিত করেছেন. নিঃস্বন্দেহে পাঠকদের কাছ থেকে আমার এ প্রাপ্তি- সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটা বিশেষ নিয়ামত. পাঠকদের আমার পক্ষ থেকে অনেক শুভকামনা.