পবিত্র নারীরা মুনা চৌধুরী
আকাশ জুড়ে রক্তের নদী ঢেলে দিয়েছিলো ওদের অপদেবতারা! হয়তো পূজোর নৈবেদ্য দেয়া সত্ত্বেও সেদিন রক্ষা পায়নি সাহসী নারী গোত্র-প্রধানেরা, যাদের অপবিত্র হতে হয়েছিল আগ্রাসনবাদী বর্বর পুরুষদের হাতে!! এভাবেই শুরু হয়েছিল নারীদের অধিকার হারানোর সূত্রপাত, ওদের সমাজ ও রাজনৈতিক অবস্থানের ‘ইতি-টানা’। হ্যা, আমি হাজার হাজার বছর আগের Paleolithic Ice Ageএ আমার পূর্বপুরুষদের ক্ষমতা হারানোর কথা বলছি যখন নারীরা পূজনীয় ছিল, গোত্রের মাথা ছিল, সম্মানিত ছিল। মানব সৃষ্টির এতো হাজার বছর পেরিয়েও তাই পুরুষদের মতো এতো নারী সক্রেটিস, দাভিঞ্চি, ম্যাকিয়াভেলি, অগাস্টিন, আইনস্টাইন, নিউটন, দান্তে, শেক্সপীয়ার, মাইকেলএঞ্জেলো, রবীন্দ্রনাথ অথবা লালন ফকির তৈরী হয়নি। এতো বলে ভুল করেছি, বলা উচিত নগন্যও তৈরী হয়নি যদি আমরা হাজার বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করি। একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায় নারীর সমস্ত অযোগ্যতা পরিস্থিতিগত, হাজার বছর ধরে এটা পুরুষের একটা সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মাত্র।
শুধু হাজার বছরের ঐতিহাসিক পটভূমিতেই নয়, পৌরাণিক গল্পেও নারীরা ছিল অশুদ্ধ, অর্বাচীন, শীর্ষহীন- যেন মুঠোভরা অতৃপ্ত দোষের সমষ্টি। প্রায় সব পৌরাণিক গল্পেই নারীরা নগন্য, নির্বোধ, নিকৃষ্ট, হোক সেটা আমাদের উপমহাদেশের, অন্য মহাদেশের অথবা হাজার বছর আগের কোনো সভ্যতার। যদিও পৌরাণিক গল্পে আমার তেমন জ্ঞান নেই, তবুও আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু জেনেছি সেখানে নারীকুলের অমর্যাদা ছাড়া তেমন কিছু একটা খুঁজে পাইনি। গ্রিক পূরণে 'সাইরেন' তার গানে নাবিকদের মুগ্ধ করে জাহাজ আছেরে ফেলতো পাথরে; 'কিরকি' তার প্রেমিকদের জাদুমন্ত্রবলে পান করতো বিস্মৃতির পানীয় আর পরিণত করতো কুকুরে। 'এথিনা' জন্ম নিয়েছিল 'জিউস' এর শির থেকে কোন মায়ের জরায়ু ছাড়াই পূর্ণাঙ্গ নারী রূপে আর শিরোধার্য করেছিল পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব। আর 'প্যান্ডোরার' যৌনতার জন্য তো ধ্বংসই হয়ে গেছিলো পৃথিবীর স্বর্ণযুগ, আর জন্ম নিয়েছিল পৃথিবীর সমস্ত দুঃখ।
পুরান বাদ দিয়ে ইতিহাস দেখলে, ৫ হাজার বছর আগে সবচেয়ে প্রথম সভ্যতা, সুমেরিও সভ্যতায়, নারীদের সামাজিক/রাজনৈতিক অবস্থান কিছুটা থাকলেও পরবর্তী সভ্যতাগুলোতে ক্রমাগত নারীদের অবস্থান প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি নারীরা প্রথমবারের মতো তাদের মর্যাদা হারিয়েছিল মাতৃতান্ত্রিক পরিবারএর বিলুপ্তির পর, যেটা আধুনিক নৃতাত্ত্বিকদের অনুমান থেকে তৃতীয় হিমবাহের আন্তঃ:গ্লেসিয়ারের মধ্যবর্তী তুষার যুগের প্রারম্ভে। যেটা শুরুতেই বলেছি, সেই Paleolithic Ice Age এর শেষের দিকে যখন পবিত্র নারীরা প্রথমবারের মতো আগ্রাসনবাদী বর্বর পুরুষদের অপবিত্র হাতে কলংকিত হয়েছিল আর তাদের আবরণহীন খোলা শরীরের দাগ মুছে নিয়েছিল বরফের নদী। বিজ্ঞানীদের ধারণা- অঞ্চলগত, জলবায়ুগত ও আবহাওয়া জনিত কারণে নারী নেতৃত্বাধীন গোত্ররা যখন কম শীত অঞ্চলগুলিতে পরিভ্রমণ বা migrate করতে শুরু করল তখন থেকে নারীর ক্ষমতা হারানোর সূত্রপাত ঘটলো আগ্রাসনবাদী দস্যু পুরুষ গোত্রের লুন্ঠন, হত্যাযজ্ঞ আর ধর্ষণের মধ্যে দিয়ে। তখন থেকেই আগ্রাসনবাদী পুরুষেরা সমাজের মাথা হয়ে পিতৃতান্ত্রিক সমাজবাবস্থার শুরু করল। আর এভাবে একে একে পার হয়ে গেলো হাজার বছরের সভ্যতাগুলো : সুমেরীয়, মিশরীয়, হেলেনিক-গ্রিক, রোমান, সিন্ধু, চৈনিক, মায়ান, আজটেক, ইনকা, আরো অনেক। এসব সভ্যতার কোথাও নারীর তেমন সামাজিক/রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন লক্ষ্য করা যায়না।
এবার সেখান থেকে যদি আমরা আমাদের কাছাকাছি সময়ের ইতিহাস পর্যালোচনা করি দেখা যাবে, নারীরা ঠিকই নেতৃত্ব দিয়েছে নানান সামাজিক কর্মকান্ডে এমনকি রাজনৈতিক বিপ্লবেও কিন্তু এর ফল ভোগ করেছে শুধুমাত্র পুরুষেরা। ফরাসি বিপ্লবের নায়িকা 'জোয়ান অফ আর্ক্' এর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে স্বয়ং ফরাসীরা। পরাধীন ফ্রান্সের মুক্তিদাত্রী বীরকন্যাকে ফরাসীরাই 'ডাইনি' আখ্যায়িত করে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে ওর ঋন শোধ করেছে! Mary Wollstonecraft যিনি ১৭৯২ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে 'Vindication of the Rights of
Women' নামে একটা ভয়ানক বিপদজনক বই লিখেছিলেন, যেটাকে নারীবাদের প্রথম বৈপ্লবিক ঘোষণা হিসেবে ধরা হয়, যিনি ফরাসী বিপ্লবে সরাসরি ব্রিসো, ট্যালিরাড এবং আরো অনেক বিপ্লবীদের সাথে কাজ করেছেন, নারী মুক্তি আর নারী দর্শন নিয়ে লিখেছেন, তাকেও মনে রাখেনি তার বিপ্লবী পুরুষ সহ-যোদ্ধারা।
ফরাসিদের ছেড়ে এবার রুশদের দেখি, সেখানেও নারীদের ঠকিয়েছে পুরুষেরা। সমাজতন্ত্রবাদীদের অবস্থা যেন আরো শোচনীয়, আমার কিশোরী বেলার প্রথম প্রেম, প্রিয় কমরেড, সেও মনে রাখেনি সাধারণ রুশ নারীদের। যারা বিপ্লবে সরাসরি তার সাথে অংশ নিয়েছিলেন বিপ্লবের পর প্রিয় কমরেড তাদের মনে রাখেননি, মূল্যায়নও করেননি। সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৯১ সালে ভেঙে গেলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তির স্নায়ুযুদ্ধে শেষ হয়ে গেলে, পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখলো সাধারণ রুশ নারীদের ভয়ংকর পরিণতি। বিভ্রান্ত রুশ সমাজে তাদের জায়গা হলো পর্নোগ্রাফি, দেহব্যাবসা ইত্যাদি পেশায়। রুশ নারী পাচার সেই ১৯৯১ থেকে এখনো একটা বিরাট সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
এবার যদি আরব বিশ্বের কথা বলি, আরব বিশ্বে নারীদের সংজ্ঞায়িত করা হয় ফিতনা হিসেবে। আরব নারীরা তাই সঙ্গত কারণেই অবরুদ্ধ; সৌদি আরবে তাদের ভোটাধিকার আর যানচালনার অনুমতি কিছুকাল আগেও ছিলোনা। যদিও বিস্ময়করভাবে এটা ঐতিহাসিক সত্য, ১৪০০ বছর আগে তৎকালীন আরব নারীরা পুরুষদের সাথে সম মর্যাদায় ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করার মতো অনেক কাজই করেছেন। সেই দিক থেকে আরব নারীরা অবশ্যই ১৪০০ বছর থেকে ক্রমাগত পিছিয়েছে।
এর ঠিক উল্টোদিকে বুর্জোয়াদের সমাজবাবস্থায় মুখে মুখে নারীদের জয় জয়গান। ওদের যে হতেই হবে politically correct, ওদের যে দেখাতেই হবে Bourgeoisie’দের আলোর ঝলকানি! নারী স্বাধীনতার নামে বুর্জোয়া সমাজে ভোগের পণ্য হিসেবে নারীদের সর্বত্র শরীরী অবস্থান। বর্বর গ্রিক সমাজে নারীদের যেভাবে উপস্থাপন করা হতো, হাজার যুগ পেরিয়ে এ যেন ঠিক তাই- শুধু উপস্থাপনাটা ভিন্ন, যেন পুরোনো মদ নতুন বোতলে ভরে বাজারজাতকরণ। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হবার আগেও, কোনো মার্কিনিকে বলতে শুনিনি একজন কৃষ্ণাজ্ঞ ইমিগ্রান্ট একদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবে, অথবা একজন নারী রাজনীতিবিদ হোক সে হিলারি ক্লিনটন অথবা অন্য কেউ প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে জনগণের কাছে ভোট চাইবে। আজো পুরো বুর্জোয়া সমাজটা পণ্য সামগ্রীর মোহময় হাতছানি আর অনন্তকালের জন্য নারীরা ভোগবাদের সেই বিশাল বেদিতে পুষ্প স্তবক হয়ে বসে আছে। নারী স্বাধীনতার নামে নারীদের শরীরী অবস্থান এবং এটাকে বিভিন্নভাবে justify আর legitimate করা কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা এ প্রশ্ন আমার আজকের নয়।
এবার আমাদের উপমহাদেশের দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখি এখানে নারীদের দেয়া হয়েছে অভিনয় করার জন্য বিশেষ বিশেষ চরিত্র: জায়া, জননী, গৃহিনী, সর্বাঙ্গিনি আর এগুলোতে আমরাও অভনয় করে যাচ্ছি সুনিপুনভাবে- অন্য ভূমিকাগুলো থেকে আমরা পরিকল্পিতভাবে নির্বাসিত। পুরুষেরা ঠিকই ওদের পিতা, পুত্র, স্বামী, ভূমিকায় অভিনয় করে ক্ষান্ত নয়। সে পরিতৃপ্ত হয় রাষ্ট্র, সমাজ, সভ্যতায় নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় অভিনয় করতে- যেসব ভূমিকায় নারীরা অভিনয় করলে ওদের নির্বাসিত হতে হয় সমাজ সংসার পরিবার থেকে। যেমনটা হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন যে নারীদের শিক্ষা থেকে, বিজ্ঞান থেকে, শাসনকার্য থেকে নির্বাসিত করে বলা যায়না নারীরা অশিক্ষিত, বিজ্ঞানের অনুপযুক্ত আর শাসনকার্যে যোগ্যতাহীন। নারীর কোনো অযোগ্যতা নেই কেননা তার অযোগ্যতা থাকলে সে ঐতিহাসিক ভাবে পুরুষের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্র কার্যে প্রমান সহকারে অবদান রাখতে পারতোনা। তাই আবারো বলবো, নারীর সমস্ত অযোগ্যতা আসলেই পরিস্থিতিগত, যা পুরুষের একটা সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এর থেকে আমরা হয়তো কিছুটা হলেও মুক্তি পাচ্ছি আর এই মুক্তি পাওয়া কে জিবন্ত রাখতে হলে আমাদের মেয়েদের গড়ে তুলতে হবে বিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাজনীতির জ্ঞান দিয়ে, প্রজ্ঞা আর মনুষত্বের শিক্ষা দিয়ে।
পূর্বপুরুষেরা নিশ্চুপ, নেতানেত্রীরা নিশ্চুপ, সমাজ সংসারের আমরা সবাই সত্যিই নিশ্চুপ! সবাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের অপেক্ষায়, যারা জ্ঞান আর প্রজ্ঞার মশাল হাতে আসবে শিরদাঁড়া উঁচু করে ওদের উত্তরপুরুষদের জন্যে। আমাদের প্রার্থনা এটাই হবে, ওরা যেন সত্যিকার অর্থে গর্ব ভরে, মাথা উচু করে দাঁড়ায়, যেখানে মাংসস্তুপ পরাজিত হয় বেক্তিত্ত, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার কাছে। কোনো পুরুষ দেবতার কৃপায় শক্তিময়ী হয়ে নয়, ওরা
জোতির্ময় হবে নিজের তেজে। যেমন Divine Comedyতে বিয়াত্রিচে পথ দেখিয়েছিলো দান্তেকে, সুষমা, যুক্তি আর সত্য হয়ে। যেমন রবিঠাকুরের জীবনদেবতা অথবা জীবনানন্দের অনন্ত নক্ষত্রবীথি অন্ধকারে জ্বেলে রাখে পবিত্র শিখা- সম্ভোগসামগ্রী হয়ে নয়, আরাধ্য হয়ে। আমি জানি, আমাদের মেয়েদের, আমাদের উজ্জয়নীদের জয়জয়গানেই একদিন মন্ত্রমুগ্ধ হবে পৃথিবী, বিস্মিত হবে পৃথিবীর মানুষ। ওরা এমন সাহসী উত্তরপুরুষ হবে, যাদের শুভ, সাহসী আর শুদ্ধতার এক একটা কাজ, এক একটা লেখা, এক একটা জলছবি, এক একটা গান জন্ম দিয়ে যাবে হাজারো আলোর মিছিল।
http://www.alokrekha.com
পবিত্র নারীরা মুনা চৌধুরী'র গবেষণাধর্মী লেখা। নারীদের জীবন নিয়ে তিনি যে তথ্য দিয়েছেন তা সত্যি প্রশংসার যোগ্য। সেই আইস জুগ থেকে আজ অবদি নারীরের জীবন দর্পন। অনেক ভালো লাগা লেখক।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর পবিত্র নারীরা একটি গবেষণাধর্মী লেখা। "পূজোর নৈবেদ্য দেয়া সত্ত্বেও সেদিন রক্ষা পায়নি সাহসী নারী গোত্র-প্রধানেরা, যাদের অপবিত্র হতে হয়েছিল আগ্রাসনবাদী বর্বর পুরুষদের হাতে!! এভাবেই শুরু হয়েছিল নারীদের অধিকার হারানোর সূত্রপাত, ওদের সমাজ ও রাজনৈতিক অবস্থানের ‘ইতি-টানা’। " এটা এত সত্য কথা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি যে বর্ণনা দিয়েছেন ধীরে ধীরে নারীদের ক্ষমতা বিলুপ্ত হলো। আজকের দিনে নারীর কি অবস্থা তারও বনর্না পাই।অনেক কিছু জানলাম। আলোকরেখাকে ধন্যবাদ।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর পবিত্র নারীরা একটি গবেষণাধর্মী পূর্ণাঙ্গ লেখা। অতঃপর নিঃসন্দেহে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর লেখা। হাজার হাজার বছর আগের Paleolithic Ice Ageএ পূর্বপুরুষদের ক্ষমতা হারানোর কথা বলেছেন যখন নারীরা পূজনীয় ছিল, গোত্রের মাথা ছিল, সম্মানিত ছিল। মানব সৃষ্টির এতো হাজার বছর পেরিয়েও তাই পুরুষদের মতো এতো নারী সক্রেটিস, দাভিঞ্চি, ম্যাকিয়াভেলি, অগাস্টিন, আইনস্টাইন, নিউটন, দান্তে, শেক্সপীয়ার, মাইকেলএঞ্জেলো, রবীন্দ্রনাথ অথবা লালন ফকির তৈরী হয়নি। কি নিদারুন গবেষণা। খুব ভালো লাগলো লেখক ও গবেষক মুনা চৌধুরী।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর "পবিত্র নারীরা" পড়ে খুব ভালো লাগলো। নারীর ক্ষমতা বিলুপ্ত হল কি করে।বিশ্বের ইতিহাসে হাজার বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আসলেও বোঝা যায় নারীর সমস্ত অযোগ্যতা পরিস্থিতিগত, হাজার বছর ধরে এটা পুরুষের একটা সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মাত্র। অনেক শুভ কামনা লেখক। সুমিতা দত্ত
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর "পবিত্র নারীরা" পড়ে খুব ভালো লাগলো।অনবদ্য বিশদ গবেষণাধর্মী লেখা। অনিন্দ্য কথা মালা। লেখায় মুন্সিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায়। অনেক অনেক ভালোবাসা লেখক মুনা চৌধুরী। ভাল থাকবেন। সুস্থ ও সাবধানে থাকবেন।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরী "পবিত্র নারীরা" বিশদ, পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা করে লিখেছেন। তার তথ্য সঠিক কিন্তু নারীদের ক্ষমতা বিলুপ্ত হওয়া এটা পুরুষের একটা সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নয় । নারীরা নিকেই নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে নি। অযথা পুরুষদের দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরী "পবিত্র নারীরা" মুনা চৌধুরী অনেক পড়া শোনা করেছেন "পবিত্র নারীরা" লেখা লিখতে। অনেক ভালো লাগলো পড়ে। নারীরা কিভাবে ক্ষমতা হারলো তা জানতে পারলাম।" আমাদের উপমহাদেশের দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখি এখানে নারীদের দেয়া হয়েছে অভিনয় করার জন্য বিশেষ বিশেষ চরিত্র: জায়া, জননী, গৃহিনী, সর্বাঙ্গিনি আর এগুলোতে আমরাও অভনয় করে যাচ্ছি সুনিপুনভাবে- অন্য ভূমিকাগুলো থেকে আমরা পরিকল্পিতভাবে নির্বাসিত।" এই কথাগুলো ভীষণ সত্য। সত্যি খুব ভালো লাগলো। অনেক ভালোবাসা লেখক ও গবেষক মুনা চৌধুরী।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরী "পবিত্র নারীরা" নারীবাদী লেখা। কিন্তু এই লেখার সৌন্দর্য হচ্ছে কাওকে গালাগালি না করে ইতিহাসকে তুলে ধরেছেন। আমাদের সামনে এখন প্রমান সহ জলের মত পরিষ্কার নারীদের ক্ষমতা বিলুপ্তির কারণ। অনেক ভালো লাগলো।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর "পবিত্র নারীরা" পরে খুব ভালো লাগলো। অনেক অবাক ভালোবাসা। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
ReplyDeleteমুনা চৌধুরীর "পবিত্র নারীরা" লেখনীতে তিনি লিখেছেন " হাজার হাজার বছর আগের Paleolithic Ice Ageএ আমার পূর্বপুরুষদের ক্ষমতা হারানোর কথা বলছি যখন নারীরা পূজনীয় ছিল, গোত্রের মাথা ছিল, সম্মানিত ছিল। মানব সৃষ্টির এতো হাজার বছর পেরিয়েও তাই পুরুষদের মতো এতো নারী সক্রেটিস, দাভিঞ্চি, ম্যাকিয়াভেলি, অগাস্টিন, আইনস্টাইন, নিউটন, দান্তে, শেক্সপীয়ার, মাইকেলএঞ্জেলো, রবীন্দ্রনাথ অথবা লালন ফকির তৈরী হয়নি।" পড়ে এত সত্য কথা বলেছেন। আমি লেখকের সাথে সহমত পোষণ করি। অনেক ভালোবাসা। সুষ্ঠ থাকুন।
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteঅসাধারণ বিশ্লেষণ ধর্মী এই লেখায় মুনা চৌধুরী এক অকাট্য সত্য তুলে ধরেছেন
ReplyDeleteহাজার বছর ধরে এক অদৃশ্য খাঁচায় পুরুষগণ, সমাজপতিগণ , ধর্মপতিগণ নানা ছলচাতুরীতে নারীকূলকে বন্দী করে রেখেছে
পোষ মানতে মানতে নারী যেন অৱদমনে অভস্ত্য হয়ে উঠেছে
তবে আধুনিক নারী শিক্ষিত হচ্ছে
ক্রমান্বয়ে খাঁচা ভাঙতে শুরু করেছে
আমি আশাবাদী যে সেই দিন খুব দূরে নয়
এই খাঁচা ভাঙার বিশ্বময় জোয়ার উঠেছে
এই লজ্জা সকল পুরুষের
এখনো অনেক পুরুষ সেই অবদমনের অভ্যাস ছাড়তে নারাজ
যদিও বিষয়টি আমি অনেক আগেই অনুধাবন করেছি এবং আমার বিদ্যায়তনের অনেক এসাইনমেন্ট এ তুলে ধরেছি তথাপি নুতন করে
পুরুষ হিসাবে মুনা চৌধুরীর এই লেখা পড়ার পর লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে
জয় নারী-সমাজের জয়
একটা ভীষণ রকমের ভারী বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা এবং প্রচুর তথ্যের সমাবেশ একটা সীমিত পরিসরে পরিবেশনে একটা বিপদের আশংকা থাকে, সেটা হলো, পাঠকের বোধগম্যতায় বাধার সৃষ্টি। মুনা চৌধুরীর "পবিত্র নারীরা" প্রবন্ধে ওই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি বলে আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। তথ্য বাহুল্য বিষয়বস্তুতে পাঠকের মনোনিবেশে অন্তরায়ের সৃষ্টি করেছে সম্ভবত। আর প্রথম প্যারায় ব্যবহৃত "বর্বর" শব্দটি ইতিহাসবেত্তাদের লেখা বা বর্ণনা থেকে নেয়া, নাকি এই প্রবন্ধকারের উপলব্ধি প্রসূত সে প্রশ্ন করা যেতে পারে। এবং উভয় ক্ষেত্রেই ওই শব্দটির ব্যবহারের যৌক্তিকতা এই প্রবন্ধে সংযোজন নিতান্তই আবশ্যক ছিলো সেটা উল্লেখ করা যায়।
ReplyDeleteএই প্রবন্ধে সন্নিবেশিত তথ্য ও বিষয়বস্তুর focus এর প্রেক্ষিতে এর শিরোনাম সম্ভবত "শক্তিমান নারীরা" হলে বেশী যুক্তিযুক্ত হতো।
সাহসী কথা, শক্ত ভাষা।
ReplyDeleteবেশি পাঠকের উপভোগ্য করতে হলে আরো সহজ ভাষায় উপস্থাপিত হলে বিষয়বস্তু বহুজন ভোগ্য হতো এবং এই আকর্ষণীয় research finding আরো আকর্ষকীয় হতো।
আমরা যখন কোনো সমাজ, পরিস্থিতি অথবা ইতিহাস বিশ্লেষণ করি তখন ৩টা দৃষ্টিকোণ থেকে করি। প্রথমত অর্থনীতি, দ্বিতীয় সামাজিক এবং তৃতীয় রাজনৈতিক। মুনা চৌধুরীর লেখায় সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটগুলি মূল আলোচনায় সীমাবদ্ধ। যদিও নারীর আর্থিক ক্ষমতা ও ক্ষমতায়ন উল্লেখিত হলেও সেটা পূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। সব মিলিয়ে বলবো লেখাটি অত্যন্ত সুন্দর কিন্তু অর্থ- সামাজিক-রাজনৈতিক পূর্ণ বিবরণে এটা আরো বেশি সুন্দর হতে পারতো।