রেজারেকশন
মেহরাব রহমান
কাব্যগ্রন্থ : আমার কবিতা আমার ভুবন
শুক্রবার , ২৯ অক্টোবর‘ ২০২১ ইং
টরন্টো
শহরে আজ বৃষ্টির কোলাহল
ঠান্ডা ঠান্ডা... বিমর্ষ ঝোড়ো হাওয়া
সূর্য ঢেকেছে মুখ
মেঘের নেকাবে নগর টরন্টো
দারুন ভিজছে বৃষ্টিতে
হেমন্ত বাতাস পথভ্রষ্ট… ঠিকানাবিহীন
সে এসেছিলো
এইমাত্র ডাকবাক্সে ফেলে গেছে
শীতের আগমনী চিঠি
ফল'এ ঝরছে পাতা
রঙিন পত্রাবলী
ফ্যাকাশে হতে হতে… মরে গেছে
মরা পাতা
বিবর্ণ হতে হতে
রৌদ্রআগুনে পুড়ে… তামাটে রং
আহা কী ভীষণ
ভিজছে নীরবতা
ঝির্ ঝির্ শরীর কাঁপানো
জলকন্যার বিন্দুবিন্দু জলকণা
আমিও যেমন...
ভিজতে ভিজতে কাঁদছি ভীষণ
জলের জোয়ারে
ক্রুদ্ধ ঢেউয়ের
তীক্ষ্ণ আঘাতে ছুরিকাহত
কত প্রেম পেয়েছি… বিলিয়েছি
য্যানবা দাতা হাতেমতাই
যদি ক্রুশবিদ্ধ হই
আমি ও আমার সহযাত্রিণী
যীশুর মতোন দেবশিশু হই
মৃত্যুর তিনদিন পর
ঈশ্বরকি আমাদের জাগাবেন…?
অতল অন্ধকার থেকে
দূর দিগন্তে আর এক সূর্যস্নানে
যেকোনো গোলার্ধে হবেকি পুনরুত্থান… ?
Am I not approved to wake-up
Reconditioned with a spotless soul
of a new born baby
It's my desire for a mystical… RESURRECTION
And to swim
And to float unto a … to… to…
to the Treasure island of
Terribly trembling Galaxy
বায়োস্কোপে দৃশ্য পাল্টায়
ক্ষুদিরামের ফাঁসির চিত্র বদলে
পর্দায় অন্য এক ছবি
এখন কবিতায় অন্য গল্প
প্রকৃতির জাদুকরী ভেলকি বাজি
আজ বৃষ্টি মুখোশ এঁটেছে
আকাশ পরেছে
কুয়াশার সুতায় ঠাস বুনন
সাদা মসলিন শাড়ি
কপালে ঘষা সূর্য
আকাশের শুভ্র ধবল টিপ
মহাশূন্য-বাড়ির... বেগবান… ভগবান
তামাশাবাজ এক তুখোড় খেলোয়াড়
কবিকে একগাদা
কবিতার কাঁচামাল দিয়ে
পালায় কোথায় ?
কী রকম বিচ্ছিন্ন
ওলোট-পালট-উদ্ভট-বিশৃঙ্খল…
সব পংক্তিমালা
খসড়া সংশধনে কেটে যায় দিন
কাটাছেঁড়া আঁকিবুকি
তথাপি অতৃপ্ত আত্মা
শিক কবাবের মাংসের মতন
মশলা মাখিয়ে
বুকের দেউটিঘরে …
স্বপ্ন কোঠার নির্জনে...
মেরিনেড করে
ফেলে রাখতে হয় খসড়া খাতা
মোলায়েম কোমলতা প্রাপ্তির আশায় ...
বাহ্ ! ঐযে ফিরে আসছে …
শব্দের নীরব মিছিল
গুলশান নিকেতন থেকে হাঁটতে হাঁটতে
অতিক্রান্ত হাতিরঝিল
আসতে আসতে গুলিস্তানের মোড়ে…
পথ পরিবর্তন...
উপসংহারে কবিতা এসে
থমকে দাঁড়ায়
ভুল দরজায় কড়া নাড়ে
অন্যঘরে সে নুতন অতিথি
ঐযে দেখছনা ঐখানে
তাকাও ঐদিকে
যাপিত জীবন উদযাপন
দুধসাদা সফেদ পবিত্র বিছানা
সে… সে… সে…
আহা সুহাসিনী
নির্ঝরিণী
মেঘেঢাকা তারা
তার দুহাত পদ্ম-করতল
লালিত্য ভরা যৌবন
আমার ঘরে দিনপ্রতিদিন
নবান্ন উৎসব
অমর প্রেম করছে অমর
এমনকি কিশোর ভোর
টগবগে তরুণ দুপুর
রাঙা পায়ে মল
যন্ত্রনা বিষাদ ক্লান্ত মঞ্চে
বাজাচ্ছে মায়াবতী নুপুর
যুবতী বিকেলে সীতারে তুলছে ঝড়
বয়সের ভারে কিছুটা
ঝুঁকে পড়া অবসন্ন সন্ধ্যা
আলোকিত করছে
মেঘেঢাকা তারা থেকে
কেড়ে নিয়ে আলোর বৈভব
পৌঢ় রাত্রিকে কেবল
আমারই জন্য ক্ষমা চেয়ে
পাঠিয়েছে সে
নিজবাসভূম
তারপর
বেলোয়ারী রঙ্গন রেশমি চুড়ির
রিনিকি ঝিনিকি বোল…
আলোর মুক্তোদানার মতো ঝাড়বাতি
দুহাতের একজোড়া পাঁচ আঙ্গুল
সংসারে ইশারায়
চুপিসারে কত কাজ করে যায়
ছোট ছোট খুঁটিনাটি
ঝাড় দেয় হৃদয়ের ধূলিবালি…
মুছে ফেলে যুগান্তের
শ্যাওলাধরা গ্লানি
এইসবই অভিনব এক শিল্পীর স্পর্শবিহীন ক্যানভাসে আঁকা নন্দনতত্ত্ব
আবার এই দুবাহু জুড়ে
দুর্দান্ত চালিকা শক্তি
প্রয়োগ করে
কী অদ্ভুত নিয়মে
নিরাপদ বেগবান চালিকা শক্তি
দক্ষ হাতে যোগ দেয়
নানামাত্রিক মানব অলংকার
নারীর ওষ্ঠপুঞ্জ পূজনীয়
আরাধ্য রাত্রিদিন
বেলা অবেলায় আনকোরা ঠোঁটে
অনেকতো হয়েছে বাহারি চুম্বন
তাই এখন কদাচিৎ ঠোঁটের আরাধনা
ফুলের অর্ঘ্য সাজাই হঠাৎ হাওয়ায়
চুম্বনে চুম্বনে
করতল স্পর্শে রাঙাই
যাত্রা মঞ্চে আমার বিপরীতে
মঞ্চকাঁপানো নটিনীর অমৃত হৃদয়
তাই এখন আর ঠোঁট নয়
ওর লাবণ্যময়ী বাহুতে চুমু খাই
সোনালী কেশর... রেশমি কোমল...
পশমি ওই হাত জোড়া
প্রাাণিত করে অক্ষয়
অব্যয়
মননের ডাকাতিয়া বাঁশি
কখনো খুব একা মনে হয়
খুব একাএকা
তবু নিঃসঙ্গ নই আমি
অনুভবে নানাবিধ সঙ্গ পাই
প্রাণের প্রবাল দ্বীপে
এক বিস্ময় নারীর আসন পেতেছি
সর্বচ্চ বেদীমূলে সাজিয়েছি পূজার অর্ঘ্য
এই নারী অব্যয় অক্ষয়
আমার ঈশ্বরের মেহেদিরাঙা হাত
না...
আমি
মাটির কবরে যাবোনা
জাহান্নামের আগুনে জ্বলবোনা
স্বর্গের খোওয়াব...
অলীক স্বপ্নে
মশগুল হ'বনা আর
ঐযে দেখছনা ঐখানে
তাকাও ঐদিকে
যাপিত জীবন উদযাপন
দুধসাদা সফেদ রাত্রির পবিত্র বিছানা
এই সব সঙ্গে নিয়ে যাবো
যেকোনো গোলার্ধে
আমাদের হ'বে
রহস্যময় পুনরুত্থান…
It's my desire for a mystical… RESURRECTION
And to swim
And to float unto a … to… to… to...
To the Treasure island of
Terribly trembling Galaxy
কবি মেহরাব রহমান তাঁর কবিতায় অনেক নিরীক্ষা ও আধুনা বিষয় আরোপ করেছেন। তাতে কবিতাটা হয়ে উঠেছে বিশ্বমানের। খুব ভালো লাগলো এই কবিতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পেরে। অনেক শুভ কামনা কবি।
ReplyDeleteজ্বি সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা
Deleteআপনাকেও অশেষ সাধুবাদ। আরো কবিতার অপেক্ষায় থাকলাম। শুভ কামনা
Deleteকবি মেহরাব রহমান তাঁর কবিতায় সর্বদা আলাদা বিষয় বস্তু চয়ন করেন। রেজারেকশন কবিতাটিও ভিন্নধর্মী অনন্য। কবির আরো এমন লেখা যেন আমরা পাই কবিকে আন্তরিক সাধুবাদ জানাই। ভালো থাকবেন।
ReplyDeleteঅপরূপ কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি
Deleteকবি মেহরাব রহমান তাঁর দীর্ঘ কবিতায় জীবনের স্বরূপ তুলে ধরেছেন। তাঁর কবিতা সাধারণত নিরীক্ষা ধর্মী। বিষয় বস্তু ,শব্দের প্রক্ষাপন সর্বোপরি হৃদয়গ্রাহী হয়ে থাকে। যা আমাদের পাঠক মনে দাগ কাটে। খুব ভালো লাগলো।
ReplyDeleteআমার কবিতা জটিলতার কারণে সবাই পায়না
Deleteএ হয়তো আমার প্রকাশের অক্ষমতা
আপনি দারুন ভাবে পেয়েছেন
বিনম্র শ্রদ্ধা ও অশেষ কৃতজ্ঞতা
কবি মেহরাব রহমানের দীর্ঘ কবিতা কিছুটা অবোধ্য হলেও কয়েকবার ভালো করে পড়লে আর কষ্ট হয় না। "রেজারেকশন" কবিতায় তিনি ঋতুর প্রথা অংকিত করেছেন। জীবনের স্বরূপ তুলে ধরেছেন। তাঁর সব কবিতাই সাধারণত নিরীক্ষা ধর্মী।অনেক ভালো লাগলো পড়ে। আরো এমন কবিতার আশায় রইলাম।
ReplyDeleteএই এক দুর্বধ্য কবিতা যে আপনি উপলব্ধি করেছেন অথবা আপনার বোধের ভেতর অনুপ্রবেশ করেছে
Deleteসেটা আমার বড় পাওনা
অশেষ কৃতজ্ঞতা
কবি মেহরাব রহমানের দীর্ঘ কবিতা কিছুটা অগম্য হলেও তন্ত্রীর মতো একবার তার ধরতে পারলে সুললিত সংগীত বেজে ওঠে। আমার কাছে কবি মেহরাব রহমানের কবিতা তন্ত্রীর মত। যতবার সুরে লাগাই ততবার আন্দোলিত হই নতুন নতুন সুরে। ভালো গুরু !সাধুবাদ জানাই।
ReplyDeleteআপনার অপূর্ব মন্তব্য আমার মন ও মননকে ভীষণ ভাবে আপ্লুত করেছে
Deleteঅন্তহীন কৃতজ্ঞতা
আমাদের মাঝে যাঁরা স্ব মহিমায় নিজ নিজ নৈপুণ্যের ক্ষেত্রে যখন ক্রমশঃ শীর্ষে পৌঁছে যান তার সৃষ্টিতে, যখন আমরা পাঠকরা ভাবি, এবারের সৃষ্টি সবার সেরা! কিন্তু না, আমরা অবাক হয়ে আপ্লুত হই তাঁর পরবর্তী সৃষ্টির সৌন্দর্য্য অবলোকন করে এবং সে সৃষ্টির যে নান্দনিকতা সেটার নির্যাস আহরণ করে, পবিত্র আনন্দে অবগাহন করে! আমার একজন প্রিয় কবি মেহরাব রহমান এক শীর্ষে পৌঁছানোর পর থেমে থাকেন না! তিনি যেন প্রতি নিয়ত নিজেকেই ছাড়িয়ে যান! যেমনটা করেছেন এবারের এই "রেজারেকশন" কবিতায়!
ReplyDeleteএই কিছুক্ষন পূর্বে ফেসবুকে উনার নিজের কণ্ঠে নিজের লেখা এই কবিতার আবৃত্তি শুনলাম! কবিতার মাঝামাঝি এক পর্য্যায়ে মনে হলো, উনি পৌঁছে গেছেন এমন একটা জায়গায় যেখানে সবাই, সবকিছু অবয়বহীন! আর ছুঁয়ে দিলেন, নাকি একাত্ব হয়ে গেলেন আমার এবং আর সবাইর অবয়বহীনতায়!
কিন্তু, উনি সেখানে পৌঁছে এই টরন্টো, এই ঢাকা, এই পৃথিবীর মায়ায় আবার ফিরে আসার আকাঙ্খায় প্রার্থনায় বসলেন, জানিয়ে দিলেন সর্বত্র বিরাজমানকে পুনর্জন্মের তীব্র বাসনার কথা!
আর এই গোটা ব্যাপারটা কবি মেহরাব রহমান যেন অবলোকন করেছেন দেহাতীত হয়ে! মনে হয়েছে, দেহাতীত, অবয়বহীন এক স্বত্বা বর্ণনা করছেন মেহরাব নামের এক পূজারীর প্রার্থনা!
তাঁর নিজের কণ্ঠে এই কবিতাটি শুনে আমার মনে হয়েছে কবি কি এবারে সত্যিই একেবারে চূড়ায় পৌঁছে গেছেন! আবার এও ভাবছি, উনি এর পরের কবিতায় আবারো নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন!
সুপ্রিয় আশরাফ আমার আপনার প্রতি ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা জানবার ভাষা জানা নাই
Deleteশুধু বলবো বর্তমান জপোমন্ত্র:
"প্রভু ক্ষমা করো
আমি ভালোবাসি"
তবে এইটুকু বলতে চাই এর আগে আমার কবিতার বিশ্লেষণ কিংবা আমি নামের এই ব্যাক্তির এরকম সঠিক ব্যাবচ্ছেদ করেনি
মনে ভীষণ একধরণের কম্পন জাগালো
নিজেকে নুতন করে চিনলাম