কবিতার ছায়া উপছায়া
মেহরাব রহমান
নবীন জীবন / আজ
খ্রিষ্টিয় নববর্ষ / নূতন
বছরের অবাক প্রভাত /
হে আমার
নমস্য সূর্যদেব /
তোমার স্ফটিক চুম্বন পাওয়ার / অসম্ভব
আকাঙ্খা / বেদনায় /
সর্পবিষ নীল হ'ল / ভীষণ
ব্যাথায় / কুঁকড়ে গেলো
চলমান সময়ের / ভেতর /
অভ্যন্তর / ডুকরে
ডুকরে কাঁদলো
অনেক্ষন / সংজ্ঞাহীন /
ছন্নছাড়া / ছায়ালোকের /
ছায়াপথের / অধ:স্তন /
অধীনস্ত /সারাটা
আকাশ / তাই এই মন /
আজ সকালে / পুড়তে
পুড়তে বলছে / এই নববর্ষ আমার না /
এই নববর্ষ আমার নয় / ১…
২... ৩... ৪... ৫... গড়াতে
গড়াতে / পঞ্জিকার
পাতায় ৬ জানুয়ারী /
মনে জাগে / আর
হয়তো নূতন বছর / এই
জীর্ণপ্রাণ দরিদ্রের / উদার দ্বারপ্রান্তে / শত
টুটাফাটা জীবনে /
হয়তো আনন্দ উৎসব
হয়ে / আসবেনা আর
কোনোদিন
ক্যালেন্ডারের পাতা
থেকে / ফোঁটা ফোঁটা /
সময় ঝরতে ঝরতে /
দিন… মাস…
বছরগুলো /
একাকার / ছুটে চলেছে /
সীমান্তসীমা / কিংবা /
কাঁটাতারের বেড়া /
বর্ণান্ধ / ধর্মান্ধতার /
মুনাফেক / ইতর
জাতীয়তাবাদের / মিথ্যা
ছলনার / বেড়িবাঁধ /
ডিঙিয়ে পাড়ি দিচ্ছে /
অজানা অচেনা পথে /
হায়! কী রকম জঘন্য /
বৈরী সময় / কৃষপাহাড়ে
ঘেরা / ভীষণ অন্ধকার /
অদৃশ্য নির্বাসন /
সুড়ঙ্গের ভেতর /
গুটিসুটি মেরে /
গুটিপোকা এক / রেশমি
সুতোর অন্তরজালে /
গুটিয়ে আছি / তথাপি
জানি / অন্তরে গভীর
বিশ্বাস / আবার ভোরের
মতন ভোর হবে /
পুনরুত্থানে জাগরণ হবে /
দেখবো দীপঙ্কর /
দ্বীপপুঞ্জ / দীপাবলি /
ঝলমলে রৌদ্র বন্যা /
উন্মাতাল ঢেউয়ের /
বিদ্যুৎ চমক / উগ্র
উদযাপন হবে /
গোধূলির রক্তরাঙা লগ্ন
মগ্ন হবে / অরণ্য ঝড়
বয়ে যাবে / তান্ডব ঘূর্ণি
ঝড় / আনুষ্কা শঙ্করের /
সীতারের / রেশমি
কোমল তারে / তাঁর
ফুলেশ্বরী আঙুলের
আরহণ-অবহরণের /
চড়াই-উৎরাই / থেকে
ঝরে পড়বে
মাধুরী /
ফেলে আসা যৌবনের
অভিমান / বিমূর্ত
সঙ্গীতের / দ্রুতগামী ইঞ্জিন /
ঝিক্ ঝিক্ ঝিক্ ঝিক্ /
আনন্দ তুফান / পূর্বরাগ /
প্রভাতী কি রাত্রির
রাগিনী / ভৈরবী কিংবা
দরবারি কানাড়া /
সেইসব সুদূর পিছে
ফেলে আসা / নন্দন-
নন্দিনীর / নানা ঢঙে
গেয়ে যাওয়া গান / তখন
রাঙা পায়ে মল বাজবে :
সা – রে –গা – মা – পা –
ধা – নি –
সা
সা – নি –
ধা – পা – মা –
গা – রে – সা
ণি সা -- রে গা – রে সা –
মা পা ধা – ণি সা
সা – ধা –
ণি – পা –মা পা
– গা – মারে – সা
১ জানয়ারী ২০২২ ইং
টরন্টো
http://www.alokrekha.com
"কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " কবিতায় মেহরাব রহমান মনের অদ্ভুত এক রূপ তুলে ধরেছেন। নামকরণ দারুন ভিন্নধর্মী। খুব ভালো লাগলো পড়ে। অনেক শুভকামনা কবি।
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের "কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " কবিতা পড়ে খুব ভালো লাগলো ।আলো আঁধারির খেলা। কবিতা পাঠের জন্য অতি উত্তম। অনেক শুভ কামনা কবি।
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের "কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " কবিতা পড়ে খুব ভালো লাগলো ।
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের "কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " কবিতা খুব ভালো লাগলো । কবি কবিতাকে কেটে ছিড়ে বিশ্লেষণ করেছেন। কবি তাঁর কবিতায় নিরীক্ষা করতে ভালোবসেন। আর তাঁর এই ভালোবাসায় প্রস্ফুটিত এই কবিতাখানি। কবিকে আন্তরিক অভিবাদন।
ReplyDeleteখুব ভালো লাগলো মেহরাব রহমানের কবিতা "কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " পড়ে । আধুনিক কবিতা বিশ্লেষণধর্মী। অত্যন্ত আধুনিক বিন্যাস-এ লেখা। খুব ভালো লাগলো। শুভেচ্ছা !!!!
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের দীর্ঘ কবিতা "কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " পড়ে খুবই ভালো লাগলো।দীর্ঘ কবিতা পড়তে সাধারণত একঘেয়ে লাগে কিন্তু এই কবিতা রোমাঞ্চিত করেছে। নুতুন বছরে কখনো আশা কখনো নিরাশা মনকে আন্দোলিত করেছে। পরিমিত শব্দ চয়ন কবিতাকে অন্য মাত্রা দেন করেছে। খুব সুন্দর। ভালোবাসা কবি।
ReplyDeleteমেহরাব রহমানের কবিতা "কবিতা নয় কবিতার ছায়া উপছায়া " পড়ে খুব ভালো লাগলো। খুব সুন্দর। ভালোবাসা কবি।
ReplyDeleteকবিরা জীবনের পথে চলতে চলতে অবিরাম কুড়াতে থাকেন জীবন বোধ, অভিজ্ঞতা আর জীবন দর্শনের মনি-মানিক্য! আর তা পাঠকের বোধগম্য করে পরিবেশন করেন তাঁদের স্বভাবজাত মুন্সিয়ানায়! বিষয়বস্তুর ব্যাপ্তি, ভাষার লালিত্য, ছবি আঁকায় ব্যবহৃত রংয়ের মত সঠিক ছবিটি আঁকতে একজন পরিণত কবি সঠিক শব্দচয়ন করেন! আর এই সবকিছু একজন পটু শেফ এর মত বাহারী সাজে পরিবেশন করেন পাঠকের উপভোগের জন্যে!
ReplyDeleteওপরে উল্লেখ করা কথাগুলোর প্রায় সবটাই প্রযোজ্য আমার একজন প্রিয় কবি মেহরাব রহমানের বেলায়! অন্যান্য গুণাবলীর সাথে কবি মেহরাব রহমানের আর একটি বিশেষ গুণ যা তাঁর কবিতাকে দেয় একটা স্বতন্ত্র স্বকীয়তা! সেটা হলো কবিতা রচনাকাল এর একটা গ্রাফিক চিত্র! তাতে থাকে প্রকৃতি, পারিপাশ, নাগরিক জীবন, মানুষের অসহায়তা, অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝে বাস করেও মানুষের সীমা অতিক্রমের অনুপ্রেরণা! থাকে সময়, সাহস, সহিষ্ণুতা ও সমাজ বদলের ইঙ্গিত! আর এই সব কিছুর মধ্যে কবি আত্মগোপন করেন না, বরং সর্ব সমক্ষে উন্মোচিত করেন তাঁর হৃদয়ের সব ক'টা কুঠুরী, যেখানে নিত্য দোল খায় আশা-নিরাশা, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা!
কবি মেহরাব রহমানের এবারের কবিতায় বেদনার টনটন করা উপলব্ধি আছে, কিন্তু তার অব্যবহিত পরেই কবি ঘোষণা দেন:
তথাপি জানি,
অন্তরে গভীর বিশ্বাস
আবার ভোরের মতন ভোর হবে
পুনরুত্থানে জাগরণ হবে!
কবি মেহরাব রহমানকে অনেক অনেক অভিনন্দন!