আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও -আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও-যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে..আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে..এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও..আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান-তার নাইকো বাণী নাইকো ছন্দ নাইকো তান..তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁইয়ে দাও সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম। ~ alokrekha আলোক রেখা
1) অতি দ্রুত বুঝতে চেষ্টা করো না, কারণ তাতে অনেক ভুল থেকে যায় -এডওয়ার্ড হল । 2) অবসর জীবন এবং অলসতাময় জীবন দুটো পৃথক জিনিস – বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন । 3) অভাব অভিযোগ এমন একটি সমস্যা যা অন্যের কাছে না বলাই ভালো – পিথাগোরাস । 4) আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও , আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব- নেপোলিয়ন বোনাপার্ট । 5) আমরা জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না বলে আমাদের শিক্ষা পরিপূর্ণ হয় না – শিলার । 6) উপার্জনের চেয়ে বিতরণের মাঝেই বেশী সুখ নিহিত – ষ্টিনা। 7) একজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি আরেকজন ঘুমন্ত ব্যাক্তি কে জাগ্রত করতে পারে না- শেখ সাদী । 8) একজন দরিদ্র লোক যত বেশী নিশ্চিত , একজন রাজা তত বেশী উদ্বিগ্ন – জন মেরিটন। 9) একজন মহান ব্যাক্তির মতত্ব বোঝা যায় ছোট ব্যাক্তিদের সাথে তার ব্যবহার দেখে – কার্লাইন । 10) একজন মহিলা সুন্দর হওয়ার চেয়ে চরিত্রবান হওয়া বেশী প্রয়োজন – লং ফেলো। 11) কাজকে ভালবাসলে কাজের মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় – আলফ্রেড মার্শা
  • Pages

    লেখনীর সূত্রপাত শুরু এখান থেকে

    সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম।



    সুচিত্রা সেন

    সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম। অনন্য সৌন্দর্যের সঙ্গে ভুবন ভোলানো আবেদনময় মিষ্টিহাসি আর অসাধারণ অভিনয় শৈলীর কারণে চিরকালীন বাঙালি সুচিত্রা সেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মন জয় করেছেন।সুচিত্রা সেন (৬ এপ্রিল ১৯৩১ – ১৭ জানুয়ারি ২০১৪) একজন ভারতীয় অভিনেত্রী  তার জন্মগত নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। তিনি মূলত বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম কুমারের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।


    ১৯৬৩ সালে সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা সেন "সেরা অভিনেত্রীর জন্য রোপ্য পুরস্কার" জয় করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।  ১৯৭২ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করে। শোনা যায়, ২০০৫ সালে তাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল; কিন্তু সুচিত্রা সেন জনসমক্ষে আসতে চান না বলে এই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। ২০১২ সালে তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গবিভূষণ প্রদান করা হয়। 



    ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্গত সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার অন্তর্গত সেন ভাঙ্গাবাড়ী) গ্রাম সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক নিবাস। পাবনা জেলার সদর পাবনায় সুচিত্রা সেন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন এক স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মা ইন্দিরা দেবী ছিলেন গৃহবধূ। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পাবনা শহরেই তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী। ১৯৪৭ সালে বিশিষ্ট শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়।  তাদের একমাত্র কন্যা মুনমুন সেনও একজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী। ১৯৫২ সালে সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত হন।



    বাংলা চলচ্চিত্র হারানো সুরে উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন ১৯৫২ সালে শেষ কোথায় ছবির মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয় কিন্তু ছবিটি মুক্তি পায়নি। সুচিত্রা সেন- নায়িকাদের নায়িকা, মহানায়িকা। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আজ অবধি বাংলার মডেল কিংবা নায়িকারা সুচিত্রা সেনকে আইডল করে তার মতো শাড়ি পরেন, হাতাকাটা বস্নাউজ পরেন, চোখে কাজল টানেন, চুলে কখনো বেণী বাঁধেন কখনো বা খোঁপা সাজান কিংবা ঘাড় বাঁকিয়ে রোমান্টিক চাহনি দেন।



    সুচিত্রা সেনই বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম অভিনেত্রী, যিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসব থেকে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান তিনি।  ১৯৫৫ সালের দেবদাস ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেন, যা ছিল তার প্রথম হিন্দি ছবি। উত্তম কুমারের সাথে বাংলা ছবিতে রোমান্টিকতা সৃষ্টি করার জন্য তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেত্রী। 



    ১৯৬০ ও ১৯৭০ দশকে তার অভিনীত ছবি মুক্তি পেয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পরও তিনি অভিনয় চালিয়ে গেছেন, যেমন হিন্দি ছবি আন্ধি। এই চলচ্চিত্রে তিনি একজন নেত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। বলা হয় যে চরিত্রটির প্রেরণা এসেছে ইন্দিরা গান্ধী থেকে। এই ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং তার স্বামী চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছিলেন। হিন্দি চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতিবছর দাদাসাহেব সম্মাননা প্রদান করে ভারত সরকার। চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ সম্মাননা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। সম্মাননা নিতে কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে চাননি বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।১৯৭৮ সালে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। এর পর তিনি লোকচক্ষু থেকে আত্মগোপন করেন এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন ও অন্তরীণ জীবন যাপন করেন ।২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হন, কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেওয়া হয় নি।



    ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮২ বছর বয়সে সুচিত্রা সেনের মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহ আগে ফুসফুসে সংক্রমণের জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার শেষকৃত্যে গান স্যালুট দেবার কথা ঘোষণা করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধানমন্ত্রী-পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী সুচিত্রা সেনের মৃত্যুতে শোকবার্তা পাঠান। সুচিত্রা সেন অমর  হয়ে আছেন তাঁর কাজের ,ব্যক্তিত্বে ও সৌন্দর্যে। আজকের এই দিনে আলোকরেখা তাঁকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছে। তাঁর স্মৃতি অমলিন। 


    সানজিদা রুমি কর্তৃক গ্রথিত http://www.alokrekha.com

    8 comments:

    1. শর্মিষ্ঠাJanuary 19, 2023 at 8:23 PM

      সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক অনন্য নাম। সৌন্দর্যের সঙ্গে ভুবন ভোলানো আবেদনময় মিষ্টিহাসি আর অসাধারণ অভিনয় শৈলীর কারণে চিরকালীন বাঙালি সুচিত্রা সেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মন জয় করেছেন। পরপারে ভালো থাকুন।

      ReplyDelete
    2. সুচিত্রা সেনের সৌন্দর্যের ,ভুবন ভোলানো আবেদনময় মিষ্টিহাসি আর অসাধারণ অভিনয় জন্য বাঙালির মনের মনি কোঠায় অম্লান থাকবে। আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ।

      ReplyDelete
    3. বিজয় সেনJanuary 19, 2023 at 8:37 PM

      "সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম" আলোকরেখায় পেয়ে খুব ভালো লাগলো।

      ReplyDelete
    4. মিতালি মুখার্জিJanuary 19, 2023 at 8:45 PM

      "সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম" খুব সুন্দর একটা লেখনী। অনেক তথ্য এক সাথে পেয়ে খুব ভালো লাগলো। মহা নায়িকা সুচিত্রা সেন আমাদের সবার খুব প্রিয়। প্রজন্ম ভেদে তিনি অমর হয়ে থাকবেন।

      ReplyDelete
    5. মৃন্ময়ীJanuary 19, 2023 at 8:49 PM

      "সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম" সুন্দর ছবিসহ তথ্যবহুল লেখা প্রকাশের জন্য আলোকরেখাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

      ReplyDelete
    6. মোহন সিরাজীJanuary 19, 2023 at 9:01 PM

      আলোকরেখা আমাদের প্রিয় কারণ এখানে সব কিছু পাওয়া যায়। কবিতা ,গল্প ,কবিতা পাঠ ,চলচ্চিত্র আলোকিত ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি। আমরা ইন্টারনেটে সার্চ করে এসব তথ্য পেতে পারতাম। যা সময় সাপেক্ষ এবং প্রায়শই করা হয়ে ওঠে না। আলোকরেখার এই "সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম" সুন্দর ছবিসহ তথ্যবহুল লেখা প্রকাশ খুব উপকারী একটি পদক্ষেপ। আর এই কারণেই আলোকরেখা আমাদের প্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ মহা নায়িকা সুচিত্রা সেনের উপরে এই প্রতিবেদন পোষ্ট করার জন্য।

      ReplyDelete
    7. মিতা কাদেরJanuary 19, 2023 at 9:12 PM

      মহা নায়িকা সুচিত্রা সেনের সৌন্দর্যের ,ভুবন ভোলানো আবেদনময় মিষ্টিহাসি আর অসাধারণ অভিনয় জন্য বাঙালির মনের মনি কোঠায় অম্লান থাকবে। সুচিত্রা সেনের কোন তুলনা হয় না। তার তুলনা তিনি নিজেই। আলোকরেখাকে অনেক ধন্যবাদ এমন তথ্য বহুল লেখা প্রকাশের জন্য।

      ReplyDelete
    8. অভীক চৌধুরীJanuary 20, 2023 at 12:12 AM

      আলোকরেখার এই "সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক কিংবদন্তি নাম" সুন্দর ছবিসহ তথ্যবহুল লেখা প্রকাশ খুব উপকারী একটি পদক্ষেপ। আর এই কারণেই আলোকরেখা আমাদের প্রিয় হয়ে উঠেছে। খুব ভালো লিখেছো রুমি। সে জন্য প্রশংসা পাবার যোগ্য তুমি। কিন্তু আজ একটা নতুন কথা বলি জানি না কেউ তোমাকে আগে বলেছে কি না যে তোমার সাথে সুচিত্রা সেনের আদল মেলে। সেই চোখ আর ভুবন মোহিনী হাসি।

      ReplyDelete

    অনেক অনেক ধন্যবাদ