ঋতুরাজ বসন্ত
সানজিদা রুমি
শীতের রুক্ষ, হিমেল দিনের অবসান ঘটিয়ে প্রকৃতিতে এসেছে বসন্ত। গাছে গাছে নতুন পাতা আর ফুল বসন্তকে করে তুলেছে 'বিশেষ ঋতু'। এত রূপ, রস, আর লাবণ্য নিয়ে প্রকৃতিতে আর কোনো ঋতু হাজির হয় না। তাই বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। পয়লা ফাল্গুন বা পহেলা ফাল্গুন বাংলা পঞ্জিকার একাদশতম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন ও বসন্তের প্রথম দিন। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন পালিত হয়। বাংলার অঞ্চলে প্রাচীন আমল থেকেই বসন্ত উৎসব পালিত হচ্ছে। বসন্তকে বরণ করে নেয়ার জন্য বাংলাদেশে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়।
বাংলাদেশের প্রকৃতি বৈচিত্র্যময়। প্রতিটি ঋতুতেই এই বৈচিত্র্য সৌন্দর্য ছড়ায়। তবে বসন্তের সৌন্দর্য উপমাহীন। এর সাথে তুলনা চলে না অন্য কোনো ঋতুর। এমন ফুলেল সময় আর কখনো দেখা যায় না। শীতের জীর্ণতা শেষে প্রকৃতিতে যে উষ্ণতা আসে সেই উষ্ণতায় মানুষের মনও প্রকৃতির সাথে পাল্লা দিয়ে জেগে ওঠে নতুনের আহবানে।প্রকৃতিতে তাই লেগেছে রংয়ের ছোঁয়া। দক্ষিণা দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। কোকিলের কণ্ঠে আজ বসন্তের আগমনী গান। ফুলে ফুলে ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। সব কিছুই জানান দিচ্ছে আজ পহেলা ফাল্গুন।ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সাথে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা।শীতকালে ঝরে পড়া পাতার ফাঁকা জায়গা পূরণ করতে গাছে গাছে আবার নতুন পাতা গজায়।
গাছগুলো সবুজ পাতায় ছেয়ে যায়, পাতার ফাঁকে বসে কু-হু-কু-হু গান ধরে কালো কোকিল। ফুলে ফুলে ভরে যায় গাছগাছালি। মনের আনন্দে পাখিরা গান গাইতে শুরু করে। লাল ফুল, নীল ফুল, হলুদ ফুল, গোলাপি ফুল, বেগুনি ফুল, আকাশি ফুল, কমলা ফুল, ঘিয়ে ফুল, সাদা ফুল হাজার রঙের ফুল ফোটে বসন্তে !এ ঋতুতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মনকে প্রকৃতির কাছাকাছি নিয়ে যায়। আত্মভোলা মনে জাগে গান। রক্তবর্ণের শিমুল, পলাশ ও কৃষ্ণচূড়া এ সময়েই ফোটে। আমগাছ সাজে নব মঞ্জরিতে শোভিত হয়ে। ভ্রমর মনের আনন্দে গুঞ্জন করতে করতে সুগন্ধি পুষ্প ও আম্র মঞ্জরির মধু পানে মত্ত হয়। যব, গম, সরিষা ইত্যাদি শস্যে মাঠগুলো রমণীয় শোভা ধারণ করে।
প্রকৃতির সাথে সাথে বসন্তের প্রথম সকালে বাসন্তি রঙা শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় গাঁদা ফুল জড়িয়ে বেরিয়ে পড়বে তরুণী-বধূরা। বাসন্তি পাঞ্জাবি, ফতুয়া পরা হাজারো ছেলে-বুড়োর ঢল নামবে বসন্ত বরণের নানা আয়োজনে। বসন্তের আমোদনে ফাগুনের ঝিরিঝিরি হাওয়া, রক্তিম পলাশ, শিমুল, কাঞ্চন পারিজাত, মাধবী, গামারী আর মৃদু গাঁদার ছোট ছোট ফুলের বর্ণিল রূপে চোখ জুড়াবে। বসন্ত তারুণ্যেরই ঋতু, তাই সবারই মনে বেজে ওঠে, কবির এ বাণী- ‘বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে। ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে, পয়লা ফাল্গুন আনন্দের দিনে’।
নানা সংগঠন এই দিনটি নানা ভাবে উজ্জাপন করে। বাংলাদেশে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ এই দিনকে বরণ করতে চারুকলার বকুলতলায় এবং ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিবছর জাতীয় বসন্ত উৎসব আয়োজন করে। পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে এ দিন বসন্ত উৎসব পালন করা হয়।
আলোকরেখার সকল পাঠক ও লেখকদের ফাল্গুনের শুভেচ্ছা। আলোকরেখা যেমন মনমুগ্ধকর একটা ওয়েব সাইট তেমনি লেখাগুলো অনন্য। আজ বসন্ত সেটাও আলোকরেখায় প্রকাশিত হয়েছে। বসন্তের রং লেগেছে আলোকরেখায়ও। অনেক অনেক ভালোবাসা।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "ঋতুরাজ বসন্ত" লেখাটা খুব সুন্দর। বসন্তের আগমনিতে আলোকরেখার সকল পাঠক কবি ও লেখকদের ফাল্গুনের ফুলেল শুভেচ্ছা। অনেক অনেক ভালোবাসা।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "ঋতুরাজ বসন্ত" লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। সবাইকে ফাল্গুনের ফুলেল শুভেচ্ছা। সবার জীবন ফুলে ফুলে ভোরে উঠুক এই কামনা করি।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "ঋতুরাজ বসন্ত" লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। অনেক তথ্য বহুল । ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে --সেই ফাগুনের রং ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র। অনেক অনেক শুভ কামনা।
ReplyDeleteসানজিদা রুমির "ঋতুরাজ বসন্ত" লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। অনন্য। প্রকৃতির সাথে সাথে বসন্তের প্রথম সকালে বাসন্তি রঙা শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে চুড়ি, পায়ে নূপুর, খোঁপায় গাঁদা ফুল জড়িয়ে বেরিয়ে পরে তরুণী-বধূরা।বসন্তের আগমনিতে আলোকরেখার সকল পাঠক কবি ও লেখকদের ফাল্গুনের ফুলেল শুভেচ্ছা। অনেক অনেক ভালোবাসা।
ReplyDelete